বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান৷ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তিনি নৌকার পক্ষেই আছেন জানিয়ে বললেন, ‘ এটা বঙ্গবন্ধুর নৌকা, শেখ হাসিনার নৌকা, ৪৯জন কর্মীর লাশের নৌকা, চন্দনের (মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি) দুই পায়ের বিনিময়ে পাওয়া নৌকা। প্রার্থী কে, তা কোনো বিষয় নয়৷ আমি নৌকার পক্ষে৷ ইনশাআল্লাহ খেলা হবে এবং সেই খেলায় নৌকাই জয়ী হবে।’
দুপুরে শহরের চাষাঢ়ায় একটি কমিউনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘ ভেবেছিলাম অনেক আনন্দ নিয়ে প্রেস কনফারেন্স করবো৷ কিন্তু এটা আমার জীবনের সবচেয়ে কষ্টের প্রেস কনফারেন্স৷ আমি চুপ ছিলাম। তবে এতে দেখলাম, বিভিন্ন জায়গা থেকে ইস্যু তৈরি করা হচ্ছে। দলের বাহির থেকেও করছে, দলের পাশাপাশি হেঁটেও করছে।’
বিএনপি- জামায়াত দ্বারা নিজেদের পরিবার নির্যাতিত হয়েছে জানিয়ে এই সাংসদ আরো বলেন, ‘বিএনপি- জামায়াতের কারণে আমরা বাড়িতে থাকতে পারিনি৷ আমাদের বাড়ি ঐতিহ্যবাহী বায়তুল আমান জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিলো। আমার মেজো ভাই সেলিম ওসমানের খামারের গরুগুলোর দুধের বান কেটে দিয়েছিলো ওইসব সন্ত্রাসীরা৷ এরকম দুঃখ আওয়ামী লীগের ৯৯ শতাংশ প্রকৃত নেতাকর্মীর মনে আছে। কিন্তু ১ শতাংশ হাইব্রিড, নব্য লীগার সব নষ্ট করে দিচ্ছে।’
নারায়ণগঞ্জে এসে কেন্দ্রীয় নেতাদের বহুল আলোচিত বক্তব্যের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শামীম ওসমান বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে কিছু লোক আছে যারা ইলেকশনটা মাঠেঘাটে না করে পার্টি অফিসে বসে করতে পছন্দ করেন। তাদেরকে দেখা যায়, নিয়মিতই নেতাদের কানে কানে ফিসফিস করেন৷ তারা চিন্তায় থাকেন, কখন কার কমিটি খেয়ে ফেলা যায়, সামনের কমিটিতে কীভাবে রাখা যায়।’
মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর হেদায়েত চেয়ে সাংসদ বলেন, ‘মানুষের কাছে মাফ চাওয়া তো কোনো ব্যাপারই না৷ দোয়া করি, তিনি যেন আল্লাহর কাছে মাফ চান আর আল্লাহ যেন তাকে হেদায়েত করেন।’
শামীম ওসমান অভিযোগ করেন, একটি সংগঠনের ব্যানারে আইভীর পক্ষে লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে, অথচ সেখানে নৌকা প্রতীকের ছবি নেই৷ অন্যদিকে লিপস্টিক দেওয়া কিছু নাস্তিক লোক বলে বেড়াচ্ছেন, নৌকা না থাকলে ভালো হতো।
নিজের গডফাদার উপাধি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কারো যদি ইচ্ছে হয়, একদিন ফাদার ডেকে তার পরেরদিন ব্রাদার ডেকে এরপরের দিন গডফাদার ডাকতে, তাহলে তিনি তা ডাকতেই পারেন৷ কিন্তু তিনি কেন এসব ডাকেন, সেই প্রশ্নের উত্তর তিনিই দিতে পারবেন৷
বহুল আলোচিত ওই সংবাদ সম্মেলনে ছিল নেতাকর্মীদের উপচেপড়া ভিড়৷ এসময় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি চন্দন শীল, সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, ব্যবসায়ী নেতা আলী হায়দার খান কাজল, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জুয়েল হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শেখ সাফায়েত আলম সানি সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সম্মেলন চলাকালে হলরুমের বাহিরে নেতাকর্মী ও উৎসুক জনতার ব্যাপক ভিড় লক্ষ করা যায়।