বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ঘুমন্ত স্ত্রী ও শিশু মেয়ের উপর এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গ্রেপ্তারকৃত মো. খোকন নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার গোপালদী পৌরসভার গায়েনপাড়া এলাকার মৃত আনসর আলীর ছেলে।
বৃহষ্পতিবার দুপুরে র্যাব-১১ এর আদমজীনগর কাযালয়ে সংস্থাটির উপ অধিনায়ক মেজর সানরিয়া চৌধুরী এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য নিশ্চিত করেন
র্যাব এই কর্মকর্তা জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার রায়পুর পুরান বাতাকান্দি এলাকা থেকে খোকন (৫৫) নামের অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে তার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীর মা সাহেদা বেগম বাদী হয়ে গত ৪ জুলাই এসিড অপরাধ দমন আইনে আড়াইহাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
তিনি আরো জানান, ভিকটিম মোর্শেদার ১ম স্বামীর সাথে তালাক হওয়ার পর তার কন্যা সন্তান অপর মারিয়াসহ মোর্শেদার মায়ের বাড়িতে বসবাস করত। ৫ মাস পূর্বে মোর্শেদার সাথে মামলার প্রধান অভিযুক্ত খোকনের ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক বিয়ে হয়। আসামীর এটি তৃতীয় বিয়ে। বিয়ের পর থেকে শিশু মারিয়াকে তার নানির বাড়িতে রেখে আসার জন্য চাপ দেয় মোর্শেদার স্বামী। এতে রাজি না হওয়ায় মোর্শেদার স্বামী তাকে প্রায়ই নির্যাতন করত। এরই জের ধরে বিয়ের ৩ মাস পর খোকন স্ত্রী মোর্শেদাকে মারপিট করে তার মায়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। মায়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার পর থেকে মোর্শেদা তার সন্তান মারিয়াসহ তার মায়ের বাড়িতে বসবাস করত।
তিনি আরো জানান, গত ২৩ জুন রাতে মোর্শেদা তার সন্তান মারিয়াসহ নিজ শয়নকক্ষে শুয়ে থাকাবস্থায় আসামী খোকন তার সঙ্গীয় অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ জন আসামীকে নিয়ে তার স্ত্রী ও শিশু মারিয়ার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে উপস্থিত হয় । তখন তাদের উপস্থিতির শব্দে ভিকটিম মোর্শেদা জানালার দিকে তাকিয়ে ঘরের বৈদ্যুতিক আলোতে গ্রেফতারকৃত আসামী সহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন আসামীদের দেখে চিৎকার দিলে, আসামী খোকন তার হাতে থাকা সিরিঞ্জ দিয়ে জানালার পাশ হতে ভিকটিম মোর্শেদার ডান পায়ের উরুতে ও ভিকটিম এর কন্যা সন্তান মারিয়ার মুখে নৃশংসভাবে এসিড নিক্ষেপ করে ঝলসে দেয়। তখন তাদের আর্ত-চিৎকারে মোর্শেদার মা সহ আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে, মোর্শেদা জানায় যে, আসামী খোকন ৩/৪ জন আসামীদের সহায়তায় তাদেরকে এসিড নিক্ষেপ করেছে।
তিনি আরও জানায়, পরিবারের সহযোগিতায় তাদেরকে জখমপ্রাপ্ত অবস্থায় আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করলে ভিকটিমদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে তারা উক্ত হাসপাতালে আশংকাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামী কে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে।