নারায়ণগঞ্জ,বিজয় বার্তা ২৪
ঈদের পর ৭টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের নিয়ে বন্দরের সমরক্ষেত্র মাঠে পূর্ণমিলনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বন্দর নিয়ে ভবিষ্যত উন্নয়ন পরিকল্পনা ঘোষণা দিবেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান।
রোববার ৬ জুন সন্ধ্যা ৭টায় বন্দর খেয়াঘাট সংলগ্ন সুরুজ মিয়া টাওয়ারে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের আওতাধীন ৭টি ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সাথে মত বিনিময় কালে সেলিম ওসমান এ কথা বলেন।
মত বিনিময় সভায় তিনি বন্দর উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে সদ্য সমাপ্ত হওয়া নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী প্রার্থীদের অহংকার না করে জনগনের গোলামী করার আহবান জানান। সেই সাথে যারা নির্বাচনে প্রতিদ্ব›দ্ধীতা করে পরাজিত হয়েছেন তাদের সাথে নিয়েই এলাকার উন্নয়ন করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
চেয়ারম্যানদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন, আপনারা চেয়ারম্যান হয়েছেন এই বলে অহংকার করবেন তা চলবে না। অহংকার না করে জনগনের গোলামী করতে হবে। যারাই গোলামী করতে পারবে তারা আমার সাথে কাজ করতে পারবে। নির্বাচিতদের মনে রাখতে হবে এলাকার সবাই তাদের ভোট দেয়নি। যারা নির্বাচিত হতে পারেনি তাদেরকেও জনগন প্রত্যাশা নিয়ে ভোট দিয়েছেন। অতত্রব জনগনের প্রত্যাশার মূল্যায়ন করবে তাদেরকে সন্তোষ্ট করতে হবে। প্রত্যেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে অবশ্যই তার মেম্বারদের মূল্যায়ন করতে হবে। চেয়ারম্যানদের বুঝতে হবে মেম্বাররাও জনগনের ভোটে নির্বাচিত।
একটি পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের উদ্বৃত্তি দিয়ে তিনি বলেন, ১৩ তারিখের পর থেকে আমার হাত পা বেঁধে নদীতে ফেলা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি সংবাদ সম্মেলন করে বলে ছিলাম তদন্ত চলাকালীন সময় আমি সংসদে যাবো না। আমি বিকেএমইএ, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার ও এফবিসিসিআই এর পরিচালকের চেয়ারে বসবো না। আমি এখন পর্যন্ত সংসদে যাই নাই। কিন্তু ওই পত্রিকায় লিখেছে আমি ওয়াদা ভঙ্গ করেছি। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ইউপি নির্বাচন নিয়ে যেদিন থেকে একজন সংসদ সদস্যের নির্বাচনী এলাকায় যাওয়া নিষেধ করা হয়েছে আমি সেদিন থেকে ওই সকল এলাকায় যাই নি। আমি শনিবার গোগনগর ও আলীরটেক এলাকায় দুটি স্কুলে চেক প্রদান করেছি। যেটি আমার ব্যক্তিগত উন্নয়ন এর সাথে সংসদ সদস্যের কোন সম্পৃক্ততা নেই। তবে আমি আগামী ৯ জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করবো। আইন যদি দীর্ঘ সময় নেয় তাহলে তো আর উন্নয়ন বন্ধ করে রাখা যাবে না। ৯ তারিখের পর থেকে আমি আমার স্বাভাবিক কাজ পরিচালনা করবো। আমি সাংবাদিক ভাইদের প্রতি অনুরোধ রাখছি ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াবেন না।
বন্দর খেয়াঘাট সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি নিজ উদ্যোগে বন্দর খেয়াঘাট ফ্রি করে দিয়েছি। বছরে আমাকে ৩০ লাখ টাকা ইজারা দিচ্ছি। কিছু পরিবারকে নিজে অর্থ দিয়ে তাদের পূর্ণবাসন করে দিয়েছি। এই ঘাট দিয়ে প্রতিদিন যে পরিমান মানুষ পারাপার হয় তাদের বেশির ভাগই গার্মেন্ট শ্রমিক। যারা দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে অগ্রনী ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে নারায়ণগঞ্জকে কেন বঞ্চিত করা হচ্ছে। ঘাটে ফেরি দিবে, ঘাটের উন্নয়ন করে দিবে বলে হাতির পাচ পা দেখানো হচ্ছে। হাতির ৫ পা দেখানো বন্ধ করতে হবে। আমি যদি চলেও যাই বন্দরের মানুষ আর নদী পারাপার হতে টোল দিবে না।
মত বিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের সহ ধর্মিনী নাসরিন ওসমান, জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের, যুগ্ম আহবায়ক আফজাল হোসেন, মহানগর জাতীয় পার্টির আহবায়ক সানাউল্লাহ সানু, সদস্য সচিব আকরাম আলী শাহিন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু, ১৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না, ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন আহম্মেদ দুলাল প্রধান, ১৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফয়সাল সাগর, নারী কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র শারমিন হাবিব বিন্নী, ইফাত জাহান মায়া, খোদেজা খানম নাসরিন, কলাগাছিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান, গোগনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নওশেদ আলী, বন্দর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এহসান উদ্দিন, মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, মদনপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, ধামগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুম আহম্মেদ সহ প্রত্যেকটি ইউনিয়নের মেম্বার ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।