নারায়ণগঞ্জ,বিজয় বার্তা ২৪
“জনবান্ধব এসিল্যান্ড বদলে দিলেন বন্দর উপজেলা ভূমি অফিসের চিত্র” ভূমি একজন মানুষের শ্রেষ্ঠ অবলম্বন। মানুষ তার সারাজীবনের সঞ্চয় দিয়ে একখন্ড ভূমি কিনে সেই ভূমির প্রশাসনিক রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব যদি যোগ্য হাতে না পড়ে তবেই বাড়ে জনভোগান্তি। ভূমি অফিসগুলোর দীর্ঘ দিনের জীর্ণতা আর দৈন্যতাকে পিছনে ঝেরে ফেলে নতুন উদ্যোমে ভূমি ব্যবস্থাপনা ও অফিস সংস্কারে হাত দিয়েছেন বন্দর উপজেলার বর্তমান সহকারি কমিশনার (ভূমি) হোসনে আরা বেগম, যিনি বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের একজন ইতিবাচক মনোভাব সম্পন্ন কর্মকর্তা। এ বিষয়ে তিনি জানান, সহকারি কমিশনার (ভূমি) হিসেবে যোগদানের পর থেকে ভূমি অফিসগুলোর জরার্জীণ অবস্থা ও সেবাদানের ক্ষেত্রে দৈন্যতা দেখে কষ্ট পেয়েছি আমি। সেবা প্রার্থী সাধারণ মানুষের কষ্ট পীড়া দিয়েছে আমাকে। এই উপলব্ধি থেকেই শপথ নিয়েছি যে, গতানুগতিক কাজ না করে জনগণের সেবা প্রাপ্তির বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করবো, পাশাপাশি ভূমি অফিসগুলোর জরাজীর্ণতা ঘোচাতে চেষ্টা করবো। প্রথমেই হাত দিয়েছিলাম অফিসের নথি ব্যবস্থাপনা, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি এবং জনগণের সেবা প্রাপ্তির বিষয়টি আরো সমৃদ্ধ করতে। এ ক্ষেত্রে গণশুনানীর কোন বিকল্প নেই, এ জন্যই সকাল ৯টা হতে বিকাল ৫টা পর্যন্ত আগত দর্শনার্থীদের সমস্যা শুনে তাৎক্ষনিকভাবে সমাধান প্রদানের কাজটি তিনি করে যাচ্ছেন আন্তরিকভাবে, পাশাপাশি সপ্তাহে একদিন আনুষ্ঠানিকভাবেও গণশুনানী নেয়া হচ্ছে ও তাৎক্ষনিক প্রতিকার দেয়া হচ্ছে। বর্তমান এসি ল্যান্ডের ইতিবাচক মনোভাবের কারণে উপজেলা ভূমি অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা/কর্মচারিদের মধ্যে সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে ইতিবাচক মনোভাব দেখা গেছে। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে উপজেলা ভূমি অফিসসহ ইউনিয়ন ভূমি অফিসসমূহে অভিযোগ-বাক্স এবং এসিল্যান্ড অফিসে স্থাপন করা হয়েছে সিটিজেন চার্টার ও জনসচেতনামূলক বিভিন্ন বিলবোর্ড, অফিস প্রাঙ্গনে তৈরি হয়েছে মুক্তমঞ্চ যেখানে সেবাপ্রার্থী সাধারণ জনগণ বসেন, তাদের জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানিরও সু ব্যবস্থা করা হয়েছে। অফিস প্রাঙ্গনের পরিত্যক্ত জায়গাটি পরিচ্ছন্ন করে সেখানে সুন্দর ফুলের বাগান করেছেন বর্তমানে এসিল্যান্ড। আমাদের প্রতিনিধি বন্দর এসিল্যান্ড অফিসে গিয়ে অফিসের পরিবর্তন দেখে অভিভূত হয়ে যান। ভূমি অফিসের জরার্জীণ দেয়ালগুলোও রাঙ্গানো হয়েছে নতুন রংয়ে। এসিল্যান্ডের অফিসকক্ষ ও অন্যান্য কর্মকর্তা/কর্মচারীদের কক্ষ বিন্যাসেও লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। অফিস কক্ষের বারান্ধায় স্থাপিত হয়েছে সেবাবাক্স,এখান থেকে সেবাপ্রার্থীরা বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় ফরম পাচ্ছেন। অফিসের সম্মুখে স্থাপিত হয়েছে একটি হেল্পডেস্ক, যেখান থেকে সেবাপ্রার্থীরা জানতে পারছেন কোন সেবার জন্য কোথায় যাবেন। তবে হলফ করে বলা যায় এল্যিান্ড হোসনে আরা বেগম যোগদানের পর হতে বর্তমান ভূমি অফিস হয়ে উঠেছে সম্পূর্ণরূপে দালালমুক্ত। এ বিষয়ে সহকারি কমিশনার (ভূমি) হোসনে আরা বেগম জানান, ছোট/বড় মোট ২০টি প্রকল্প তিনি হাতে নিয়েছেন, এর মধ্যে অধিকাংশই ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। অবশিষ্টগুলোর কাজ চলছে। তিনি জানান, এ অফিসের কোন রেকর্ডরুম না থাকায় গুরুত্বপূর্ণ নথিসমূহ অরক্ষিত অবস্থায় ছিল। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক স্যারের বিশেষ বরাদ্দ ও দিকনির্দেশনায় একটি আধুনিক রেকর্ডরুমের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমান ডিসি স্যার অত্যন্ত আন্তরিক উদ্ভাবনী ক্ষমতাসম্পন্ন একজন মানুষ। তার নির্দেশনায় আমরাও ভূমি সেবা সংশ্লিষ্ট উদ্ভাবনী উদ্যোগ বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি। এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্যোগগুলোই সম্মিলিতভাবে একদিন নিয়ে আসবে কাঙ্খিত পরিবর্তন।