বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা এলাকার নিখোঁজ মাছ ব্যবসায়ী মাসুদ রানার (৩০) সন্ধানের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করতে এসে পুলিশের বাঁধার সম্মুখীন হয়েছে তার মা।
সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে ওই সংবাদ সম্মেলনের আগে পুলিশের পক্ষ থেকে সাংবাদ সম্মেলন না করতে চাপ দেওয়ার অভিযোগও তুলেন তিনি। পরে চাপ উপেক্ষা করে সংবাদ সম্মেলনে নিখোঁজ মাসুদ রানার মা শাহিদা বেগম বলেন, মাসুদ রানাকে অপহরণ করা হয়েছে। সম্প্রতি র্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার আবদুর রশিদ মিথুনকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের দাবী জানান তিনি।
নিখোঁজ মাসুদ রানা ফতুল্লা লামাপাড়া নয়ামাটি এলাকার মাছ ব্যবসায়ী আবদুল হাকিমের ছেলে। মাসুদ শহরের ৩নং মাছ ঘাট এলাকায় মাছের ব্যবসা করতেন।
সংবাদ সম্মেলনে নিখোঁজ মাসুদের মা শাহিদা বেগম বলেন, ‘একবছর হয়ে গেলেও পুলিশ আসামীদের গ্রেপ্তার করেনি। এমনকি আমার সন্তানের সন্ধানের জন্য কোন কাজ করেনি। উল্টো অপহরণ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা আসামীদের সঙ্গে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বেড়ান। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেন না।
শাহিদা বেগম আরো বলেন, সংবাদ সম্মেলনে আসার সময় পুলিশ বাধা দিয়েছে। যাতে সংবাদিকদের কাছে না যাই। একবছর হয়ে গেছে কিছু করে নাই, এখন বলে তারা সহযোগিতা করবে। আমাদের প্রেসক্লাব থেকে নিয়ে যেতে অনেক চেষ্টা করছে। পরে সবাই বাধা দিলে চলে যায়। আল্লাহ জানে এখন আবার আমাদের বিরুদ্ধে কি করে।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে নিখোঁজ মাসুদ রানার বাবা আবদুল হাকিম লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘গত ২০১৫ সালের ৯ আগস্ট প্রতিদিনের মতো ওইদিন সকাল ৭টায় মাছ বিক্রির উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়ে গেলে আর ফিরে আসেনি। তারপর মাসুদের বন্ধু এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী আবদুর রশিদ মিথুনের ঘনিষ্ট সহযোগী লামাপাড়া এলাকার আবদুল করিম ওরফে কইরার ছেলে ডালিম মাসুদের স্ত্রী হাসিনা বেগমকে ফোন দিয়ে জানান, রানাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু মাসুদের ব্যবহারকৃত মোবাইল ফোনটি ডালিমের হাতে দেখতে পেয়ে সন্দেহ হয় হাসিনার। এছাড়াও ডালিমের অসংলগ্ন কথাবার্তা শুনে মাসুদের মা শাহিদা বেগম ও স্ত্রী হাসিনা ওই আগস্ট মাসে ১২ তারিখে ফতুল্লা থানায় সাধারণ ডায়রী করেন। দুইদিন পর ১৪ আগস্ট আবদুর রশিদ মিথুন, রফেদ আলীকে আসামী করে একটি অপহরণ মামলা করা হয়। যার নাম্বার ৪৫(১৪/৮/২০১৫ইং)। এর কিছুদিন পর শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে বন্ধন বাস কাউন্টারের সামনে থেকে ডালিমকে দেখতে পেয়ে মাসুদের স্ত্রী হাসিনা চিৎকার করলে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় সদর মডেল থানা পুলিশ ডালিমকে আটক করে। এছাড়াও আরো দুইজনকে আটক করলেও মিথুন জামিনে বের হয়ে যায়। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমার সন্তানের কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। গত ২০১৬ সালের ২ আগস্ট শিবু মার্কেট এলাকার সুমাইয়া বিরিয়ানী হাউজের সামনে থেকে মাদকসহ র্যাব-১১ মিথুনকে গ্রেপ্তার করে। আমরা চাই মিথুনকে র্যাব ও পুলিশ যৌথভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আমার ছেলে মাসুদের সন্ধান পাওয়া যাবে।
এ বিষয়ে নিখোঁজ মাসুদের তদন্তকারী কর্মকর্তা ফতুল্লা থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) গোলাম মোস্তফা জানান, আসামীদের সঙ্গে তার সখ্যতার অভিযোগ সত্য না। এখন পর্যন্ত মামলায় ৪জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রয়োজনে মিথুনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।