বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
বাংলাদেশে জুমার নামাজের সময় শুক্রবার বিভিন্ন মসজিদে সরকারের তত্ত্বাবধানে রচনা করা খুৎবা পড়েছেন ইমামরা। সম্প্রতি পর পর দুটি সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে সরকার মসজিদের খুৎবা নজরদারির সিদ্ধান্ত নেয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয়ভাবে খুৎবা রচনার এই উদ্যোগ নেয়া হলো।
এ সপ্তাহের খুৎবার বিষয় ছিল জঙ্গিবাদ-বিরোধী।
ঢাকার বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজের পুরো সময় জুড়েই ছিল জঙ্গিবাদ-বিরোধী বক্তব্য। ইসলামিক ফাউন্ডেশন একটি পাতায় কোরান ও হাদিসের আয়াত বাংলা অনুবাদসহ পাঠিয়েছে। সেটিকে ভিত্তি ধরেই আধঘণ্টা খুৎবা দেয়া হয়েছে।
জঙ্গিবাদ এবং মানুষ হত্যা যে ইসলাম সমর্থন করে না সেটি তুলে ধরেছেন ইমাম।
বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম মহিউদ্দিন কাশেমি বলেন,খুৎবায় সবসময় সমসাময়িক বিষয় তুলে ধরা হয়। বর্তমানে জঙ্গিবাদ যেহেতু একটি সমসাময়িক বিষয় সেজন্য এ বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।
তিনি বলেন, “মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে করণীয় কী, বর্জনীয় কী- সে বিষয়গুলো কোরানে করিমের আলোকে, হাদিসের আলোকে এখানে বলা হয়েছে।”
বাংলাদেশের মসজিদগুলোকে যেন রাজনৈতিক প্রচারণার কাজে ব্যবহার করা না যায়, সেজন্যে নতুন এ উদ্যোগ নিয়েছে সরকারি প্রতিষ্ঠান ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
কর্মকর্তারা বলছেন, কোন কোন মসজিদে জুমার নামাজের খুৎবার সময় বাংলা বক্তব্যে এমন অনেক রাজনৈতিক বিষয়ের অবতারণা করা হয় যা পরোক্ষভাবে জঙ্গি কার্যক্রমকে উস্কে দিতে পারে।
সরকারের এ উদ্যোগ নিয়ে মুসল্লিদের মধ্যেও বিভক্তি আছে। অনেকে এ উদ্যোগকে সমর্থন জানালেও অনেকে বিষয়টি ঠিক মানতে পারছেন না।
নামাজ পড়তে আসা একজন মুুসুল্লি আবদুল্লাহ হাসান বলেন, “সব মসজিদে অভিন্ন খুৎবার বিষয়টি আমি সমর্থন করি। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবার ভূমিকা রাখা উচিত।”
আরেকজন মুসুল্লি মনিরুজ্জামান মনে করেন ইমামদের স্বাধীনতা থাকা উচিত। তাছাড়া খুৎবা নির্ধারণ করার মাধ্যমে জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে কোন ফল দেবে কিনা সেটি নিয়েও তার যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
ঢাকার আরেকটি মসজিদের ইমাম মাওলানা তানঈম হাসান মাহমুদি মনে করেন, খুৎবার বিষয় নির্ধারণ করে দেয়ায় কোন সমস্যা নেই। কিন্তু যদি খুৎবা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা হয় তাহলে সেটি ‘দুঃখজনক’ হবে বলে তিনি মনে করেন।
তবে এখনো পর্যন্ত বিষয়টিতে কোন সমস্যা দেখছেন না মাহমুদি।
এদিকে ইসলামী ফাউন্ডেশন বলছে যে খুৎবা রচনা করা হচ্ছে, সেখানে ভূমিকা রাখছেন দেশের বিজ্ঞ আলেম এবং ইসলামী চিন্তাবিদরা।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই খুৎবা অনুসরণ করার জন্য মসজিদগুলোকে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে, কিন্তু বাধ্য করা হচ্ছে না। সূত্র : বিবিসি বাংলা।