বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় ২০ জিম্মির মধ্যে ৭ জনকে গুলি করে
ও কুপিয়ে এবং বাকিদের শুধু কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে জানিয়েছেন ময়নাতদন্তে নিয়োজিত চিকিৎসক সোহেল মাহমুদ।
বুধবার রাজধানীতে নিজ কার্যালয়ে গুলশান হামলায় নিহতদের ময়নাতদন্তের বিষয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
এ সময় তিনি আরো বলেন, জঙ্গিরা মেয়েদের ওপরও চড়াও হয়েছিল।
হলি আর্টিজানে হামলাকারী জঙ্গিরা কোনো বিশেষ ড্রাগ নিয়েছিল কিনা, তা জানতে মৃতদেহ থেকে সংগ্রহ করা নমুনার ভিসেরা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এরইমধ্যে এ নমুনা মহাখালী রাসায়নিক পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান ময়নাতদন্তকারী কর্মকর্তা।
ঢাকা মেডিকেলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আদালতের মাধ্যমে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট হত্যাকারীদের ডোপ টেস্টের জন্য নমুনা সংরক্ষণের নোটিশ পাঠিয়েছে। আর আগামী সপ্তাহেই নিহতদের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পুলিশকে দেয়া হবে।
জঙ্গিরা তাদের হাতে জিম্মিদের মধ্যে ২০ জনকে হত্যা করে। এদের মধ্যে ৭ জনকে মাথার পেছন থেকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। আর বাকিদের চাপাতি দিয়ে ঘার ও গলায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
শনিবার ভোরে জঙ্গিদের ধরতে হলি আর্টিজানে অভিযান চালায় সেনা, নৌবাহিনী, বিমান, পুলিশ ও র্যাব কমান্ডোরা। এতে নিহত হয় ৫ জঙ্গিসহ ৬ জন।
নিহত জঙ্গিদের প্রত্যেকের শরীরে গুলির চিহ্ন রয়েছে উল্লেখ করে ডা. সোহেল মাহমুদ আরো জানান, জঙ্গিদের তিন জন বোমার আঘাতে মারা গেছে।
১৭ বিদেশি ও তিন বাংলাদেশিসহ ২০ জনকে ৫ জনের দ্বারা হত্যার ঘটনা স্বাভাবিক বিষয় না— নিহত জঙ্গিরা কোনো ধরনের ড্রাগ নিয়েছিল কিনা তা খতিয়ে দেখতে ভিসেরা পরিক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া নিহতদের সবার ডিএনএ সংগ্রহের পাশাপাশি জিম্মি নারীদের সেক্সুয়াল অ্যাসাল্ট করা হয়েছে কিনা তা জানতে হাই ভ্যাজিনাল সংগ্রহ করা হয়েছে বলেও জানান এ ময়নাতদন্তকারী কর্মকর্তা।
এছাড়া জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টেগেশন ও গুজরাটের একটি প্রতিষ্ঠান ভিসেরা রিপোর্টের জন্য জঙ্গিদের নমুনা চেয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১ জুলাই (শুক্রবার) রাত পৌনে ৯টার দিকে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হত্যাযজ্ঞ চালায় জঙ্গিরা। ১২ ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর জিম্মি সংকটের রক্তাক্ত অবসান ঘটে শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সেনা নেতৃত্বাধীন সমন্বিত অভিযানের মাধ্যমে। অভিযান শেষে ঘটনাস্থল থেকে ২০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়, যাদের জঙ্গিরা আগেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করেছিল।
এ ২০ জনের মধ্যে ১৭ জন বিদেশি নাগরিক ও ৩ জন বাংলাদেশি। উদ্ধার অভিযানে নিহত হয় আরও ছয় জন। এর আগে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রথম দফা উদ্ধার অভিযান চালাতে গিয়ে নিহত হন পুলিশের দুই কর্মকর্তা। আহত হন কমপক্ষে ৪০ জন।