বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জে ৭ খুনের মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই কাউন্সিলরের মধ্যে নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও আসামি নূর হোসেনের দ্বন্দ্বের জের ধরে নিরীহ ৬ জন মানুষ খুন হয়েছেন। হত্যার টার্গেট শুধু নজরুল ইসলাম হলেও এই নিরীহ ৬ জনও প্রাণ হারান।
রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছেন, এটি একটি শৃঙ্খলিত বাহিনীর কিছু সংখ্যক দুস্কৃতকারী ও কিছুসংখ্যক রাজনৈতিক বা সন্ত্রাসীদের দ্বারা সংঘটিত। এখানে নূর হোসেন একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও গডফাদার। যেমন নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এই দুই জনের দ্বন্দ্বের জের ধরে এই হত্যাকা- সংঘটিত হয়েছে। প্যানেল মেয়র নজরুল টর্গেট হলেও এই সকল র্যাব ও নূর হোসেন বাহিনীর হাতে নিরীহ ৬ জন মানুষ নির্মম হত্যার শিকার হয়েছেন।
রোববার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা আদালত ভবনে প্রেস কনফারেন্স রুমে আয়োজিত প্রেস ব্রিফ্রিংয়ে পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন এই তথ্য জানান।
আদলতের রায়ের পর্যবক্ষেণ তুলে ধরে এডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন বলেন, ‘র্যাব একটি শৃঙ্খলিত বাহিনী। এই বাহিনীর অনেক সুনাম ও সুখ্যাতি এই দেশে আছে। সন্ত্রাস দমন থেকে আরম্ভ করে জঙ্গি দমন, মাদক নির্মূলসহ বিভিন্ন অর্জন রয়েছে এই বাহিনীর। কিন্তু এদের যে কয়কজন ব্যক্তি পাবলিকের সাথে মিশে এই হত্যাকা- ঘটিয়েছেন- এর সমস্ত দায়িত্ব তাদের। তারা উচ্চ ও বিলাসী জায়গায় থেকে ঘৃন্যতম অপরাধ সংঘটিত করেছেন। তাদের র্যাব ইউনিটের মান সম্মান ক্ষুন্ন হলেও সার্বিকভাবে র্যাব বাহিনীর সুনাম ক্ষুন্ন হয়নি। আদালত তার পর্যবেক্ষণে র্যাবের প্রশংসা করেছেন। আবার তিরস্কারও করেছেন, র্যাব বাহিনীর কেউ যাতে এই ধরণের ঘৃণ্যতম অপরাধের সাথে যুক্ত হতে না পারে- সে জন্য র্যাব বাহিনীতে নিয়োগ দেয়ার জন্য সর্তক রাখার পরার্মশ দেয়া হয়েছে।
৭ খুনের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। সেই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের সময় যে অভিযোগ আনা হয়েছিল সেগুলো সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২৬ জনকে মৃত্যুদ- ও অপহরণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৭ জনকে ১০ বছর করে এবং আলামত নষ্ট ও ধ্বংস করার চেষ্টার অভিযোগে ৭ বছর করে কারাদ- প্রদান করা হয়েছে। আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন, দুটি মামলার রায় হলেও তারা সাজা ভোগ করবেন এক সাথে। একইদিন থেকে সাজার গণনা শুরু হবে। যারা পলাতক আছেন তারা গ্রেপ্তারের দিন থেকে অথবা স্বেচ্ছায় আত্মসমর্থন করলে সেদিন থেকে তাদের সাজা গণনা শুরু হবে।