নারায়ণগঞ্জ,বিজয় বার্তা ২৪
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ড. সেলিনা হায়াৎ আইভী আপনাকে বিনয়ের সাথে বলতে চাই, মেয়র সাহেব যখন আপনার কাউন্সিলর গ্রেফতার হয় তখন আপনি কই থাকেন? আর ঠিকাদার গ্রেফতার হলে আপনার মাথা নস্ট হয়ে যায়। এটা কিসের আলামত জানতে চাই। আপনি বলেছেন আপনি তাকে কাজ দিয়েছেন আপনি তাকে কাজ দিতে পারেন? কাজ পাবে টেন্ডারে। আপনি বলেছেন আজ থেকে উন্নয়ন কাজ বন্ধ। কিন্তু কেন? কার স্বার্থে?
বৃহষ্পতিবার বেলা সাড়ে ১২ টায় অনলাইন যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ফেসবুকে বিজয় বার্তা ২৪ ডট কমের শেয়ারকৃত ‘ঠিকাদার জাকিরকে ছাড়াতে থানায় মেয়র আইভী’ উক্ত শিরোনামের নিউজের কমেন্টস বক্সে উপরোক্ত কথাগুলো বলেছেন এনসিসির কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু।
উল্লেখ্য, গত ২৭ জানুয়ারি রেলওয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা লেক ও পার্ক নির্মাণের কাজ বন্ধ করতে গেলে স্থানীয় লোকজন তাঁদের ধাওয়া করে।
বুধবার (৩০ মার্চ) সন্ধ্যায় রেলওয়ের কানুনগো ইকবাল মাহমুদ বাদি হয়ে নাসিকের ঠিকাদার আবু সুফিয়ানকে প্রধান আসামী করে রত্না এন্টারপ্রাইজের মালিক জাকির হোসেনসহ ৭-৮ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন।
মামলায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ উল্লেখ করে রেলওয়ের জায়গা লিজ না নিয়ে জোরপূর্বক নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে।
রাত পৌনে ১০ টার দিকে ঠিকাদার জাকিরকে কালিরবাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করে সদর মডেল থানা পুলিশ। খবর পেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই সদর মডেল থানায় হাজির হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীসহ তার সমর্থীত আওয়ামীলীগ যুবলীগের নেতাকর্মীরা। পরে বৃহষ্পতিবার সকাল ৬টায় ব্যর্থ হয়ে থানা ত্যাগ করেন মেয়র আইভী। এদিকে বৃহষ্পতিবার সকাল ৯ টায় জাকিরকে আদালতে প্রেরণ করেন সদর থানা পুলিশ।
এসময় সদর মডেল থানার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মেয়র ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ যুবলীগে নেতাকর্মীদের তুমুল বাকবিতন্ডার ঘটনা ঘটে।
এসময় নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল মালেক পিপিএমকে উদ্দেশ্য করে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, আমি থানার ভেতর থেকে এক পাও নড়বোনা। কার নির্দেশে এই মামলা হয়েছে সেটা জানতে চাই। কালকে থেকে আর উন্নয়ন কাজ চলবেনা। উন্নয়ন কাজ বন্ধ থাকলে প্রয়োজনে পদত্যাগ করবো। এই শহর শামীম ওসমানের শহর। শামীম ওসমানই থাকুক। মেয়র আইভীর সঙ্গে যাওয়া জেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল কাদির বলেন, প্রয়োজন হলে আমাদের সবাইকে গ্রেফতার করুন। আমরা এক পাও নড়বোনা।
এসময় তাদের সঙ্গে থানার উর্ধ্বতনদের তুমুল বাকবিতন্ডার ঘটনা ঘটে। পরে মেয়র আইভী সাংবাদিকদের বলেন, কোন অপরাধ ছাড়া আমাদের ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দেয়া হচ্ছে। ঠিকাদার জাকিরকে কাজ আমি দিয়েছি। মামলা করলে আমার বিরুদ্ধে করেন। গ্রেফতার করতে হলে আমাকে করেন। একটি বিশেষ মহলের নির্দেশে মামলা হচ্ছে। সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করা হচ্ছে। প্রয়োজন হলে আমি সারারাত থানায় থাকবো। সকালে প্রয়োজনে আমাকেও আদালতে চালান করা হোক। নির্দোষ ব্যাক্তিদের থানায় রেখে বাড়ি যাবনা। একের পর এক আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হচ্ছে। এর আগে আমার ভাই উজ্জল, ভাগ্নে, ঠিকাদার সুফিয়ানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। আমার অপরাধ আমি ত্বকী হত্যার বিচার চেয়েছি। সেভেন মার্ডারের বিচার চেয়েছি। নাট্যকার চঞ্চল হত্যার বিচার চেয়েছি। এজন্য বিশেষ মহলটি আমার বিরুদ্ধে লেগেছে।
প্রসঙ্গগত, এনসিসি মেয়র বিভিন্ন সময় তার বক্তব্যে বলে থাকেন ঠিকাদারদের কাজ আমি দেইনি তারা টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ পেয়েছেন। কেউ টেন্ডার পেলে তাকেও কাজ দিবো। কিন্তু গত বুধবার তিনি ঠিকাদার গ্রেফতার প্রসঙ্গে নিজেই বলে ফেলেন ঠিকাদার সুফিয়ান ও জাকিরকে তিনি কাজ দিয়েছেন। দায়েরকৃত মামলায় তাকেও গ্রেফতার করতে বলেন সদর থানা পুলিশকে।
কাউন্সিলর শকুর মতে নারায়ণগঞ্জের সচেতন নাগরিক সমাজ জানতে চায় যেখানে টেন্ডারে এনসিসি কাজ দেন সেখানে তিনি কিভাবে ঠিকাদারদের কাজ দিলেন? বিতর্কিত ঠিকাদার গ্রেফতারের জন্য কেন নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন কাজ বন্ধ থাকবে? কার স্বার্থে তিনি এসব করছেন ?