বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
ঈদ উল আযহার বাকি আর মাত্র দুই দিন। এদিকে কোরবানীর ঈদ উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জের মসলার বাজারে উত্তাপ ছড়াছে। প্রতি বছরের ন্যায় সক্রিয় স্থানে রয়েছে মসলা সিন্ডিকেট। তারা এবার টার্গেট করেছে আদা ও রসুনকে। মসলার বাজারে এবার উত্তাপ ছড়াচ্ছে এ দু’টি পণ্য। অন্যান্য মসলার দামও বেড়েছে অনেক। সরকারের মনিটরিং ব্যবস্থার দুর্বলতার সুযোগে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অসাধু ব্যবসায়ীরা ক্রেতার পকেট কাটছে বলে অভিযোগ অনেকের।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত এক সপ্তাহে প্রতি কেজি আদার দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। রসুনেরও একই অবস্থা। প্রতি কেজিতে বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ৩ থেকে ৫ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি লবঙ্গ ২৫০, জিরা ৭০, এলাচ ২৫০, গোলমরিচ ২৫০, শুকনো মরিচ ২০ ও ধনে ২০ টাকা করে বেড়েছে।
পাইকারি আড়তগুলোতে বর্তমানে চীনা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৬৭ টাকা দরে। অথচ খুচরা পর্যায়ে ২০০ টাকার কমে রসুন পাওয়া যাচ্ছে না। ভোক্তাদের অভিযোগ অস্বাভাবিক লাভ করছেন দোকানিরা। একই অবস্থা চীনা আদার ক্ষেত্রেও। পাইকারিতে যে আদা ৯০ থেকে ১০০ টাকা, সেটি খুচরায় ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারে বার্মিজ আদা ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি লবঙ্গ ১৩০০, জিরা ৪৫০, এলাচ ১৯০০, দারুচিনি ৩০০, কিশমিশ ৩৫০, গোলমরিচ ১২০০ ও ধনে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়। শুকনো মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা কেজি দরে। দেশী পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৪৮, আমদানি করা পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৩৫, দেশী রসুন ১৬০ থেকে ১৭০, আমদানি করা চীনা রসুন ১৯০ থেকে ২০০ ও আদা বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে। মোকাম থেকে বেশি দামে কিনতে হয় বলে দাম বেড়েছে এমনটি জানান বিক্রেতারা।
বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা যায়, কোরবানির ঈদে মসলার যে পরিমাণ চাহিদা থাকে, তা সারা বছরের চাহিদার চেয়ে বেশি। মওকা বুঝে অতিরিক্ত মুনাফার লোভে মসলা ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট এ সময় বেশ তৎপর হয়ে ওঠে। এবারো মানুষের চাহিদাকে পুঁজি করে তারা তৎপর। দফায় দফায় বাড়ছে মসলার দাম। অথচ আমদানিকারকেরা মসলার চাহিদার দিকে দৃষ্টি রেখে যথেষ্ট পরিমাণ আমদানি করেছেন যেন ঘাটতি না পড়ে।
দাম বৃদ্ধির কারণ প্রসঙ্গে খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, সারা বছরই বাজার থাকে স্বাভাবিক। তখন কেউ বেশি দাম রাখে না। কিন্তু কোরবানির মওসুমে ব্যবসায়ীদের খরচ বেড়ে যায়। কর্মচারীদের বোনাসসহ আনুষঙ্গিক আরো কিছু খরচ থাকে। এ কারণে দাম কিছুটা বাড়ে।
আমদানিকারকেরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে মসলার দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে অসহনীয় নয়। অথচ খুচরা ও পাইকারি বাজারে দেখা যায় পুরো উল্টো চিত্র। পাইকারি বাজারেই দাম অনেকটা বেড়েছে। এর সাথে বাড়তি দাম যোগ করেছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।
বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, আমাদের বাজারে প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ নেই, ব্যবসায়ীদের নৈতিকতাও নেই। ক্যাবের পক্ষ থেকে বারবার দাবি করা হচ্ছে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য। কিন্তু এতেও উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি নেই। ফলে অসাধু ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে দাম বাড়াচ্ছে।