স্টাফ রিপোর্টার,বিজয় বার্তা ২৪
আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ মাহফুজুর রশীদ ফেরদৌস শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগের মামলার দায় স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
শনিবার মাহফুজুর রশিদ এই জবানবন্দি প্রদান করলেও রোববার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, এই আসামি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি করেছেন বলে আদালতের কাছে স্বীকার করেছেন। তবে, আসামি জোরপূর্বক যৌন হয়রানি করেছেন, তা জবানবন্দিতে উল্লেখ করেননি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের এসআই আফরোজ আইরিন কলি এই আসামিকে আদালতে হাজির করে জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন।
ওই আবেদনে বলা হয়, এই আসামি দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করে আসছেন। এই সময়ে বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীদের পড়া বোঝানো, টিউটোরিয়াল, অ্যাসাইনমেন্ট, গ্রুপ ডিসকাসন, থিসিস মূল্যায়ন, চারিত্রিক সনদ দেওয়া, শিক্ষার্থীদের দুর্বলতার সুযোগে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করে পরীক্ষায় বেশি নম্বর পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে একাধিক ছাত্রীকে যৌন হয়রানিসহ আপত্তিকর প্রস্তাব দিয়ে আসছেন। গত ২ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের এক ছাত্রীকে সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা বলে শ্লীলতাহানি করেন।
আসামি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, তিনি ওই শিক্ষার্থীর অশালীন ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল করার জন্য তার হেফাজতে রেখেছেন। একইভাবে আরও তিন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা বলে আপত্তিকর ছবি তুলেছেন। এ ছাড়া আসামি নিজে এসব শিক্ষার্থীকে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে অশালীন ছবি পাঠাতেন। যৌন হয়রানির শিকার ওই শিক্ষার্থীরা আদালতে এসে এসব ব্যাপারে জবানবন্দি দিয়েছেন। আসামির কাছ থেকে বিভিন্ন ইলেকট্রনিকস ডিভাইস জব্দ করা হয়েছে।
৩ মে মাহফুজুর রশিদ ফেরদৌসের নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় শ্লীলতাহানির মামলা হয়। ওই দিন রাতেই কলাবাগান থানার পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
৪ মে তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে। আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
৫ মে এই মামলায় যৌন হয়রানির শিকার পাঁচ শিক্ষার্থী আদালতে হাজির হয়ে জবানবন্দি দিয়েছেন।