বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
আগামি একাদশ জাতীয় সাংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় নেৃতৃবৃন্দের আগমনে সরগরম হয়ে উঠেছে নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গন। নারায়ণগঞ্জের আওয়ামীলীগ ও বিএনপির সদস্য সংগ্রহ ফরম বিতরনকালে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে চাঙা হয়ে উঠছে দলগুলোর তৃনমূল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। এমনকি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ দলীয় সকল ভেদাভেদ ভূলে গিয়ে স্ব স্ব প্রার্থীদের বিজয়ী করার আহ্বান করেন। সে সাথে দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে তৃনমূলকে মূল্যায়নসহ সাধারন মানুষের দ্বারে দ্বারে নির্বাচনী প্রচারনার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।
সূত্রে জানা যায়, রোববার সকালে দুইনং রেল গেইটস্থ দলীয় কার্যালয়ে জেলা আওয়ামীলীগের নতুন সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ন সম্পাদক ডা. দিপু মনি ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান নওফেল। নতুন সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতি তৃনমূল আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করতে দেখা গেছে। জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের বিভিন্ন দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রত্যক্ষ করেন। ফরম বিতরন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. দিপু মনে বলেন, দলীয় কোন্দল-বিভেদ ভুলে নারায়ণগঞ্জের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। নারায়ণগঞ্জে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে হলে দলীয় কোন্দল ভুলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দীপু মণি বলেন, নৌকা কোন ব্যক্তির নয়, নৌকার মাঝি শেখ হাসিনা। দেশ বাঁচাতে দেশের মানুষ বাঁচাতে, আগামী এক বছর দলের মধ্যে কোন্দলের কোন স্থান দেওয়া যাবে না। ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নৌকা উপহার দিতে হবে। সারাবিশ্বে দেশকে প্রথম সারিতে বসাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। বিজ্ঞান, যোগাযোগ, শিক্ষা থেকে শুরু করে সব দিকেই সফলতার সাথে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। দিপু মনি দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় না থাকা অবস্থায় দেশ কেমন ছিল আর আজ দেশ কেমন অবস্থায় আছে সেটা সাধারণ মানুষকে বোঝাতে হবে। আগামী নির্বাচনে দল থেকে যাকে নৌকার প্রার্থী দেওয়া হবে তার পক্ষেই কাজ করার আহবান জানান সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী। জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এড. আবু হাসনাত শহীদ মো: বাদলের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি নাসিক মেয়র ডা.সেলিনা হায়াত আইভী, নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সাংসদ গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাংসদ হোসনে আরা বেগম বাবলী, সোনারগাও আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান কালাম, নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. আনিসুর রহমান দিপু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা তাঁতীলীগের সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েল, সিনিয়র সহ-সভাপতি দেওয়ান কামাল, যুগ্ম সম্পাদক শওকত ওসমান সরকার রিপন, জাগো হিন্দু পরিষদের জেলা সভাপতি কৃষ্ণ দাস কাজল প্রমুখ।
এদিকে গত শনিবার বিএনপির সদস্য সংগ্রহ অভিযান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফরম বিতরনকালে মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এ সরকার নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে ভয় পায়। কারণ তাদের জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা একদম তলানীতে এসে গেছে। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আংশিক আসনও পাবে না আওয়ামী লীগ। বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন, যতই মামলা হামলা করেন লাভ হবে না। এদেশের জনগণ বিএনপির সাথে ছিলো, আছে এবং থাকবে। অনেক নেতাকর্মীকে খুন ও গুম করেছেন তারও বিচার হবে। কোন ষড়যন্ত্র করতে নয়, বেগম খালেদা জিয়া স্বজনদের সাথে সাক্ষাত করতে লন্ডন গেছেন। জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন-বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এড. তৈমূর আলম খন্দকার, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, সহ-সভাপতি বদরুজ্জামান খসরু, আতাউর রহমান আঙ্গুর, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নান, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান রোজেল, মাসুকুল ইসলাম রাজীব প্রমুখ।
এদিকে ফরম বিতরন কার্য্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের পদচারনায় নারায়ণগঞ্জের ঝিমিয়ে থাকা রাজনীতি আবারো চাঙ্গা হচ্ছে। আর কেন্দ্রীয় নেতাদের পরদ চারনা আগামি একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচনী প্রচারনা বলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। আর কেন্দ্রীয় নেতাদের পদ চারনার ফলে নারায়ণগঞ্জের বড় দুটি রাজনৈতিক দলগুলোর তৃনমূল পর্যায় থেকে শুরু করে জেলার সিনিয়র রাজনীতিবীদরা সকল ভেদাভেদ ভূলে দলীয় স্বার্থ হাছিল করার জন্য রাজপথে থাকবেন বলেও ধারনা সচেতন মহলের।