বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
ধর্মীয়, আধ্যাত্মিক ও সামাজিক সংস্থা বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআ’ত এর উদ্যোগে আজ দুপুরে রমনাস্থ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনে সংগঠন এর প্রেসিডেন্ট আওলাদে রাসুল (দঃ), পীরে কামেল আল্লামা সৈয়দ বাহাদুর শাহ্ মোজাদ্দেদী বলেছেন, অভিশপ্ত জঙ্গীবাদ এখন শুধু জাতীয় সমস্যা নয়। আন্তর্জাতিক হুমকি হিসেবে চিহ্নিত। ক্রমবর্ধমান অব্যাহত বোমাবাজী, অস্ত্রবাজী ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র ও জঙ্গীবাদীরা রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমুহ ধ্বংস করে, সুন্নী ওলামা মাশায়েখদের খুন ও হামলা করে, মসজিদ মাজার ঈদগাহে বোমা মেরে ও ধর্মীয় উপাসনালয় সমুহে হামলা করে গোটা দেশকে আতংকের জনপদে পরিণত করতে চায়। এ অপশক্তি প্রতিরোধে দেশের সম্মানিত আলেম-ওলামা ও পীর-মাশায়েখদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে সক্রিয় ও বলিষ্ট ভূমিকায় এগিয়ে আসতে হবে। আল্লামা সৈয়দ বাহাদুর শাহ্ মোজাদ্দেদী সভাপতির বক্তব্যে আরও বলেন, অভিশপ্ত জঙ্গীবাদী অপশক্তি ধর্মের নামে নিরীহ মানুষ হত্যার মাধ্যমে তথাকথিত “ইসলামিক স্টেট” প্রতিষ্ঠার যে দুঃস্বপ্ন দেখছে, তা আল্লাহ ও রাসুলের আদর্শের বিরোধী এবং কষ্মিনকালেও জঙ্গীবাদকে শান্তি ও মানবতার ধর্ম ইসলাম সমর্থন করে না। ইসলামের নামে উর্দি পরিহিত হয়ে যেসকল উগ্রবাদী ও চরমপন্থী গোষ্ঠী এহেন অবাঞ্চিত ও গর্হিত কর্মকান্ডের সাথে জড়িত রয়েছে তারা কখনও মুসলমান হতে পারে না। বরঞ্চ এরা এসকল অবাঞ্চিত কর্মকান্ডের মাধ্যমে বিশ্বদরবারে ইসলামকে বিতর্কের মুখোমুখী দাঁড় করিয়ে মুসলমানদের একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করতে ব্যর্থ প্রয়াস চালাচ্ছে। জঙ্গীবাদের সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, মওদুদীবাদী জামাত, ওহাবী, সালাফি লা-মাযহাবী সহ সকল বাতিল মতবাদের দৌরাত্ম্য ও আস্ফালন প্রতিরোধে দেশের হক্কানী আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখদের সম্মিলিত বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলা আজ সময়ের দাবী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের জিরো টলারেন্স এর কারণে বাংলাদেশ শান্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি জঙ্গীবাদবিরোধী এ ধারা অব্যাহত রাখতে সরকারকে পীর মাশায়েখদের সম্পৃক্ত রাখার উদাত্ত আহ্বান জানান। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দানকালে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর মহাসচিব আল্লামা অধ্যক্ষ জয়নুল আবেদীন জুবাইর বলেন, ৯৫ শতাংশ মুসলিম অধ্যুষিত এদেশের ৮৭ শতাংশ সুন্নী মুসলমান। সুন্নীয়তই যে ইসলামের সঠিক রূপরেখা। সরকারের জঙ্গীবাদবিরোধী বিভিন্ন পদক্ষেপের পরও জাতীয় জীবনে বাতিল সালাফী জামাতী অপশক্তি জগদ্দল পাথরের ন্যায় চেপে বসেছে। সর্বত্র এদের সুদৃঢ় ও সুসংহত অবস্থান দেশ ও জাতিকে এক ভয়াবহ চ্যালেঞ্জের মূখোমুখী দাঁড় করেছে যা কোন অবস্থাতেই প্রত্যাশিত হতে পারে না। এমতাবস্থায় সর্বপ্রকার বাতিল অপশক্তির মোকাবিলায় সুন্নী আলেম-ওলামা ও পীর-মাশায়েখদের সুদৃঢ় ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পীরে ত্বরিক্বত আল্লামা খাজা আরিফুর রহমান তাহেরী বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ফেসবুকে পবিত্র কাবা শরীফের অবমাননার কারণে মন্দিরে হামলা ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, শান্তির বার্তাবাহী দ্বীন ইসলামের বিন্দুমাত্র অবমাননা যেমনি সহ্য করা হবে না, ঠিক তেমনি ইসলাম ও আহলে সুন্নাতের নাম ভাঙিয়ে সংখ্যালঘু নির্যাতন ও ভিনধর্মী মতাবলম্বীদের উপাসনালয় ও বাড়ীঘরে নারকীয় হামলাও ইসলাম সমর্থন করে না। বক্তারা কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া থানা এলাকায় মসজিদের মধ্যে মল ছুঁড়ে দেয়া, পবিত্র গ্রন্থ কুরআন শরীফের অবমাননা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ফেসবুকে পবিত্র কাবা শরীফের অবমাননা ও তার পরে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার তীব্র প্রতিবাদ ও এসব ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে দায়ী ও দোষী ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের মানুষ নিজ নিজ ধর্মচর্চা করে অন্য ধর্মের অনুসারীদের সাথে সহনশীল সহাবস্থানে বিশ্বাসী। অথচ চিহ্নিত নাস্তিক্যবাদী ও জামাত জঙ্গীচক্র মহল মানুষের ধর্মীয় চেতনা ও অনুভূতিতে আঘাত করে মানুষকে সাম্প্রদায়িক হানাহানিতে লিপ্ত রাখছে। সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর গভর্নর আল্লামা শায়খ খন্দকার গোলাম মাওলা নকশেবন্দী, ইমামে রাব্বানী দরবার শরীফের ছাহেবজাদা আল্লামা সৈয়দ জাহান শাহ মোজাদ্দেদী আল আবেদী, শুকছড়ি দরবার শরীফের পীর ছাহেব হযরত আল্লামা সৈয়দ নাছেরুল হক চিশতী, আল্লামা হাবিবুল্লাহ বাগদাদী আল কাদেরী, অধ্যাপক ডঃ আল্লামা আতাউর রহমান মিয়াজী, ডঃ আল্লামা আবদুল্লাহ আল মারুফ, ডঃ আল্লামা এ.এস.এম বোরহান উদ্দীন, অধ্যাপক আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ নুর হোসাইন, অধ্যাপক আল্লামা এমদাদুল হক, অধ্যক্ষ আল্লামা এস.এম ফরিদউদ্দীন, অধ্যক্ষ আল্লামা কাজী আনোয়ারুল ইসলাম খান, হযরত শাহজাদা ছুফি আতিকুল মিল্লাত, হযরত আল্লামা এরশাদ উল্লাহ রজায়ী, অধ্যক্ষ মুফতি ফখরুল ইসলাম মোজাদ্দেদী, অধ্যক্ষ আল্লামা হাছান রেজা আল কাদেরী, হযরত শাহজাদা সৈয়দ শামসুদ্দীন, অধ্যক্ষ আল্লামা কাজী আবদুল হান্নান, এডভোকেট এম. আবু নাছের তালুকদার, এম. সোলায়মান ফরিদ, এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, আল্লামা ছালেহ আহমদ আনছারী, অধ্যক্ষ আল্লামা শামসুদ্দোহা, আল্লামা হেলাল উদ্দীন আল কাদেরী, আল্লামা এম.এ মনছুর মোল্লা, আল্লামা রফিকুল ইসলাম হেলালী, অধ্যক্ষ আল্লামা মফিজুর রহমান আবেদী, অধ্যক্ষ মুহাম্মদ আলী নকশেবন্দী, আল্লামা হাসনাইন আহমদ আল কাদেরী, আলহাজ্ব এইচ.এম মুজিবুল হক শুক্কুর।