খেলাধূলাডেস্ক,বিজয় বার্তা ২৪
আরব আমিরাতকে হারিয়ে আত্মবিশ্বাস বাড়ানো জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। মিরপুরে আবর আমিরাতকে ৫১ রানে হারিয়েছে টাইগাররা। ভারতের বিপক্ষে হারের পর নিশ্চিতভাবেই এই জয় পরবর্তী ম্যাচগুলোতে মাশরাফিদের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
১৩৩ রানের স্বল্প পুঁজিকে সম্বল করে শুরুটাও দারুণ করেছিল বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই রোহান মুস্তফার ক্যাচ ফেলে দেন সৌম্য সরকার। তবে সফলতা পেতে খুব একটা সময় নেয়নি বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলেই মোহাম্মদ কলিমকে ফিরিয়ে দেন আল আমিন হোসেন।
দলীয় ২৫ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় আমিরাত। আগে দু দফা জীবন পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি রোহান মুস্তফা। দ্বিতীয়বার নিজের বলে নিজেই আসাধারণ ক্যাচ ধরেছিলেন মুস্তাফিজ। তবে শরীরের ভারসাম্য ধরে রাখতে না পারায় সে দফায় বেচে যান মুস্তফা। তবে মাশরাফিকে উঁচিঢে মারতে গিয়ে সেই মুস্তাফিজের তালুবন্দী হন রোহান মুস্তফা। আউট হবার আগে ১৮ রান করেছিলেন মুস্তফা।
ষষ্ঠ ওভারে আমিরাতকে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা দেন বাংলাদেশ দলপতি মাশরাফি বিন মতুর্জা। ইনফর্ম সাইমন আনোয়ারকে মাহমুদউল্লাহর অসাধারণ ক্যাচে পরিণত করেন। সপ্তম ওভারের প্রথম বলে মোহাম্মদ শাহজাদকে ফিরিয়ে দেন বাংলাদেশের ওয়ান্ডার বয় মুস্তাফিজুর রহমান। এবারের এশিয়া কাপে এটি মুস্তাফিজের প্রথম উইকেট।
পরের বলে আবার আঘাত হানেন মুস্তাফিজ। সন্দীপ পাতিলকে মাশরাফির ক্যাচে পরিণত করেন এই বোলার। এর খানিকবাদে দলীয় ৪৫ রানে আমিরাতের অধিনায়ক আহমেদ জাভেদকে হিট উইকেটের ফাঁদে ফেলেন মাহমুদউল্লাহ।
ফাহাদ তারিককে স্টাম্পড করেন সাকিব। দলীয় ৫৫ রানে অষ্টম উইকেট হারাঢ আমিরাত। মাহমুদউল্লাহর বলে আউট হন সাকলায়েন হায়দার। এরপর আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি বাছাইপর্বে অসাধারণ পারফর্ম করে এশিয়া কাপের মুলপর্বে জায়গা করে নেয়া আরব আমিরাত।
মুস্তাফিজ, তাসকিন, মাশরাফি ও মাহমুদউল্লাহ নেন দুটি করে উইকেট। সাকিব ও আল আমিন একটি করে উইকেট পেয়েছেন।
এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিং করে মাশরাফির দল সংগ্রহ করে ৮ উইকেটে ১৩৩ রান। ঘুঁরে দাড়ানোর ম্যাচে শুরুটা ভালোই করেছিল বাংলাদেশ। ১০ ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে ৭৬ রান তুলে নেয় টাইগাররা। তবে মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় বড় সংগ্রহ পায়নি টাইগাররা।
ইনিংসের মাঝখানে সাবিবর-মিথুন-মুশফিকের উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। শেষের দিকে মাহমুদউল্লাহ ঝড়ো ইনিংসে ১৩৩ রান সংগ্রহ করে মাশরাফি বাহিনী। অথচ ১৬ ওভার শেষে লাল-সবুজের দলের সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ১০১ রান। শেষ ৪ ওভারে মাত্র ৩২ রান তুলতে সমর্থ হন সাকিবরা।
শুরুটা ধীর গতির হলেও দ্রুতই রানের চাকা বাড়াতে থাকেন সৌম্য-মিথুনরা। পঞ্চম ওভারে সৌম্য সরকার আমজাদ জাভেদের বলে তুলে মারার চেষ্টা করলে মিড অফে দাড়িয়ে থাকা আমরাতের ফিল্ডার সেটি তালুবন্দী করতে পারেন নি।
তার আগের ওভারেই জীবন পান মিথুনও। এর পরেই অবশ্য পাল্টা আক্রমণ চালান সৌম্য। পরপর দুই বলে একটি চার ও ছয় হাকান এই বাম হাতি ব্যাটসম্যান। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে আরেকটি ছক্কা মারেন সৌম্য। তবে দ্বিতীয় বলে আবার উঠিয়ে মারতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে আসেন সৌম্য। সৌম্য আউট হবার পর ব্যাটে ঝড় তোলেন মিথুন।
তবে ভারতের বিপক্ষে ভালো খেললেও এই ম্যাচে তেমন কিছু করতে পারেননি সাবিবর রহমান। দলীয় ৭২ রানে ১২ বলে মাত্র ৬ রান করে রোহান মুস্তফার বলে আউট হন এই টি২০ স্পেশালিস্ট। ভারতের বিপক্ষে দ্রুতই আউট হয়ে গেলেও এই ম্যাচে দারুণ খেলছিলেন মিথুন। তবে দলীয় ৮১ রানে স্টাম্পট হয়ে বিদায় নেন মিথুন। হাফ সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৩ রান দূরে ছিলেন মিথুন।
পরের ওভারে দলকে বিপদে রেখে আউট হন মুশফিকুর রহিমও। ৮ বলে চার রান করেন মুশফিক। এরপর বাংলাদেশের সংগ্রহটা এগিয়ে য়ে যাচ্ছিলেন সাকিব এ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে দলীয় ১১২ রানে আমজাদ জাভেদের ফুলটস বলে বোল্ড হয়ে ফিরে আসেন সাকিব।
বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার ফিরে আসার পরের বলেই উঠিয়ে মারতে গিয়ে আউট হন নুরুল হাসান সোহান। উনিশতম ওভারে দ্রুত রান নেবার তাগিদে মারতে গিয়ে উইকেট দেন মাশরাফিও। প্রথম ম্যাচের দূর্বল পারফরম্যান্সের কারণে বাদ পড়েছেন ইমরুল কায়েস। তার জায়গায় দলে ফিরছেন নুরুল হাসান সোহান।