বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের আট বছর পূর্ণ হলো বুধবার। এই দীর্ঘ সময়েও মামলার বিচার কাজ শেষ হয়নি। ২০১৪ সালের এ ঘটনায় নিম্ন আদালত ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেন। এরপর ২০১৮ সালের ২২ আগস্ট হাইকোর্ট ১৫ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় দেন। এরপর তিন বছরের বেশি সময় গড়ার আপিল বিভাগে। মামলাটি বর্তমানে আপিল শুনানির অক্ষোয় রয়েছে।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের আদালতে মামলায় হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ নজরুল ইসলাম, তার সহযোগী মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, বন্ধু সিরাজুল ইসলাম লিটন, মনিরুজ্জামান স্বপনের গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার এবং তার ব্যক্তিগত গাড়িচালক ইব্রাহিমসহ সাতজন অপহৃত হন। অপহরণের তিনদিন পর ৩০ এপ্রিল নজরুল ইসলামসহ ছয় জনের এবং ১ মে সিরাজুল ইসলাম লিটনের লাশ বন্দরের শান্তিরচর এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে ওঠে।
ওই ঘটনায় নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত নারায়ণগঞ্জ সিটির ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র্যাব-১১’র চাকরিচ্যুত অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার এম মাসুদ রানাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং নয় জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন।
এরপর মামলাটি একই সঙ্গে জেল আপিল ও মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য উচ্চ আদালতে গেলে হাইকোর্ট ২০১৮ সালে ২২ আগস্ট ১৫ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে অন্য আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন। বর্তমানে মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।
এর পর করোনার কারণে এতদিন মামলার কার্যক্রম বন্ধ ছিল। স্বজনরা অপেক্ষায় রয়েছেন কবে মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হবে।
সাত খুনে নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী ও মামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, ‘সাড়ে তিন বছর ধরে মামলাটি আপিল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি। তিনি বলেছেন, করোনা মহামারি শেষ হলে আপিল বিভাগে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।’
সেই অপেক্ষায়ই এখন প্রহর গুনছেন তারা।
সাত খুনে নিহত যুবলীগ নেতা মনিররুজ্জামান স্বপনের ছোট ভাই নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানুর রহমান রিপন বলেন, ‘আশা করি হাইকোর্টের রায়টিই আপিল বিভাগে বহাল থাকবে।’ তিনি রায়টি দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানান।
নিহত তাজুল ইসলামের পিতা আবুল খায়ের বলেন, ‘সাত খুন মামলাটির
আসামিদের শাস্তির অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন নিহত তাজুল ইসলামের পিতা আবুল খায়েরও। তার প্রত্যাশা, সরকার যাতে দ্রুত এ রায় কার্যকর করেন। হাইকোর্টের রায়টি যেন আপিল বিভাগেও বহাল থাকে।’