বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
৩৩৩ তে কল করে খাদ্য সহায়তা চেয়ে বিপাকে পড়েছে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কাশীপুর ইউনিয়নের দেওভোগ নাগবাড়ী এলাকার অসুস্থ্য বৃদ্ধ ফরিদ আহমেদের পরিবার। ভয় আর সাজার হাত থেকে বাঁচতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে স্বজনদের স্বর্ণালংকার বন্ধক রেখে সুদে টাকা নিয়ে খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন তিনি। সব যন্ত্রনা থেকে বাঁচতে চেয়েছিলেন আত্মহত্যা করতেও। এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়েছে দেশ জুড়ে। এদিকে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কাশীপুর ইউনিয়নের দেওভোগ নাগবাড়ী এলাকায় থেকে গত ১৯ মে সরকারি খাদ্য সহায়তা চেয়ে ৩৩৩ কল করেন ফরিদ আহমেদ। পরের দিন উপজেলা প্রশাসনের লোকজন গিয়ে দেখেন তিনি চারতলা বাড়িতে বাস করেন। খবর পেয়ে ছুটে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে এসে অযথা কল করায় ভুক্তভোগীকে শাস্তি স্বরুপ এক শ’জনকে খাদ্য সহায়তা দেয়ার নির্দেশ দেন। পরে একাধিকবার ভয় দেখান স্থানীয় ইউপি মেম্বার আয়ুইব আলী। সেই ভয়ে সব কিছু মেনে নিলেও খাদ্য সহায়তা দিতে চড়া সুদে টাকা নিতে হয়েছে ফরিদ আহমেদকে।
তবে সদর উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার (ইউএনও) আরিফা জহুরা দাবি করেন, হটলাইনে কল করে সাহায্য চাওয়া ব্যক্তি খাদ্য সহায়তা পাওয়ার উপযুক্ত কিনা তা স্থানীয় ইউপি সচিবের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করা হয়েছিল।
ফরিদ উদ্দিনের ওপর দায় চাপিয়ে সদর ইউএনও জানান, তিনি একশ’ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিতে স্বাভাবিকভাবেই রাজি হয়েছিলেন। বিষয়টি আমরা যাচাই-বাছাই করব। যদি তার অভিযোগ সত্য হয় তাহলে তিনি যে পরিমাণ টাকা খাদ্য সহায়তা করেছেন তার অর্থ ফিরিয়ে দেয়া হবে।’
স্থানীয় ইউপি মেম্বার আইয়ুব আলীও গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা তারা সাথে যোগাযোগ না করেই এমন বিতর্কিত সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বেধে দেয়া সময়ের মধ্যেই শনিবার এক শ’ জনকে খাদ্য সহায়তা দেয়ার সময়ে বিমর্ষ ছিলেন ফরিদ আহমেদ। গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নে তিনি জানান, ছোটখাটো একটি লোকাল পোশাক তৈরীর কারখানা ছিলো তার। করোনার ভয়াল থাবায় তা গুটিয়ে যাওয়ায় এখন কাজ করেন অন্যের কারখানায়। পারিবারিকভাবে চারতলা বাড়ি থাকলেও মাত্র ৩টি রুমের মালিক তিনি। প্রতিবন্ধী এক ছেলে আর কলেজ পড়ুয়া মেয়ে নিয়ে কোনমতে দিন যাপন করেন। জরিমানার ভয়ে এরই মধ্যে একাধিকবার আত্মহত্যাও করতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে খরচকৃত টাকা ফিরে পাওয়ার আশ্বাসে স্থিতি ফিরেছে তার।
এদিকে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। ফিরিয়ে দেয়া হবে ক্ষতিগ্রস্ত ফরিদ আহমেদকে টাকা।
একজন অসহায় পরিবারকে নিয়ে সংশ্লিষ্ট এমন সিদ্ধান্তে বিষ্মিত সচেতন মহল। তারা বলছেন, দ্রুত ফরিদ আহমেদের বন্ধক রাখা স্বর্ণালংকার ছাড়িয়ে এনে এবং এর সাথে জড়িতদে চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা প্রয়োজন।