নারায়ণগঞ্জ,বিজয় বার্তা ২৪
জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মঙ্গলবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে তিনদিন ব্যাপী প্রায় ৪০ টি স্টল নিয়ে ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা-২০১৬ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান মিঞা’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে নারায়ণগঞ্জের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ এ্যাড. হোসনে আরা বাবলী ও বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন, ৩’শ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. নিতিশ কান্তি দেবনাথ। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) গাউছুল আজম, না’গঞ্জ জেলা জনকল্যাণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এএসএম সামসুদ্দিন আহমেদ, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা মনির, আফরোজা আক্তার চৌধুরী, জেলা আওয়ামী মহিলালীগের সভানেত্রী প্রফেসর ড. শিরিণ বেগম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সুলতান উদ্দিন নান্নু, পিপি ওয়াজেদ আলী খোকন প্রমুখ।
নারায়ণগঞ্জের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ এ্যাড. হোসনে আরা বাবলী বলেন, কিছুদিন পূর্বেও বাংলাদেশের মানুষ যেই তথ্য প্রযুক্তিকে এদেশে বাস্তবায়নের বিষয়টিকে কথার কথা হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয় সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছে। তার এই অবদানে তথ্য প্রযুক্তি যুগে বাংলাদেশ আরো একধাপ এগিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃ আনিসুর রহমান মিঞা কে আমরা একজন সংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব হিসেবেই জানতাম। কেন না তিনি তার চিন্তা চেতনায় সর্বদা সাংস্কৃতির প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। তার কর্মকান্ডে আমরা তাই দেখতাম। এই জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ জেলা প্রশাসক হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে পুরষ্কার লাভ করেছেন। কিন্তু আজকে তিনি তার অর্জনে আরো একটি নতুন অংশ যোগ করলেন। এই ডিজিটাল মেলার মাধ্যমে এই জেলার মানুষ অনেক কিছু জানতে পারবে। বিশেষ কওে শিক্ষার্থীরা এই মেলায় এসে বিজ্ঞানের অনেক খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে অবগত হতে পারবে।
এসময় তিনি সকলকে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা সিভিল সার্জন ডা. আশুতোষ দাস বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হলেন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার রূপকার। আর না’গঞ্জের জেলা প্রশাসক মোঃ আনিসুর রহমান মিঞা হলেন ডিজিটাল নারায়ণগঞ্জ গড়ার রূপকার। তিনি রেডিও নারায়ণগঞ্জের মাধ্যমে জেলার মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিতে যে অঙ্গিকারবদ্ধ, তা প্রশংসনীয়। এর মাধ্যমে এখন জেলার মানুষ মোবাইল ফোনে বসেই তাদের সমস্যা জানান ও সমাধান পেয়ে থাকেন। এখন তাদের আর কষ্ট করে কোন বিষয় জানকে হাসপাতালে আসার প্রয়োজন হয় না। আমি তার এই চিন্তাকে সাধুবাদ জানাই।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ৩’শ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. নিতিশ কান্তি দেবনাথ বলেন, এমন একটা সময় ছিল, যখন ঢাকা থেকে ডাকবিভাগের মাধ্যমে একটি চিঠি আসতে এক সপ্তাহ সময় লেগে যেত। কোন কোন সময় আবার চিঠি পাওয়া ও যেত না। কিন্তু তথ্য প্রযুক্তির যুগে এখন আমরা ইমেইল এর মাধ্যমে মূহুর্তেই চিঠি পাঠিয়ে এবং পেয়ে থাকি। এছাড়াও দেশের অনেক স্কুলেই এখন মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে পাঠদান করা হয়ে থাকে। নতুন পর্যায়ে হয়তো এখন আমরা এই তথ্য প্রযুক্তির কিছু অসুবিধা ভোগ করছি। তবে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম এই সমস্যা গুলো উপলব্ধি করতে পারবে না। তখন দেশ অনেক এগিয়ে যাবে।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান মিঞা বলেন, ডিজিটাল মানে হলো সময় কমানো, সেবার মান বাড়ানো। এই দুটি বিষয় সমাধানের জন্যই এই ডিজিটালাইজেশন। এই ডিজিটাল মেলার মাধ্যমে আমরা জনগণকে জানাতে চাই, তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে কীভাবে তাদের কাছে যাওয়া যায়।
এই তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে এখন মানুষকে তাদের জমির পর্চা পেতে কষ্ট করতে হবে না। শুধুমাত্র তথ্য অফিসে গিয়ে তাদের জমির খতিয়ান, দাগ নং দিয়ে একটি ফরম পূরণ করলেই পর্চা তাদের ঘরে পৌছে যাবে। এখন শুধুমাত্র আড়াইহাজার উপজেলায় আমরা এই সেবাটি শত ভাগ প্রসার ঘটাতে পেরেছি। ধারাবাহিক ভাবে অন্যান্য উপজেলা গুলোতেও এই সুবিধা চলে আসবে।
তিনি আরো বলেন, নারায়ণগঞ্জে দায়িত্ব নেয়ার পর পরই আমার একটিই চিন্তা ধারণা ছিল, এই জেলা এবং জেলার মানুষের জন্য এমন কিছু করে যাব। যাতে আমরা চলে যাবার পর ও এখানকার মানুষ বলতে না পারে, সরকারি কর্মচারীরা শুধু বেতন নিয়েই থাকে। কোন কাজকর্ম করেন না।