নারায়ণগঞ্জ,বিজয় বার্তা ২৪
চেয়ারম্যান সেন্টু বিহীন কুতুবপুর বিএনপির ৩০ মে ! এ নিয়ে কয়েকদিন ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা চললেও কোন রকম অঘটন ছাড়াই সম্পন্ন হয়েছে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীর কর্মসূচী। বহিস্কৃত নেতা চেয়ারম্যান সেন্টুর ঘনিষ্টজনেরা উক্ত কর্মসূচীতে অংশ নিলেও তেমন আমেজ ছিল না বলে হতাশা ব্যক্ত করেছেন অনেকে। তারা আশাবাদী চেয়ারম্যান সেন্টুর বহিস্কারাদেশ বাতিল হলে কুতুবপুরের বিএনপিতে আবারো গতি ফিরে পাবে নেতাকর্মীরা। এ ব্যাপারে ভিন্ন মত প্রকাশ করে সেন্টুবিরোধী বিএনপির শাহ আলম পন্থি নেতৃবৃন্দের বক্তব্য হচ্ছে,যারা ব্যাক্তিস্বার্থে দলকে অস্বীকার করে তাদের আবারো ফিরিয়ে আনলে দলের শৃঙ্খলা আরো ভেঙ্গে পড়বে।
কিন্তু মনিরুল আলম সেন্টুকে দলে ফিরিয়ে নিতে বহিস্কারাদেশে নেতৃত্ব দেয়া তৈমুর আলম খন্দকারের আহবান নতূন মাত্রা যোগ করেছে। পাগলায় শ্রমিকদলের অনুষ্ঠানে তৈমূর বলেন, আমি ফতুল্লা থানা বিএনপির সহ-সভাপতি মনিরুল আলম সেন্টুর প্রতি দুর্বল। ফতুল্লা থানা বিএনপিতে সেন্টুর অনেক অবদান। তাই সেন্টুর বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে অনুরোধ জানাই। তবে সময়ই বলে দিতে পারে, কুতুবপুরের কুতুব বনে যাওয়া চেয়ারম্যান সেন্টু আর বিএনপি‘র অবস্থান কোথায় গিয়ে ঠেকবে।
সেন্টু সমর্থিত কুতুবপুর বিএনপির নেতাকর্মীদের মতে, ৩০ মে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদত বার্ষিকীর কর্মসূচীতে কুতুবপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টুর উপস্থিতি নেই এ কথা ভাবাও যায় না। কিন্তু এবারে এটাই বাস্তব! দলীয় নেতৃত্বের চেয়েও চেয়ারম্যানের চেয়ারের প্রতি লোভ প্রদর্শনের কারনেই দল থেকে বহিস্কার হওয়ায় তার অনুপস্থিতি তার সহকর্মীদের বিষাদের দিকে ঠেলে দিয়েছে। তারপরেও যাদের সহমর্মিতায় চেয়ারম্যানের পদটি পেতে সহজ হয়েছে তাদের প্রতি অনুগত থাকার প্রমান দিতেই তাকে অনেকদিনের চিরাচরিত অভ্যাস পরিহার করতে হযেছে এটাই সকলের ধারনা।
কারন কথিত রয়েছে যে, তার অনুপস্থিতিতে সাময়িক ঘাটতি ম্বাভাবিক মনে হলেও তার সহকর্মীদেরকেও কর্মসূচী থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেয়াটা অনেকে স্বাভাবিক মনে করছেন না। এ পরিস্থিতি প্রভাবশালী নেতা মনিরুল আলম সেন্টুকে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ার পাশাপাশি তার সহযোদ্ধাদের অনেকটাই অসহায় হয়ে পড়েছে।
অপরদিকে সেন্টু চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতির সুযোগকে কাজে লাগাতে পারছেন না মূলদলের নেতৃত্ব দেয়া শিল্পপতি শাহ আলম। নেতাকর্মীরা জানায়,কুতুবপুর এলাকায় ৩০মে কর্মসূচী পালনের পুরো স্পটে অংশ নিয়ে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান শক্ত করার সুযোগ ছিল শাহ আলম ও তার অনুসারীদের। কিন্তু শাহ আলম শুধুমাত্র ফতুল্লা থেকে তার রাজধানীর বাসভবনে যাওযার নির্ধারিত রুটে অবস্থান নেয়া স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা নজরুল ইসলাম,শ্রমিকদল নেতা মন্টু মেম্বারের স্পটের কর্মসূচীতে কোনরকমে অংশ নিয়ে চলে গেছেন। কুতুবপুরের ভেতরে সেন্টু অধ্যুষিত এলাকায় প্রবেশের সাহস করেননি। এ নিয়েও নেতাকর্মীদের মাঝে ছিল আলোচনা-সমালোচনা।
তবে এবারে ফতুল্লা অঞ্চলে ৩০ মে কর্মসূচীতে মাঠ দাবড়িযে বেড়ালেন যুবদল থেকে আসা শ্রমিকদলের নেতা তুষার আহমেদ মিঠু। আর কেন্দ্রীয় নেতাসহ জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে কর্মসূচী পালন করেছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের যুগ্ম আহবায়ক রিয়াদ মোঃ চৌধুরী। এ ছাড়াও ফতুল্লা রেলস্টেশন এলাকায় বিএনপি নেতা সাবেক ছাত্রদল নেতা রুহুল আমিন শিকদার, তক্কারমাঠ এলাকায় শাহ আলম সমর্থিত শ্রমিকদল নেতা মন্টু মেম্বার,৮নং ওয়ার্ডের সেলিম মুন্সী, স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা নজরুল ইসলাম, পেশাজীবি দলনেতা অলিউল্লাহ খোকন,দক্ষিন সেহাচর এলাকায় বিএনপি মনির হোসেন,হক স্টীল এলাকায় হাজী আবুল হোসেন,মুসলিমের নেতৃত্বে এবং পাগলা তালতলা এলাকায় শ্রমিকদলের আয়োজনে ব্যাপক কর্মসূচী পালিত হয়। এ সকল কর্মসূচীতে জেলা বিএনপির সভাপতি এডঃ তৈমুর আলম খন্দকার,সহসভাপতি শাহ আলম,থানা বিএনপির সহসভাপতি এম এ আকবর,সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার হুমায়ুন কবির, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম পটু, ঢাকা বিভাগীয়ও স্বেচ্ছাসেবক দলের দায়িত্ব প্রাপ্ত সহ-সভাপতি মারুফ আল হাসান, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আওলাদ হোসেন উজ্জল, নারায়ণগঞ্জ মহানগরের ছাত্রদলের আহবায়ক মনিরুল ইসলাম স্বজল , নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্র দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ার সাদাত সায়েম,কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি লুৎফর রহমান খোকা,সাধারন সম্পাদক আবু তাহের মোল্লাসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
উল্লেখ্য,গত ইউপি নির্বাচনে দলের বিপক্ষে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়া এবং ক্ষমতাসীন দলের সাথে আতাতের অভিযোগে ফতুল্লা থানা বিএনপির সিনিযর সহসভাপতিসহ দলের প্রাথমিক পদ থেকে বহিস্কার করে সেন্টুসহ আরো ৫জনকে। এরমধ্যে নির্বাচনের পরে ৫জনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হলেও সেন্টুর বহিস্কারাদেশ এখনো বহাল রয়েছে।