নারায়ণগঞ্জ,বিজয় বার্তা ২৪
নারায়ণগঞ্জের ভাষা সৈনিক ও রতœগর্ভা মা নাগিনা জোহার মৃত্যুর পর শোক জানিয়ে তার ছবি সংবলিত যে সকল ব্যানার ফেস্টুন লাগানো হয়েছে সেগুলো সরিয়ে ফেলার অনুরোধ করা হয়েছে। মরহুমা নাগিনা জোহার ৩ জন পুত্রবধূ ও ২ মেয়ের পক্ষ থেকে এমন অনুরোধ জানানো হয়। রোববার তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে সিদ্ধিরগঞ্জের নাভানা সিটি মরহুমা নাগিনা জোহার আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়ার পূর্বে তাদের পক্ষ থেকে অনুরোধটি উপস্থাপন করেন নাগিনা জোহার মেঝ ছেলে নারায়ণগঞ্জ-৫(শহর-বন্দর) আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান।
অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, আমার মায়ের মৃত্যুতে যারা শোক প্রকাশ করেছেন তাদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে ৪ দিনের কর্মসূচী হাতে নেওয়া হয়ে ছিল। আজকেই তার শেষ দিন ছিল। আরও অনেকে আমার মায়ের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করেছেন। তবে আমি আমার পরিবারের সকলের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে আপনাদের কাছে অনুরোধ রাখছি আমার মায়ের ছবি দিয়ে যারা যারা শোক জানিয়ে ব্যানার ফেস্টুন লাগিয়েছেন সেই ব্যানার ফেস্টুন গুলো সরিয়ে ফেলবেন।
প্রসঙ্গত নাগিনা জোহা বাধ্যর্ক জনিত কারনে অসুস্থ্য হয়ে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় গত ৭ মার্চ দুপুরে শেষ নিশ্বা:স ত্যাগ করেন। বিকেলে খানপুরে তার নামাজের জানাজা শেষে মাসদাইর কবরস্থানে বড় ছেলে প্রয়াত সংসদ সদস্য নাসিম ওসমানের কবরে পাশে শায়িত করা হয়।
উল্লেখ্য নাগিনা জোহা ১৯৩৫ সালে অবিভক্ত বাংলার বর্ধমান জেলার কাশেম নগরে জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁদের পরিবারের পূর্বপুরুষদের নামানুসারে গ্রামটির নামকরণ করা হয়। বাবা আবুল হাসনাত ছিলেন সমাজ হিতৈষী ও কাশেম নগরের জমিদার। তিনি শিল্প-সংস্কৃতির পৃষ্ঠ পোষকতায় বিশেষ সুনাম অর্জন করেন। নাগিনা জোহার বড় চাচা আবুল কাশেমের ছেলে আবুল হাশিম ছিলেন অবিভক্ত ভারতবর্ষের মুসলীম লীগের সেক্রেটারি ও এমএলএ। চাচাতো ভাই মাহবুব জাহেদী ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পরিষদের সদস্য ছিলেন। ভাগ্নে পশ্চিমবঙ্গের কমিউনিস্ট নেতা সৈয়দ মনসুর হাবিবুল্লাহ রাজ্য সভার স্পিকার ছিলেন। নাগিনা জোহা ১৯৫০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদালয়ের অধীনে মেট্টিক পাস করেন। ১৯৫১ সালে নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ওসমান পরিবারের সন্তান রাজনীতিবিদ এ কে এম শামছুজ্জোহার সঙ্গে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন। স্বামীর বাড়িতে নতুন বউ হিসেবে এসেই ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। তাঁর শ্বশুর তৎকালীন এমএলএ খান সাহেব ওসমান আলীর চাষাঢ়ার বাড়ি ‘বায়তুল আমান’ ছিল আন্দোলন সংগ্রামের কেন্দ্রবিন্দু।