বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, ‘সরকার গঠনের সময় বলেছি, আমরা জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করব। আমাদের চেষ্টা মানুষের কল্যাণে কাজ করা, দেশের উন্নয়নে কাজ করা।’
বুধবার সকালে সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ নির্দেশ দেন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু ক্ষমতা লাভের জন্য নয়, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে হত্যা করতে স্বাধীনতাবিরোধীরা ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করেছিল। বঙ্গবন্ধু সব সময় জনগণের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করেছেন। তার কারণে আজ আমরা স্বাধীন দেশ পেয়েছি। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের স্বীকৃতি লাভ করা সম্ভব হয়েছিল তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের জন্য। তার স্বাধীনচেতা মনোভাবের কারণে যুদ্ধ বিজয়ের মাত্র তিন মাস পর ভারতের সেনাবাহিনী দেশ ছেড়ে চলে যায়।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে দুঃখী মানুষের জন্য আমার বাবা-মা জীবন দিয়েছে তাদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য আমি কাজ করে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘রক্ত দিলে কোনো ক্ষতি হয় না। রক্ত দিলে একজন মুমূর্ষু রোগীর জীবন বাঁচবে। বয়স বেড়ে যাওয়ায় এখন আমি রক্ত দিতে পারি না। ক্ষমতা থাকলে এখনো আমি রক্ত দিতে প্রস্তুত।’
সরকারি কর্মচারীদের সর্বোচ্চ আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার মাধ্যমেই তার এবং ৩০ লাখ শহীদের রক্তের ঋণ শোধ করতে হবে।’
জনগণের সেবা করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মানুষের সেবার মতো শান্তি দুনিয়ায় আর কিছুতে নেই। কোনোদিন গরিব-দুঃখীর ওপর অত্যাচার করবেন না।’
প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার একটি ভাষণের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘সমস্ত সরকারি কর্মচারীকেই আমি অনুরোধ করি, যাদের অর্থে আমাদের সংসার চলে তাদের সেবা করুন। যাদের জন্য, যাদের অর্থে আজকে আমরা চলছি, তাদের যেন কষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। যারা অন্যায় করবে আপনারা তাদের অবশ্যই কাঠোর হস্তে দমন করবেন। কিন্তু সাবধান, একটি নিরাপরাধ লোকের ওপরও যেন অত্যাচার না হয়, তাতে আল্লাহর আরশ পর্যন্ত কেঁপে উঠবে। আপনারা সেই দিকে খেয়াল রাখবেন। আপনারা যদি অত্যাচার করেন, তাহলে আমাকেও সেজন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। কারণ, আমি আপনাদের প্রধানমন্ত্রী, আমি আপনাদের নেতা। আমারও সেখানে দায়িত্ব রয়েছে। আমাদের প্রত্যেকটি কাজের দায়িত্ব শেষ পর্যন্ত আমার ঘাড়ে চাপে, আমার সহকর্মীদের ঘাড়ে চাপে। এজন্য আপনাদের কাছে আমার আবেদন রইল, আমার অনুরোধ রইল, আমার আদেশ রইল- আপনারা মানুষের সেবা করুন। একটা গরিব যদি হাত তুলে দোয়া করে, আল্লাহ সেটা কবুল করে নেন। এজন্য কোনোদিন কোনো গরিব-দুঃখীর ওপর অত্যাচার যেন হয়, যদি হয় তাহলে আমাদের স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে।’
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এবং স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন।
উদ্বোধনী পর্ব শেষে প্রধানমন্ত্রী রক্তদান কর্মসূচি ঘুরে দেখেন এবং রক্তদাতাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।