বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে একরাতে পরপর তিনটি হিন্দু বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। দুইটি বসত ঘর থেকে ৪২ হাজার টাকা, ৫টি মোবাইল, দেড় ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও ৭ ভরি রুপা লুটে নেয়। একজনকে কুপিয়ে আহত করেছে ডাকাতদল।মঙ্গলবার দিবাগত রাতে আড়াইহাজার পৌরসভার গভীর রাতে ৪নং ওয়ার্ড ঝাউগড়া এলাকায় ধীরেন্দ্র দত্তের বাড়িতে দুইটি বসত ঘরের দরজা ভেঙ্গে বাড়ির লোকজনদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ ৪২ হাজার টাকা, ৫টি মোবাইল, দেড় ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও ৭ ভরি রুপা লুটে নেয়। একই রাতে পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কামরানীরচর এলাকার ক্ষিতিশ চন্দ্র সরকারের বাড়িতে ডাকাত দল হানা দেয়। আধাপাকা দালানের কলাবসিবল গেটের তালা কেটে ঘরের ভিতরে প্রবশের চেষ্টা করা হলে ক্ষিতিশর সরকারের মাস্টার্স পড়–য়া ছেলে প্রসেনজিৎ ডাকাত দলের সদস্যদের ঘরে প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করলে তাকে এলোপাথারী কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করেছে ডাকাতদল। তবে তাদের ডাকচিৎকারে বাড়ির ও আশেপাপশের লোকজন সজাগ হয়ে বের হয়ে আসলে এই বাড়ি থেকে মালামাল লুট করতে পারেনি বলে গৃহ কর্তা ক্ষিতিশ সরকার জানান।ডাকাতির খবর পেয়ে আড়াইহাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এমদাদুল ইসলাম তৈয়ব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ ডাকাতির মাল উদ্ধার বা ডাকাতির সাথে জড়িত কোন ডাকাতকে গ্রেফতার করতে পারেনি। গত এক সপ্তাগে উপজেলা ব্যাপী ১০/১২ ডাকাতি সংগঠিত হলেও আড়াইহাজার থানা পুলিশ এখন পর্যন্ত ডাকাতির সাথে জড়িত কোন ডাকাতদের গ্রেফতার করতে না পারায় উপজেলা ব্যাপী ডাকাত আতংক বিরাজ করছে।থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এমদাদুল ইসলাম তৈয়ব বলেন,ডাকাতদের গ্রেফতারে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে নিজেদের জান মাল রক্ষায় জনগণকেও সজাগ থাকতে হবে। উল্লেখ্য, ১৭ জুলাই আড়াইহাজার পৌরসভার কামরানীরচর হাটখোলাপাড়া এলাকায় পরপর চারটি বাড়িতে ডাকাতদল হানা দেয়। অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ ও স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় ২ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। কামরানীরচর বাজারের ব্যবসায়ী সাঈদ মোল্লার বাড়িতে একদল মুখোপড়া ডাকাতদল বিল্ডিংয়ের প্রধান গেট ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে। পরে তারা ঘরে আসবাবপত্র তছনছ করে। এক পর্যায়ে আলমারী ভেঙে ৫০ -৬০ হাজার টাকা, একটি দামী মোবাইল ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নেয়। এসময় পরিবারের সদস্যকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যায়। একই রাতে কামরানীরচর হাটখোলাপাড়ার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মান্নান ভূঁইয়া, অটো চালক সাবুল ও ব্যবসায়ী রায়হান খন্দকারের বাড়িতে ডাকাতদল হানা দিয়ে স্বর্ণলঙ্কারসহ মূল্যবান সামগ্রী লুটে নেয় বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় যুবক কামরুল। একই রাতে উপজেলার খাগকান্দা ইউনিয়নের সেলিম ও মাইউদ্দিনের বাড়িতেও ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ১৪ জুলাই দিবাগত রাতে ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ডহর মারুয়াদী এলাকার চা বিক্রেতা আরিফুল হকের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। তার বাড়ি থেকে নগদ ৪০ হাজার টাকাসহ অন্যান্য মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। ১৯ জুন ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের নরিংদী এলাকার কাপড় ব্যবসায়ী হাফিজউদ্দিন ও মফিজউদ্দিনের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। পরে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আলমারী ভেঙে ৪ ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ ৩৫ হাজার টাকা এবং বেশ কয়েকটি মোবাইল সেট লুটে নেয়। একই রাতে উপজেলার খাগকান্দা ইউনিয়নের কদমতলী এলাকায় প্রবাস ফেরত আলম ও শারীরিক প্রতিবন্ধী নজরুল ইসলামের বাড়িতে ডাকাত দল হানা দেয়। এর মধ্যে প্রবাসীর বসত ঘরে ঢুকে ডাকাত দল অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও বেশ কিছু ডলার লুটে নেয়। প্রতিবন্ধী নজরুলের ঘর থেকে স্থানীয় সমিতি থেকে উত্তোলনকৃত (কিস্তি) ৪০ হাজার টাকা ও ৩ ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার লুটে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ১৫ জুন স্থানীয় শিবপুর এলাকায় পাওয়ারলুম ব্যবসায়ী মমতাজ হোসেনের বাড়িতে ডাকাত দল হানা দেয়। এই বাড়ি থেকে ১০ ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার লুটে নেয়। ৩১ মে দিনেদুপুরে শফিকুল ইসলাম নামে এক স্কুল শিক্ষকের ভবনে দুবৃর্ত্তরা হানা দেয়। এই বাড়ি থেকে ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কা ও নগদ ৩০ হাজার টাকা লুটে নেয়।