বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
উপমহাদেশের প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও সমাজকর্মী মহাশ্বেতা দেবী মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার ‘হাজার চুরাশির মা’ খ্যাত এই লেখকের মৃত্যুর সময়ে তার বয়স হয়েছিল ৯০।
গত ২২ মে ফুসফুসে সংক্রমণ নিয়ে কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে ভর্তি করা হয়েছিলেন। মহাশ্বেতা দেবী কিডনি ও ফুসফুসের জটিলতায় ভুগছিলেন।
বামপন্থী লেখক হিসেবে পরিচিত মহাশ্বেতা দেবীর লেখালেখির পাশাপাশি আদিবাসীদের সমাজ মান উন্নয়নে নিরলস কাজ করেছেন। বিশেষ করে লোধা ও শবরদের জীবন মান উন্নয়নে তিনি দীর্ঘ দিন ধরে লড়াই করে গিয়েছেন। প্রায় এককভাবেই তিনি এই লড়াই করেছেন। প্রখ্যাত কবি মণীশ ঘটকের (যুবনাশ্ব) এই কন্যার জন্ম ১৯২৬ সালে ঢাকায়। তাঁর পিতা মনীশ ঘটক ছিলেন কল্লোল যুগের প্রখ্যাত সাহিত্যিক এবং তাঁর চাচা ছিলেন বিখ্যাত চিত্রপরিচালক ঋত্বিক ঘটক। তিনি ঢাকাতেই লেখাপড়া করেন। তবে ১৯৪৭ সালে দেশবিভাগের পর ভারতে চলে যান।
মহাশ্বেতা দেবী শিক্ষালাভের জন্য শান্তিনিকেতনে ভর্তি হন । তিনি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন । পরে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এম এ ডিগ্রী লাভ করেন। প্রখ্যাত নাট্যকার বিজন ভট্টাচার্যকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। ঝাঁসির রাণী লক্ষীবাইকে নিয়ে প্রথম লিখে সকলের নজরে আসেন। এরপরে তিনি অসংখ্য গল্প উপন্যাস লিখেছেন।
সমাজের প্রত্যন্ত মানুষের জীবন ও নকশাল আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে লেখা এই উপন্যাসগুলি বেশ সাড়া ফেলেছিল। তার লেখা ‘অরণ্যের অধিকার’, ‘হাজার চুরাশির মা’, ‘অগ্নিগর্ভ’ প্রভৃতি উপন্যাসের জন্য তিনি সমাদৃত হয়েছে সাহিত্যিক মহলে। তার লেখা অসংখ্য ভাষায় অনূদিত হয়েছে। র্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার থেকে শুরু করে জ্ঞানপীঠ, সাহিত্য একাডেমি প্রবর্তিত বহু পুরস্কার পেয়েছেন। পেয়েছেন পদ্মশ্রী ও পদ্ম বিভূষণের মতো জাতীয় সম্মানও। এছাড়া ২০০৭ সালে পেয়েছিলেন সার্ক সাহিত্য পুরস্কার।