বিজয় বার্তা ২৪ ডেস্ক
ভারত ও বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর পত্র পত্রিকায় একমাত্র যাঁর কবিতার সাথে ছাপা অক্ষরে সম্পর্ক চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে , তিনি এই সময়ের বিশিষ্ট ও জনপ্রিয় কবি বিদ্যুৎ ভৌমিক । যিনি কবিতাকেই উপজীব্য করে ইতিমধ্যে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছেছেন ও ইউরোপ এবং আমেরিকার বাঙালী পাঠকদেরও অতি প্রিয় কবি হয়ে উঠেছেন । কবি বিদ্যুৎ তাঁর অন্তর্দৃষ্টি দ্বারা জন্ম ও মৃত্যুর এই রহস্যকে উপলব্ধি করেছেন ।তাঁর অধিকাংশ কবিতাতেই সেই — জন্ম ও মৃত্যু চেতনা সমৃদ্ধ চিত্রপট অনুধাবন করেন পাঠকসমাজ, তিনি অকপটে স্বীকারও করেছেন, — আমার এই কবিতার পথে সোজা হয়ে দাঁড়াবার শক্তি একমাত্র জুগিয়েছেন বিখ্যাত কবি আমার অগ্রজ সম সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় । তাঁর অশেষ কাব্যপ্রীতি ও জীবন কাঠির ছোঁয়াতে আজ আমি আপনাদের সবার কাছে কবি বিদ্যুৎ ভৌমিক হয়ে উঠতে পেরেছি । তিনি যদি তাঁর সবটুকু স্নেহ আমাকে না দিতেন তাহলে এ্যাতোদিনে এই বিদ্যুৎ ভৌমিক কবিতার ক্ষেত্র থেকে কোথায় হারিয়ে যেতো, সেটা আমি ছাড়া – অনুধাবন করতে ঈশ্বরের পক্ষেও অসাধ্য ছিল ! সুনীল দার কথা এখনো আমার কানে সেতারের মত বাজে — পাঠক ভালো মন্দ যা খুশি বলুন তুমি বিদ্যুৎ তোমার মতো লেখো, তোমার মতো এই সুন্দর মনটাকে স্বভাবসিদ্ধ রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাও নিজের এই সত্ত্বাকে ওদের ভালো – মন্দ বিচারে হারিয়ে কিন্তু ফেলোনা । ” সত্যি বলতে কি, মনের একেবারে গভীরে হাজারো দৃশ্য ঘোরাঘুরি করেই চলে উদ্দেশ্যহীন, সেগুলোকে পংক্তিময় করে তুলতে – অতঃপর — সেসব কবিতা করে তোলবার আগে আমাকে অহর্নিশ কী — যে কাঠখড়ই না পোড়াতে হয় । কবিতা আমার বিশ্বাস বিজ্ঞানের এক থিসিস্ লেখা নয় । একই কবি একই সময়ে যা লিখেছেন – তার সবকটাকেই এক স্তরে ফেলার এখন খেলা চলছে এই — প্রক্রিয়া আমি মনে করি ইতিবাচক নয় । “— যাই হোক কবিতা ও কবি বিদ্যুৎ ভৌমিকের সম্পর্কে আরো অনেক কিছু জানতে যদি চান তাহলে চোখ রাখুন – ৭১ স্বাধীনতা – র পাতায় ।এই অবকাশে আপনাদের প্রত্যেকের হয়ে কবি বিদ্যুৎ – কে জানাচ্ছি অনেক অনেক ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা —> সম্পাদক ] ******************************************************* দীর্ঘ কবিতা *********>>> এক বিছানা এবং গোটা সিগারেট ***************¤¤*************** বিদ্যুৎ ভৌমিক ********************** এক বিছানায় রাত কেটেছে ; সেই বিছানায় সকাল এরই মধ্যে ব্যক্তিগত এই শরীরে ঠান্ডা লাগে, গরম লাগে ! প্রথম থেকেই এক দেহেতে কান্না ওঠে হাসি ওঠে কম্প দিয়ে , — এই ঘরেতে সকাল – রাত্রি আমার পাওয়া দ্বিতীয় জগত কবিতা আমার একান্ত অনির্দিষ্ট নারী সেই কারণে স্পর্ধাটুকু অফুরান অদেখায় হাওয়া নির্জন , আমার ঘরের আমার কথা আমি শুনি মন বাড়িয়ে ***** # গোটা সিগারেট খাই বলে কী পোড়াই আমার অতলান্ত — ঘুমের ভেতর নগ্ন হয়ে নেচে ওঠে বেদ – বেদান্ত ! রাতের আকাশ বিশ্রীভাবে চাঁদ জ্বালিয়ে তাকিয়ে দেখে , এই পৃথিবীর প্রাচীন নাটক সর্বোপরি নিজেই লেখে — ছায়া আমার অন্তরীক্ষে ভিজেই ওঠে বৃষ্টি স্নানে অসহিষ্ণু এই হৃদয় পুরুষ কেঁদে চলে অভিমানে ! # রোজ এই রাস্তাতে শিমূল শাখারা ভয়ঙ্কর মাথা নেড়ে ডাকে চোখের সামনে অনন্ত অসীম অন্ধকার এখানে পারিপার্শ্বিক হাওয়ায় রাতের শিশির নিঃশব্দে পড়েছে ধূলা রাস্তায় , — স্বপ্ন থেকে সঙ্গোপনে উঠে এলে শ্মশানের চিতার উত্তাপে ঘুমন্ত আত্মারা শরীর থেকে শবের আগুন আড়াল করে ব্যর্থ বিশ্বাসে ! অনেকটা পথ হেঁটে আসার পর মিথ্যা হয়ে যায় গভীরের পথ চলা কবিতার মনে রাখা ছন্দগুলি প্রত্যন্ত বিষজ্বালা দেয় , নিষ্ঠুর অতীত থেকে নির্বাসিত স্মৃতিগুলো আকণ্ঠ অন্ধকারে বিচ্ছেদ গৌরবে হয়ে ওঠে কাঙাল ***** সেজন্য নীরব প্রতীক্ষায় থাকি সব আভরণ খুলে । কেউ কেউ কাল ভোরে আগুন সাজিয়ে তোলে সখের সংসারে — কেউ কেউ কবিতার তপস্যায় অন্তহীন একা হয়ে থাকে অহর্নিশ । # আকাশপথে চোখ রেখেছি পায়ের কাছে আগুন মাটি তবু যেন নির্নিমেষে বলতে হবে ; এসময়টা ভীষণ খাটি ! যখন – তখন ক্রোধ এসে যায় গর্ভে নাচে ভূত – ভবিষ্যৎ এই বয়সে চলতে চলতে অন্ধ হয়ে হারাই যে পথ ! এই বিছানায় সুখ এসেছে মৃত্যু নিয়ে ভাঙছে হৃদয় দেওয়াল বিহীন আমার আমি অবুঝ অটুট শুধু প্রেমময় **** # কিছু কিছু দুঃখ আছে এই শরীরে ভীষণ পরিণত সেখানে বৃষ্টি হলে মনে মনে মৃতদেহরাও কাঁদে — এই রাস্তায় হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়লে পোশাকের ভেতর ঢাকা থাকা নগ্নতা সুচারু প্রশ্বাস নেয় , অন্তরালে চোখের ভেতর জ্যোৎস্না ডোবে অন্তর্গত এভাবে প্রতিদিন শ্রেষ্ঠ সময়ে আমার পদশব্দে মাটির ভেতর থেকে ঘুমন্ত কীটেরা জেগে ওঠে — দিনাবসানে সবটুকু নিভৃত স্তব্ধতা ঈর্ষায় নির্বাসন নিলে আমি আকাশ থেকে এক লক্ষবার চোখ ফিরিয়ে নেই ! # এবার অরণ্যের ভেতর অনেক কষ্টে একমুঠো জ্যোৎস্না আনতেই স্মৃতিমত্ত স্বপ্নরা হাঁ করে তাকায় — রোজ এসময় অনন্তকালের নদীটা অবলীলায় ছেলেবেলায় মত খুশি হতে হতে কাঙালের মত তাকিয়ে থাকে এক ফাঁলি আকাশের বুকে, — আজ এই হাতে ধরা আছে মধ্যরাতের চাঁদ নীল মেঘ ঘুম চোখে দেখে টগর গাছের নিচে জোনাকির সঙ্গম খেলা ! এধারে হওয়াতে নাচ্ছে অশরীরী ছায়া এবং নিরাভরণ অন্ধকার মাঝেমধ্যে দীর্ঘশ্বাস থেকে কান্না – কান্না গন্ধ পেলে আমি অত্যন্ত নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ি ! এই বয়স থেকে কখন – সখন ছায়াময় অভিমান দেখা দিলে কবিতার আশীর্বাদ পাই ! # ওকে স্পর্শ করতেই আঙুলে ছেঁকা লাগে শেষবার দূরত্বে চলে যেতে যেতে ঝমঝমিয়ে একপাল বৃষ্টি নামে , এতদিন পর বুকটা ভাঙছে দেখে বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়াতেই শুনলাম ; আমার স্মৃতিগুলোর মৃত্যুদন্ড হয়েছে ! এই নীরবতায় নিঃশ্বাসের শব্দ ঘরের ভেতর উড়ে উড়ে বেড়ায় *** হঠাৎ মন বলে ওঠে ; কবি এই দেখ তোমার শরীরে প্রাণ আছে !! ************************¤¤**************************** ( নির্বাচিত কবিতা – কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া বিদ্যুৎ ভৌমিক ) ******************************************************** কবি বিদ্যুৎ ভৌমিক ৬৫ /১৭, ফিরিঙ্গি ডাঙা রোড, শ্রীরামপুর, হুগলি, সূচক ৭১২২০৩ পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ, মোবাইল ০৯৬৭৪১৩৪৬৫৫ Facebook //bidyutbhowmick1964@gmail.com ********************************************************