বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
জুলাই স্পিরিট কারও বাপ দাদার সম্পদ নয়। সুতরাং আ.লীগের মত কেউ চেতনার ব্যবসা খুলে বসবেন না বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন।
২৫ ডিসেম্বর বুধবার বিকাল ৪ টায় নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নে মহান মুক্তিযুদ্ধে ও ২৪ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে দোয়া ও আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। গণঅধিকার পরিষদ, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা শাখার ইদ্যোগে এই দোয়া ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় রাশেদ খাঁন বলেন, এই গণঅভ্যুত্থান সবার। জুলাই স্পিরিট কারও বাপ দাদার সম্পদ নয়। সুতরাং আ.লীগের মত কেউ চেতনার ব্যবসা খুলে বসবেন না। আমরা প্রশ্ন করতে চাই, সরকার সাড়ে ৪ মাস কি কি কাজ করেছে। কেন এখনো আ.লীগের অপরাধী, হাইকমান্ড ও শেখ পরিবারকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না? ৩০০ ডামি এমপির বিষয়ে সরকারের অবস্থান কি? কেন এখনো তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত ও দুদকের মাধ্যমে পাকড়াও করা হচ্ছে না? গণহত্যাকার মাস্টারমাইন্ড শেখ হাসিনার নির্দেশে যে সকল পুলিশ, র্যাব, বিজিবির সদস্যরা গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করেছে, তাদেরকে চাকরিচ্যুত করা এবং গ্রেফতার না করার রহস্য কি? কেন সরকার এখনো গণহত্যার তালিকা অর্থাৎ শহীদ ও আহতদের সঠিক তালিকা প্রণয়ন, ক্ষতিপূরণ, সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করছে না? সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের মাধ্যমে প্রতিজন শহীদ ও আহতদের বিপরীতে গণহত্যার মামলা দায়ের করতে পারতো। কিন্তু কেন কচ্ছপের গতিতে সরকারের কার্যক্রম চলছে?
তিনি আরো বলেন, আ.লীগের নেতারা বাংলাদেশকে নিজেদের দেশ মনে করে না, এদের আসল দেশ হলো ভারত। কিন্তু সেই ভারতও এদের রক্ষা করতে পারেনি। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমেই এদের পরাজয় নিশ্চিত হয়েছে।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকারকে শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ গণহত্যার মাস্টারমাইন্ডরা কিভাবে পালালো, তার তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে এবং পলায়নে সহায়তাকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক সেনাবাহিনীর হেফাজতে থাকা ৬২৬ জনের তালিকা এখনো প্রকাশ না হওয়া রহস্যজনক।
তিনি আরও বলেন, সরকার কি আসলেই আ.লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারবে? আমাদের স্পষ্ট কথা, বিচার শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম ও নিবন্ধন স্থগিত করতে হবে। এখনো পর্যন্ত সর্বত্র আওয়ামীলীগের পুনর্বাসন চলছে। সরকারের সকল সেক্টর ও প্রশাসন থেকে আওয়ামী সুবিধা ভোগীদের তালিকা করে পদাবনতি করতে সমস্যা কোথায়? উপদেষ্টা পরিষদ গঠন নিয়ে মানুষের হতাশা আছে। সরকারকে বলবো, উপদেষ্টাসহ সকল কর্মকর্তা কর্মচারীর আর্থিক হিসাব প্রতিমাসে নিজস্ব দপ্তরে জমা দানের বিধান তৈরি করুন। সরকার যদি ব্যর্থ হয়, তবে দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করে জনজীবনে স্বস্তি আনতে না পারার কারণে সরকার ব্যর্থ হবে।
গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী করে একটা গোষ্ঠী কিংস পার্টি খোলায় ব্যস্ত। আপনাদেরকে এই দেশের জনগণ ক্ষমা করবে না। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর গঠিত সরকারের প্রথম দায়িত্ব ছিলো আওয়ামী লীগের বিচার করা ও আন্দোলনে আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা কিন্তু বাস্তবে সেটা হচ্ছে না। এখনও আন্দোলনে আহত অনেকেই সুচিকিৎসা পায়নি,আর অন্তবর্তী কালীন সরকার ও বিএনপির কোন কোন নেতা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে। আওয়ামিলীগ গত পনের বছরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল,ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে ৩৬ দিনও টিকে নাই। যারা নতুন করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার চেষ্টা করছেন আপনারা মনে রাখবেন শেখহাসিনা তো পালানোর জন্য হেলিকপ্টার পেয়েছিল আপনারা পালানোর জন্য ঠেলাগাড়িও পাবেন না।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সদর উপজেলার আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম। নারায়ণগঞ্জ জেলা গণঅধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল হাসানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য শহিদুল ইসলাম ফাহিম, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক তোফাজ্জল হোসেন, জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক জাহিদ হাসান,সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রবিউল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার নাহিদ, নারায়ণগঞ্জ জেলা যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি আরিয়ান রিপন, গণঅধিকার পরিষদের নেতা ফেরদৌস ভূইয়া প্রমুখ।