নারায়ণগঞ্জ,বিজয় বার্তা ২৪
নারায়ণগঞ্জ-৫(শহর-বন্দর) আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান বলেছেন, আমি খুব ভাগ্যমান কারন আল্লাহ আমাকে বন্দরের উন্নয়ন করার সুযোগ দিয়েছে। আমি দেখতে পাচ্ছি শিল্পায়ানের জন্য সারাদেশে বন্দর সব থেকে শ্রেষ্ঠ জায়গা। বন্দরে একটি নয় দুটি আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠবে। একটি লাঙ্গলবন্দে আরেকটি মদনগঞ্জের শান্তিরচরে। ইতোমধ্যে সরকার শান্তিরচরে পর্যটন কেন্দ্রের জন্য ১০০ এক জমি বরাদ্দ দিয়েছেন। আর আজকে লাঙ্গলবন্দের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ১২৭ কোটি টাকা প্রি-একনেকে অনুমোদন দিয়েছেন যেটি একনেকে অনুমোদন হবে। মাত্র ১ বছর অপেক্ষা করুন আপনার হাতিরঝিল নয় হাতিরঝিলের থেকেও ভাল কিছু এই ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে লাঙ্গলবন্দে দেখতে পাবেন। এখানে বিদেশীদের থাকার জন্য উন্নত মানের হোটেল হবে। লাঙ্গলবন্দ শুধু হিন্দুদের তীর্থস্থানই নয়। এটি সব মানুষের। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বছরে মাত্র একদিন পাপ মোচনের জন্য উৎসব করতে আসবে। আর আমরা নারায়নগঞ্জের মানুষ সারা ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে বুক ভরে নি:শ্বাস নিবো।
বুধবার ১৩ এপ্রিল রাত সাড়ে ৭টায় মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দে পূণ্য স্নানের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে গত বছর লাঙ্গলবন্দ তীর্থ স্নানে পদদলিত হয়ে নিহত হওয়ার ব্যক্তিদের আত্মার শান্তি কামনায় এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানও তার বক্তব্যে নিহত ব্যক্তিদের আত্মার শান্তি কামনা করেন। সেই সাথে তিনি বলেন একটি গুজবের মধ্য দিয়ে ঘটনাটি ঘটেছে। সে সময় নিহতদের লাশ বাড়িতে পাঠানোর জন্য জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান মিঞা সহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা কঠোর পরিশ্রম করে ছিলেন।
জেলা প্রশাসকের প্রশংসা করে সেলিম ওসমান বলেন, গত বছরের ঘটনার পর জেলা প্রশাসকের সাথে লাঙ্গলবন্দের স্থানী উন্নয়ন ও দূর্ঘটনা রোধে দীর্ঘ সময় আলোচনা করি। আলোচনায় আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে একটি প্রস্তাবনা জমা দেই। আমাদের প্রধানমন্ত্রী সেই প্রস্তাবনা মোতাবেক লাঙ্গলবন্দকে একটি আর্ন্তজাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার কাজ হাতে নিয়েছেন। তারাই ধারাবাহিকতায় গত এক বছর বন্দর ও সোনারগাঁওয়ের নির্বার্হী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক সহ স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি সহ স্থানীয়রা ব্যাপকভাবে সহযোগীতা করেছেন। যার ফলপ্রশূতে আজ লাঙ্গলবন্দের উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা সম্পূর্ন কাজ শেষ করতে পারিনি। আমাদের একটি কারনে পিছিয়ে পড়তে হয়েছে আর তা হলো রাস্তার দুইপাশে অবৈধ দোকান পাট।
অবৈধ দখলদারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নদের দুইপাড়ের জায়গা নদের আর রাস্তার দুইপাশের জায়গা রাস্তার। এখানে কোন ব্যক্তি দখল করতে পারবে না। যদি কেউ দখল করার চেষ্টা করেন তাহলে বন্দরের মানুষ একত্রিত হয়ে তাদের প্রতিহত করবে।
এফবিসিআই এর পরিচালক লাঙ্গলবন্দে একটি স্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের দাবি জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে সেলিম ওসমান বলেন অবশ্যই লাঙ্গলবন্দে একটি স্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ির প্রয়োজন রয়েছে। এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ রাখছি।
সেলিম ওসমান বলেন, বন্দরের মানুষ প্রমান করে দিয়েছেন তারা রাজনীতির থেকে বেশি ভালোবাসতে জানে। আজকে উৎসব নিয়ে কোন রাজনীতি হয়নি। আমি আহবান রেখেছিলাম উৎসবটি সুন্দর ভাবে আয়োজন ও সম্পন্ন করার জন্য আমার আহবানে বন্দরে আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, স্থানীয় মানুষ ও হিন্দু নেতারা যারা পিছিয়ে ছিলেন সবাই একত্রিত হয়েছেন। সবাই মিলে কাজ করে প্রমান করে দিয়েছেন মানুষ মানুষের জন্য। একত্রিত ভাবে কাজ করলে অনেক অসম্ভব কাজকে সম্ভব করা যায়।
এর আগে সেলিম ওসমান বিকেল ৫টায় লাঙ্গলবন্দে ঘিয়ে পৌছান। পরে তিনি লাঙ্গলবন্দের পুরো ৩ কিলোমিটার এলাকা ঘুরে দেখেন। তিনি প্রতিটি ¯œান ঘাট পরিদর্শন করেন। ¯œান ঘাট, নদের জল, ¯œানের পর কাপড় পাল্টানোর ব্যবস্থা, বিভিন্ন সংস্থার সেবা ক্যাম্প, নিরাপত্ত ব্যবস্থা, পূর্ণ্যার্থীদের যাতায়াতের পথ সব বিষয়ে তদারকি করেন।
¯œান উদযাপন পরিষদের আহবায়ক সরোজ কুমার সাহার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক আনিসু রহমান মিঞা, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ঢাকা জেলার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাপস কুমার পাল।
আরো উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) গাউছুল আজম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিবুল আলম খান, জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের, মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, এফবিসিসিআইএর পরিচালন প্রবীর কুমার সাহা, বন্দর থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি এম এ রশিদ, বন্দর উপজেলার চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল, স্নান উদযাপন পরিষদের উপদেষ্টা পরিতোষ সাহা, শংকর সাহা, বাসুদেব চক্রবর্তী বন্দর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মিনারা নাজমীন, ভূমি কর্মকর্তা হোসেনে আরা, সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর আফজাল হোসেন, প্যানেল মেয়র শারমিন হাবিব বিন্নী, শহর যুব সংহতির সাংগঠনিক সম্পাদক রিপন ভাওয়াল, বন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন, মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, কলাগাছিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক সুজন সাহা, মহানগর শাখার সভাপতি দিপক সাহা, সাধারণ সম্পাদক শিপন সরকার শিখন, সদর জেলার সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত মন্ডল প্রমুখ।