বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীর সম্পৃক্ততার অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বসুন্ধরা ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তদন্ত দল।
সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যায় ইউজিসির চার সদস্যের এ প্রতিনিধি দল। এর মধ্যে ছিলেন ইউজিসির দুজন সদস্য এবং দুজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা।
প্রতিনিধি দলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম। দুই ঘণ্টার বেশি সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করেন।
এর আগে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. শাহজাহানকে এ বিষয়ে আগেই চিঠি দিয়ে প্রয়োজনীয় নথিপত্র প্রস্তুত রাখতে এবং সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের ক্যাম্পাসে উপস্থিত থাকতে মঞ্জুরি কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, একটি গোয়েন্দা সংস্থার দেওয়া প্রাথমিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়টির ৪০ জন ছাত্রের তথ্য চেয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি। ইউজিসির মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয় তালিকাটি পাঠায়। এসব শিক্ষার্থীর বিষয়ে বিশদ তথ্য দিতে বলা হয়। এই ৪০ ছাত্র ক্লাসে প্রায়ই অনিয়মিত থাকেন ও দুই বছর ধরে কম-বেশি ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত। এদের মধ্যে ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের শিক্ষার্থী ১১ জন। এ ছাড়া বিবিএ, ফিন্যান্স ও প্রকৌশলসহ আরো কয়েকটি বিভাগের শিক্ষার্থীও রয়েছেন। সূত্র জানায়, ক্যাম্পাসে সরেজমিন তদন্তকালে ওই ৪০ শিক্ষার্থীর বিষয়ে জোর দেওয়া হবে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হওয়া জঙ্গিদের মধ্যে স্কলাসটিকা স্কুলের ১৪তম ব্যাচের এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ ও ইইই বিভাগের ছাত্র বেশি। এ কারণে এ দুই প্রতিষ্ঠানের ওপর তদন্তে প্রাথমিকভাবে জোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ ছাড়া অভিযোগ উঠেছে, যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযম ও মতিউর রহমান নিজামীর ছেলেরা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। গোলাম আযমের বড় ছেলে আবদুল্লাহ হিল আমান আল আযমী নর্থ সাউথের খণ্ডকালীন শিক্ষক ও অপর ছেলে সাদমান আযমী ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক। আর মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে নাদিম তালহা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি পিএইচডি করতে দেশের বাইরে আছেন।
তদন্ত দল এই তিনজনের বিষয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান জানতে চাইবেন বলে জানা গেছে।
এর আগে গত বছরের অক্টোবরে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বসুন্ধরা ক্যাম্পাসে সরেজমিন তদন্তে গিয়েছিল ইউজিসির একটি তদন্ত দল। কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন।
ঈদুল ফিতরের দিন শোলাকিয়ায় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় নিহত আবীর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলায় দুই শিক্ষার্থীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। এ ছাড়া পুলিশের তৈরি করা তালিকায় নিখোঁজ ১০ ছাত্রের মধ্যে রয়েছে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীও। এসব কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টির অবস্থান সম্পর্কে পরিষ্কার হতে চাইছে সরকার।