বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
স্কুল শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছনা করার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য এ কে এম সেলিম ওসমানসহ দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানীর ধার্য্যকৃত দিন হচ্ছে আজ। গত ৪ জুলাই ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মোস্তাফিজুর রহমান ৬ আগষ্ট সেলিম ওসমানের বিরুদ্ধে চার্জগঠন শুনানীর দিন ধার্য্য করেছিলেন। ঐদিন আসামী সেলিম ওসমান এবং অপর আসামী সেলিম ওসমানের সহযোগী অপু আদালতে উপস্থিত ছিলেন। সেদিন সেলিম ওসমানের পক্ষে তিন মাস পর অভিযোগ গঠনের দিন ধার্য্যরে আবেদন করা হয়। পরে আদালত এক মাসের সময় মঞ্জুর করে ৬ আগস্ট অভিযোগ গঠনের শুনানীর দিন ধার্য করেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবির বাবুল জানিয়েছিলেন, সেলিম ওসমান মামলাটিতে জামিনে থাকলেও অপর আসামী অপু পলাতক ছিলেন। তিনি গত ৩১ মে মামলাটিতে আত্মসমর্পণ করে জামিন গ্রহণ করেন। ফলে মামলাটি বিচার শুরুর জন্য প্রস্তুত হওয়ায় ৬ আগস্ট চার্জগঠনের শুনানীর দিন ধার্য করেছেন আদালত।
এরআগে শিক্ষক শ্যামল কান্তি লাঞ্ছনা মামলায় জামিন পান নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ এ কে এম সেলিম ওসমান। পাশাপাশি এই মামলায় সেলিম ওসমানের বিচারকার্য চলবে কিনা সেই বিষয়ে আগামী ৪ জুলাই সিদ্ধান্ত গ্রহণের দিন ধার্য্য করেছিলেন আদালত।
গত ২৩ মে ঢাকার মুখ্য মহানগর বিচারিক হাকিম জেসমিন আরা সেলিম ওসমানের জামিন মঞ্জুর করে এ মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানীর জন্য ৪ জুলাই দিন ধার্য্য করেছিলেন।
প্রসঙ্গত, ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে গত বছরের ১৩ মে নারায়ণগঞ্জের পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে তারই স্কুলের প্রাঙ্গণে লাঞ্ছিত করা হয়।
ওই ঘটনার ভিডিওতে প্রধান শিক্ষককে কান ধরে উঠ-বসের নির্দেশ দিতে দেখা যায় স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানকে। বিষয়টি প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। কিন্তু ওই ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি হলে ‘লাঞ্ছনার প্রমাণ পাওয়া যায়নি’ বলে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। পুলিশ প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে হাইকোর্ট এরপর পুরো ঘটনার বিচারিক তদন্তের নির্দেশ দেয়। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম শেখ হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি হয় এবং ওই কমিটি গত ১৯ জানুয়ারী হাইকোর্টে তাদের প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর ২২ জানুয়ারী বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ জে বি এম হাসানের হাই কোর্ট বেঞ্চ ওই তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে জিডিসহ বিচারিক নথিপত্র অবিলম্বে ঢাকায় পাঠাতে নির্দেশ দেয়। তারপর দোষীদের বিরুদ্ধে নালিশি মামলা করার জন্য জিডিসহ বিচারিক নথিপত্র গত ২৮ ফেব্রুয়ারী বিচারক জেসমিন আরার কাছে পৌঁছালে সেলিম ওসমান ও অপুকে তলব করেন বিচারক।