বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
জঙ্গিবাদ নিয়ে বিএনপি নেতারা যে সমস্ত বক্তব্য দিচ্ছে, তাতে খুব স্বাভাবিকভাবেই মনে হয় তারা একটি শর্ত দিচ্ছে। যারা জঙ্গিবাদকে উৎসাহিত করবে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ডা. দীপু মনির এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন। বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনের কার্যসূচি শুরু হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ নিয়ে বিএনপি নেতারা যে সমস্ত বক্তব্য দিচ্ছে, তাতে খুব স্বাভাবিকভাবেই মনে হয় তারা একটি শর্ত দিচ্ছে। এটা করেন; তা না হলে সন্ত্রাস বন্ধ হবে না। তাই স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ মানুষের মনে হবে তারাই সন্ত্রাস জঙ্গিবাদের মদদদাতা।
তিনি আরো বলেন, এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে তাদের মদদ রয়েছে, উৎসাহ রয়েছে; তাদের কথাবার্তায় মনে হয়। তাদের কোনোরকম শর্ত মানলেই তারা জঙ্গিটা বন্ধ করে দেবে। তাদের কথা-বার্তায় এটাই প্রতীয়মান হয়।
তাই যারা উৎসাহিত করছে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
কল্যাণপুরে পুলিশ বাহিনীর জঙ্গিবিরোধী অভিযানের প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কল্যাণপুরে জঙ্গিরা যে অবস্থায় ছিল তাতে বুঝা যায় তারা আরো একটি ঘটনা ঘটানোর জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত ছিল। কিন্তু আমাদের গোয়েন্দা বাহিনীর তথ্যের ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেটা দমন করতে সক্ষম হয়েছে। আমি মনে করি, আল্লাহ আমাদের আরেকটি বড় ঘটনা থেকে রক্ষা করেছে।
সংসদ নেতা আরো বলেন, আমরা যখন সরকার গঠন করি, তখন থেকেই সন্ত্রাস জঙ্গিবাদবিরোধী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। সন্ত্রাস জঙ্গিবাদের এই ঘটনা শুধু আমাদের দেশে নয়, জার্মানিতে, জাপানে আক্রমণ হচ্ছে। আমেরিকাতেও প্রতিদিনই হামলা হত্যা হচ্ছে। বৃটেনেও হচ্ছে। এই সন্ত্রাস জঙ্গিবাদি কার্যক্রম বিশ্বে ব্যাধির মতো ছড়িয়ে পড়েছে। সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ আজ বৈশ্বিক সমস্যা। যারা এটা করছে তারা ইসলামকে বিশ্বের কাছে সন্ত্রাসী জঙ্গিবাদি সংগঠন হিসেবে পরিচিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
কারা এর অর্থদাতা, মদদদাতা ও প্রশিক্ষণ পরিকল্পনাকারী? কারা তাদের মাথায় এই উদ্ভট চিন্তা ঢুকাচ্ছে সেটা দেখার বিষয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
যার যার অবস্থান থেকে সকলে কিন্তু আজকে একটা জঙ্গিবাদবিরোধী অবস্থান নিয়েছেন। এটাই সবচেয়ে আশার বিষয়, বাংলাদেশে আমরা গণসেচতনা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছি। এটা পৃথিবীর কাছে একটা দৃষ্টান্ত। ইনশাল্লাহ এই জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের হাত থেকে দেশকে আমরা মুক্ত করবো বলে উল্লেখ করেন তিনি।
জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দেশের প্রতি স্তরের মানুষ এখন সচেতন বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডির অপর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে কিন্তু একটি খুতবা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে, সেটা কিন্তু না। এখানে আমাদের কোরআন শরীফের বিভিন্ন সূরায় জঙ্গি এবং সন্ত্রাস, খুন-খারাপির বিরুদ্ধে যে সমস্ত উদ্ধৃতি রয়েছে সেগুলো নবী করিম (স.) বিভিন্ন ধর্ম সম্পর্কে যে সমস্ত কথাবার্তা বলেছেন সেগুলো এবং খুন হত্যা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যে সমস্ত কথা বলেছেন মানবতাবাদের কথা বলেছেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম তার যেমস্ত উক্তি রয়েছে সেসব উক্তিগুলো দিয়েই একটা ছোট পুস্তিকা বের করা হয়েছে, লিফলেট বের করা হয়েছে। সেটাই মসজিদে মসজিদে দেওয়া হয়েছে। যেন তারা যখন বয়ান করবেন মসজিদে মসজিদে খুতবা পড়বেন তখন যেন অন্ততপক্ষে একবার পাঠ করেন। সন্ত্রাসবিরোধী জনমত সৃষ্টি করে এদের প্রতিহত করার কথা বলে দেশবাসীকে সচেতনতা হওয়ারও আহ্বান জানান।