বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
যমুনা টিভির মধ্যস্থতায় সুন্দরবনের জলদস্যু শান্ত ও আলম বাহিনীর ১৪ জন সদস্য অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করেছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর র্যাব-৮ কমপ্লেক্সে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের কাছে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করেন।
এ সময় র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রথমে বাহিনী প্রধান আবদুল বারেক তালুকদার শান্তর নেতৃত্বে তার দলের ১০ সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে অস্ত্র তুলে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার ঘোষণা দেন।
এরপর আলম তার বাহিনীর চার সদস্য নিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। তাদের সবার বাড়ি বাগেরহাটের মংলায়।
এ সময় জলদস্যুরা ২০টি আগ্নেয়াস্ত্র ও এক হাজার ৮০০ রাউন্ড গুলি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে জমা দেন।
পরে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সুন্দরবনে দীর্ঘদিন ধরে এসব কুখ্যাত দস্যুরা জনগণের জানমালের ক্ষতি করে আসছিল। তাদের দমনে র্যাব সুন্দরবনে ব্যাপক অভিযান চালায়। অভিযানের মুখে যমুনা টিভির মাধ্যমে দস্যুরা স্বাভাবিক জীবনে ফেরার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানায়।
তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের এই ফিরে আসাকে স্বাগত জানাচ্ছি। আশা করছি, বাকি যারা এখনও এই পথে রয়েছে, তারাও দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে।’
অনুষ্ঠানে র্যাব ডিজি বেনজীর আহমেদ জানান, দুটি বাহিনী আজ আত্মসমর্পর্ণ করেছে। আমার জানা মতে, আরও চারটি বাহিনী তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। আশা করছি, তারাও খুব শিগগিরই আত্মসমর্পণ করবে।
সুন্দরবন থেকে দস্যু দমনের অভিযান সম্পর্কে তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এখানে ৮৯টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এ সময় দুই শতাধিক দস্যু গ্রেফতার, বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার এবং দুই শতাধিকের উপরে দস্যু নিহত হয়েছে।
বেনজীর আহমেদ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ফিরে না এসে দস্যুতার দুঃসাহস দেখালে তাদের পরিণতি ভালো হবে না। আমরা কোনো ধরনের অপতৎপরতা বরদাশত করব না, তামাশা সহ্য করব না। আমাদের সামনে থেকে কেউ জান নিয়ে ফিরে যেতে পারবে না।
র্যাব সূত্র জানায়, নানা কারণে সুন্দরবন দাপিয়ে বেড়ানো শান্ত ও আলম বাহিনী তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে যমুনা টিভির মাধ্যমে অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নেয়। সে মতে তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লিখিত আবেদন করে। এরই আনুষ্ঠানিকতা হল আজ।
এদিকে এই দুই জলদস্যু বাহিনীর আত্মসমর্পণের খবরে স্বস্তি ফিরে এসেছে সুন্দরবনসংলগ্ন উপকূলে।
এরআগে গত ১ জুন যমুনা টিভির মধ্যস্থতায় সুন্দরবনের কুখ্যাত মাস্টার বাহিনীর ১০ সদস্য আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করেন। মাস্টার বাহিনীর প্রধানসহ ১০ সদস্য ৫২টি অস্ত্র ও ৫ হাজার গুলি, ট্রলারসহ অন্যান্য উপকরণ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
এছাড়া যমুনা টিভির মধ্যস্থতায় সুন্দরবনের ইলিয়াস এবং মজনু বাহিনীর সদস্যরা তাদের আগ্নেয়াস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন।