বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
মঙ্গলবার কাশিপুর ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে দুঃস্থদের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করা হয়। কাশিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারন সম্পাদক মঈনুল ইসলাম রতন এর সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম ও সাবেক সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা সম নুরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে ইফতার সামগ্রী বিতরণের পূর্বে আলহাজ্ব মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট তুলে ধরে কাশিপুরবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন- জাতির বিভিন্ন ক্রান্তিলগ্নে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান জাতিকে সঠিক পথে চালানোর দায়িত্ব নিয়েছেন। দুর্দিনে তিনি জাতির পাশে এসে দাড়িয়েছেন। অসহায় অবস্থায় যখন মানুষ দুঃশ্চিন্তা আর দুর্দশাগ্রস্থ হয়ে দিশাহীন অবস্থায় তখন তিনি তাদের আশার আলো দেখিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর বিশ্বের দর্বারে বাংলাদেশকে একটি সম্মানজনক অবস্থায় অধিষ্ঠিত করেছেন, পরিচিত করেছেন। গলতন্ত্র যেখানে বিপন্ন সেখানে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান রাজনৈতিক একটি দল গঠন করে দেশের অগনিত গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষের মনে আশার আলো জ্বালিয়েছেন। এবং আজও যখন দেশে গণতন্ত্র বিপন্ন হয়, মানুষ যখন দিশেহারা তখন মানুষ আশার আলো দেখে বিএনপিকে দেখে। বিএনপিই একমাত্র পারে অগণতান্ত্রিক সরকারের পরিবর্তন ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে। গণতান্ত্রিকভাবে দেশকে পরিচালনা করতে। স্বৈরশাসন যখনই দেশে কায়েম হয় তখন বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামের দ্বারাই দেশের মানুষ গণতন্ত্র প্রত্যাশা করে। বর্তমানে দেশে যে বিরাজমান অবস্থা সরকার একটি অগণতান্ত্রিক সরকার। বলপূর্বক ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত একটি সরকার। এই সরকারের আমলে মানুষ আজকে অশ্বস্তিতে বাস করছে। মানুষ অত্যন্ত দুঃশ্চিন্তাগ্রস্থ। প্রতিদিন তারা চিন্তা করে আগামীকালটা কেমন কাটবে। বর্তমান সরকারের প্রতি দেশের মানুষের আর আস্থা নেই। তাই দেশের মানুষ এখন পরিবর্তন চায়। দেশে গণতান্ত্রিক একটি সরকার প্রতিষ্ঠা হোক এটাই এখন মানুষের প্রত্যাশা। বিশেষ করে তাদের সবচেয়ে বেশি প্রত্যাশা সেই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সুযোগ্য সহধর্মিনী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ঘিরে। তাই প্রত্যাশা পূরনে সবচাইতে আশাবাদী বিএনপির ওপরে। বেগম খালেদা জিয়া আপোষহীনভাবে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে মানুষের ভিতরে আস্থার একটি স্থান দখল করে নিয়েছেন। সেই আস্থার ওপরে ভিত্তি করে শুধু বিএনপির নেতাকর্মীরাই না অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও বিশ্বাস করে যে একমাত্র বিএনপিই পারবে বর্তমান ধারার রাজনীতি পরিবর্তন করতে।
এতে করে সকল দলেরই দেশে একটি রাজনীতি করার ক্ষেত্র তৈরী হবে। সেই কারনে আমি মনে করি, আমরা যারা বিএনপির নেতাকর্মী আমাদের কাঁধে একটি বড় দায়িত্ব আগামী দিনে আসছে। এদেশের মানুষকে আবারো স্বাধীনতার স্বাদ আস্বাদন করার জন্য গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রিয় ব্যাবস্থা উপহার দেওয়ার জন্য আজকে বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীকে সেই দায়িত্ব গ্রহন করতে হবে। আমাদেরকে প্রস্তুতি গ্রহন করতে হবে এদেশের মানুষের কল্যানে নিজেদেরকে আত্মনিয়োগ করার জন্য। এই সরকার যা দেষের মানুষকে দিতে পারেনাই যে কারনে মানুষ হতাশাগ্রস্থ যে কারনে মানুষ এই সরকারের পরিবর্তন চায় যে প্রত্যাশা নিয়ে মানুষ আজকে প্রহর গুনছে, সেই প্রত্যাশা পূরণে আমাদেরকে প্রস্তুতি গ্রহন করতে হবে। আগামী দিনে যে নির্বাচন আসবে ওই নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করে দেশের মানুষের আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে হবে এই বিএনপির নেতাকর্মীদেরকেই। তাই আমি মনে করি বিএনপির নেতাকর্মীদের আরো দায়িত্বশীল হতে হবে। বিএনপি নেতাকর্মীদের ত্যাগের মহীমায় উদ্ভাসিত হতে হবে। বিএনপির নেতাকর্মীদের মানুষকে ভালোবাসতে হবে, দেশকে ভালোবাসতে হবে। দেশ এবং জনগনের কল্যানে নিজেদেরকে আত্মনিয়োগ করতে হবে। বর্তমান সরকারের আমলে বিএনপির বিরুদ্ধে অনেক অন্যায় অত্যাচার হচ্ছে। অথচ এই ক্ষতাসীন সরকার আওয়ামী লীগের মধ্যেও অনেক ভালো নেতৃত্ব ও ভালো কর্মী আছে। কিন্তু তারা আজকে তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে পারছেনা। কারন যারা লুটপাটকারী যারা সন্ত্রাসী মাস্তান, মাসলম্যান তারাই এই সরকারের মূল খুঁটি। সেই কারনে ভালো মানুষ যারা তারা রাজনীতি করতে পারছেনা। আমরা মনে করি এই ভালো মানুষগুলো একদিন রাজনীতি করতে পারবে প্রচ্ছন্নভাবে। যেদিন বিএনপি ক্ষমতায় আসবে সেইদিন ইনশাআল্লাহ। বিএনপি তাদের মর্যাদা দিবে। বিএনপি তাদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দিবে। এছাড়া বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় সে ভালো মানুষগুলো রাজনীতি করার সুযোগ পাবেনা। তাদের দিনের পর দিন এই রাজনীতি থেকে আরো পশ্চাদপদ অবস্থায় চলে যেতে হবে। এই রাজনীতিবিদেরা আজকে মুখ লুকিয়ে কাঁদে। অন্তর ফেটে যায় কিন্তু বলতে পারেনা। এই আওয়ামী লীগেরও অনেক নেতৃবৃন্দ আছে মুখ লুকিয়ে কাঁদে। বলতে পারেনা নিজের দলের বিরুদ্ধে। কারন নিজের দলের এই সন্ত্রাসী চাঁদাবাজরা লুটপাট করে নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করে। সেই তাদের দ্বারা এই ভালো মানুষগুলো এমন নির্যাতিত তারা মুখ ফুটে বলতে পারেনা। এই অবস্থা দুর করতে পারবে একমাত্র বিএনপি। বিএনপি ক্ষমতায় আসলে তাদের সুযোগ সৃষ্টি হবে ভালোভাবে রাজনীতি করার। গণতান্ত্রিক ধারায় যার যার মত স্বাধীনভাবে প্রকাশ করার। বিএনপি তাদের সে মত প্রকাশ করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিবে ইনশাআল্লাহ। তাই আমি আশা করি আমরা এলাকার মধ্যে মানুষের মন জয় করার জন্য দলমত নির্বিশেষে সকলের জন্য ভালোবাসার একটি ক্ষেত্র তৈরী করবো। মানুষের সুখ-দুঃখের সাথী হবো। যেখানে মানুষের সুখ দেখবো সেখানে একাত্মতা ঘোষনা করবো। যেখানে দুঃখ দেখবো পাশে গিয়ে দাড়াবো। সমাজের মুরুব্বীদের যদি আমরা সম্মান করি তাহলে বিএনপির জনপ্রিয়তা আরো অনেক বৃদ্ধি পাবে। এই বিএনপি বাংলাদেশের মধ্যে সর্বোচ্চ জনপ্রিয় দল। আগামী দিনে এই জনপ্রিয়তা আরো অনেক বৃদ্ধি পাবে ইনশাআল্লাহ। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে সে আশা আকাঙ্খা বাস্তবায়িত হবে আমরা বিশ্বাস করি। এই কাশিপুর একটি বিএনপির ঘাটি এলাকা। সবসময় বিএনপি এখানে বিপুল ভোটে জয়লাভ করে আসছে। এই কাশিপুরের অনেক বিএনপি নেতাকর্মী নির্যাতিত। তাদের মধ্যে অনেকে জেলে আছেন। আমরা চাই এখানকার নেতৃবৃন্দরা এই ত্যাগের মহীমাটা জনগনের মাঝে বিলিয়ে দিবে। তাদেরকে আস্থায় নিয়ে আসবে। তাহলে আগামী দিনে এই বিএনপিকে তারা আরো ভালোবাসবে। আগামী সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনকে আমরা পূনরুদ্ধার করবো ইনশাআল্লাহ। ৫টি আসনে বিএনপির প্রার্থীদেরকে বিজয়ী করার জন্য যেখানে যার যতটুকু সুযোগ আসে সেটুকু নিয়ে আপনারা কাজ করবেন। যার যেখানে আত্মীয়স্বজন আছে পরিচিতজন আছে, যেখানে যাবেন যেখানে বসবেন আগামী নির্বাচনের কথা বলবেন এবং এই সরকারের পরিবর্তে একটি গণতান্ত্রিক সরকার যাতে উপহার দিতে পারেন বেগম খালেদা জিয়া এই বার্তাটা আপনারা সবাই জনগনের কাছে পৌছে দিবেন।
অনুষ্ঠানটিতে আরো উপস্থিত ছিলেন কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ মোল্লা, বিল্লাল হোসেন, ডা. এম এ লতিফ তুষার, গুলজার হোসেন, একেএম হেলাল উদ্দিন, মো. মোক্তার হোসেন, মো. সওকত আলী খান জুম্মন, বাবুল সরদার, মো. জাকির হোসেন, মো. লিটন চৌধুরী, মো. জাফর, মো. রফিক, আতাউর রহমান শামীম, মো. বাবু, সেন্টু আহাম্মদ, আরিফুর রহমান আরিফ, মো. রায়হান, পল্টু, মো. জামান, মো. শফি দেওয়ান, মো. কামাল হোসেন, মো. সোহেল হোসেন, মো. আমজাদ হোসেন, মো. মফিজ, মো. কালাম শিকদার, আলমগির হোসেন, সৈয়দ জাকির হোসেন, রয়েল চৌধুরী, নুর আলম, গাজী রফিক প্রমূখ।
এছাড়াও সিদ্ধিরগঞ্জ বিএনপির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন, আবদুল হালিম জুয়েল, মাজেদুল ইসলাম, মুহাম্মদ ইমাম হোসেন বাদল, আকবর হোসেন, আসমত আলী প্রমূখ।