চাঁপাইনবাবগঞ্জ,বিজয় বার্তা ২৪
মানুষের সেবা করা লক্ষ্য নিয়ে ক্লিনিকগুলো তাদের যাত্রা শুরু করলেও রোগীরা পাচ্ছে না স্বাস্থ্য সেবা, হচ্ছে প্রতারিত। এক পর্যায়ে রোগীদের কাছ থেকে গলা কাটা পয়সা আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয় কোন কোন ক্লিনিকে সিজারিয়ান রোগীদের শ্লীলতাহানি করার অভিযোগও উঠেছে। এসব ক্লিনিক গুলো তদারকির দায়িত্ব চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জনের উপর থাকলেও তিনি কোন ক্লিনিক গুলো পরিদর্শন করেন না। সিভিল সার্জনকে ম্যানেজ করে বিভিন্ন ক্লিনিকে স্বাস্থ্যনীতি বর্হি:ভূত ভাবে রোগীদের চিকিৎসা করা হয়ে থাকে বলে স্বাস্থ্য বিভাগের এক সূত্র জানিয়েছেন। স্বাস্থ্য বিভাগের ওই সূত্রটি আরও জানিয়েছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বিধি বিধান মোতাবেক কোন ক্লিনিকই বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি, ডাক্তার ও কোন প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত নার্স নেই। এসব ক্লিনিক গুলোতে যে সমস্ত রোগীদের চিকিৎসা করা হয়। ওই রোগীদের ওই রোগের চিকিৎসকের সাইন বোর্ড থাকলেও চিকিৎসককে পাওয়া যায় না। গাইনী, মাতৃ ধাত্রী বিশেষজ্ঞ নেই। অনেক ক্লিনিকে ড্রাপিং ছাড়াই সিজার করার অভিযোগ রয়েছে। ইতিমধ্যে রহনপুর আলহেরা ক্লিনিকে সিজার করতে এসে ওটি রুমে মহিলাদের শ্লীনতাহানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ক্লিনিকে ড্রাপিং ছাড়াই মহিলাদের সিজার করা হয়েছে। ক্লিনিকগুলোর সামনে যে সাইন বোর্ড গুলো ঝুলানো হয়েছে তা সরকারি বিধান মোতাবেক দৈঘ্য-প্রস্থের মাপ ঠিক নেই। এছাড়াও নিয়ম বহি:ভূত ভাবে বিশাল লম্বা চওড়া ব্যানার ঝুলিয়ে রেখে রোগীদের প্রতারিত করছে। ক্লিনিকগুলোর সামনে যে সমস্ত ডাক্তারদের নাম সম্বলিত সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই আসেন না বলে স্থায়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তাররা অভিযোগ করেছেন। আরও জানাগেছে, ক্লিনিকগুলোর প্রচারের জন্য যে মাইক ব্যবহার করা হয় তা স্বাস্থ্য বিভাগের কোন বিধানে নেই বলে ভূতপূর্ব সিভিল সার্জন ডা. মোজাহারুল হক ও ডা. আলাউদ্দিন জানিয়েছেন। স্বাস্থ্য বিভাগের বিধি বিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলার গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ধরণের ক্লিনিক। এর মধ্যে শিবগঞ্জ উপজেলায় মোট ২০টি, গোমস্তাপুরে ৬টি, নাচোলে ৪টি ও ভোলাহাটে ১টি ক্লিনিক রয়েছে। এসব ক্লিনিকের মালিকদের সাথে নিয়ম বিধি বিধান ও ক্লিনিকের সুষ্ঠ পরিবেশের ক্ষেত্রে জানতে চাইলে তারা বলেন, সঠিক কোন জবাব দিতে পারেন নি। এদিকে এসব ক্লিনিকগুলোতে লোক নিয়োগ করা হয়েছে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের উন্নত চিকিৎসা দেয়ার নাম করে ধরে নিয়ে আসে ক্লিনিকে। এব্যাপারে শিবগঞ্জ ও গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত কয়েকজন ডাক্তারদের সাথে যোগাযোগ করা হলে, হাসপাতাল থেকে রোগীদের ধরে নিয়ে ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ স্বীকার করেন। অন্যদিকে হাসপাতালগুলোর ভিন্ন কর্মচারীদের কাছ থেকে জানাগেছে, ক্লিনিক থেকে আসা রোগী ধরা মহিলাদের সরাসরি সহায়তা করে থাকেন সংশ্লিষ্ট ডাক্তার, নার্স ও এক শ্রেণির কর্মচারী। ইতিপূর্বে শিবগঞ্জ হাসপাতালের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (বর্তমানে সহকারী পরিচালক) ডা. তরিৎ কুমার রোগী নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি বন্ধ করার চেষ্টা করেও সফল হতে পারেননি বলে তিনি সত্যতা স্বীকার করেন।