বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
শ্রমিক অসন্তোষের কারনে সাময়িক ভাবে বন্ধ থাকা রপ্তানিমুখী দুটি শিল্প প্রতিষ্ঠান ক্যাডট্যাক্স ও অন্তিম গার্মেন্টস আগামী শনিবার থেকে খুলে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিষ্ঠান দুটি থেকে আনুমানিক সাড়ে ৭’শ অভিযুক্ত শ্রমিককে চাকুরিচ্যূত করে তাদের পাওনা বুঝিয়ে দেওয়া হবে। তবে মোতাবেল মনোয়ারা গার্মেন্টে শ্রমিক ও কারখানার মিড লেভেলের কর্মকর্তাদের মাঝে সমস্যার কারনে সৃষ্ট অসন্তোষের বিষয়ে আলোচনা সাপেক্ষে দ্রুত চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হবে।
নীট গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বিকেএমইএ সভাপতি সেলিম ওসমানের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার ২১ জুলাই দুপুরে বিকেএমইএ এর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমন্বিত সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মালিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সমঝোতার ভিত্তিতে মানবিক বিবেচনায় চাকুরিচ্যূত করা শ্রমিকদের শ্রম আইনের ধারার উর্ধে এসে তাদের পাওনা পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। বিকেএমইএ নেতৃবৃন্দ, গার্মেন্টস শ্রমিক নেতৃবৃন্দ, শিল্প উদ্যোক্তা সহ শিল্প পুলিশ ও জেলা পুলিশের উপস্থিতিতে সমন্বিত সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এবং নীট শিল্প রক্ষার স্বার্থে মালিক ও শ্রমিক উভয় পক্ষের ক্ষেত্রে কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।
সর্ব সম্মতিক্রমে গৃহিত সিদ্ধান্ত জানিয়ে সেলিম ওসমান বলেন, এখন থেকে মালিক পক্ষ যখন তখন তাদের কারখানা ১৩(১) ধারায় বন্ধ করতে পারবেন না। কোন কারখানায় যে কোন ধরনের সমস্যা দেখা দিলে প্রথমেই ওই কারখানা ৩ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করতে হবে। এই ৩ দিনের মধ্যে মালিক ও শ্রমিক এবং শিল্প পুলিশকে নিয়ে বিকেএমইএ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবে। যদি কোন কারনে সমস্যার সমাধান না হয় তাহলে পরবর্তীতে ১৩(১) ধারায় ব্যবস্থা গ্রহন করা যাবে। তবে যদি কোন ঘটনায় শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয় তাহলে মামলা চলাকালীন সময় অভিযুক্ত শ্রমিকেরা কোন প্রকার আর্থিক সুবিধা পাবেন না এবং শেষ পর্যন্ত তিনি যদি দোষী প্রমানিত হয় তাহলে ওই সকল শ্রমিকেরা অন্য কোন কারাখানায় মাইগ্রেশন করে চাকরির সুযোগ নিতে পারবেন না। সমস্যার কারনে যে ৩ দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হবে মালিক পক্ষ ওই ৩ দিনের বেতন প্রদান করতে বাধ্য থাকবেন।
অন্যদিকে সেলিম ওসমানের এমন কঠোর অবস্থানের কারনের সভায় উপস্থিত নেতৃবৃন্দ সকলেই দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা বিবেচনা করে এবং নীট ওয়্যার শিল্প রক্ষার স্বার্থে সাধারণ ছুটি ও সমঝোতার চেষ্টা চলাকালে কোন অবস্থায়, বিকেএমইএ কার্যালয় ঘেরাও, শহীদ মিনারে বিক্ষোভ সমাবেশ বা রাস্তায় নেমে মিছিল করবেন না বলে প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন।
এদিকে সভার শুরুতে বিকেএমইএ নেতৃবৃন্দরা বিগত বছর গুলোতে নারায়ণগঞ্জে গার্মেন্টস সেক্টরে শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের বিকেএমইএ’কে সহযোগীতা পূর্ন কর্মকান্ডের কথা উল্লেখ করে তাদেরকে ধন্যবাদ সহ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি বর্তমান পরিস্থিতিতে মালিক শ্রমিক সম্মিলিত ভাবে কাজ করে সমস্যা উত্তরনের ব্যাপারে সহযোগীতা কামনা করেন।
যৌথ সভায় উপস্থিত ছিলেন বিকেএমইএ এর দ্বিতীয় সহ সভাপতি মনসুর আহম্মেদ, সহ সভাপতি(অর্থ) জিএম ফারুক, সাবেক সহ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, পরিচালক হুমায়ুন কবির খান শিল্পী, মোস্তফা জামাল পাশা, মোর্শেদ সারোয়ার সোহেল, শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন, সহকারী পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র এর কেন্দ্রীয় সভাপতি অ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষ, ইউনাইটেড ফেডারেশন অব গার্মেন্টস ওয়ার্কাস এর কার্যকরী সভাপতি কাউসার আহম্মেদ পলাশ, জেলা কমিটির সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সেন্টু, সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন রাজু, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি আবু নাঈম খান বিপ্লব, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গির হোসেন গোলম, গার্মেন্টস ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি এম এ শাহিন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, সহ নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা, ফতুল্লা মডেল থানা, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ও রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং তাদের পক্ষে প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।