বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
আবারো আলোকিত মানুষ হিসেবে পরিচিত নারায়নগঞ্জ জেলা প্রশাসনের এডিসি (জেনারেল) গাউছুল আজমের সুন্দর উদ্যেগের পূর্ণতালাভ করেছে। তার নেতৃত্বে উদ্ধার হওয়া নির্যাতিত শিশু সুমিকে তার পরিবারের কাছে তুলে দেয়ার পর ২ ুআগস্ট মঙ্গলবার সকালে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ইউএনও জনাব মনসুরউদ্দিন তাকে স্থানীয় মাজুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দিয়েছেন । বই দিয়েছেন। গতকাল সকালে সংবাদটি পেয়ে আনন্দে আত্মহারা এডিসি (জেনারেল) গাউছুল আজম এ প্রতিবেদকের কাছে আবেগতাড়িত কন্ঠে জানালেন, সুমিদের মত শিশুরা স্কুলে যাক ,মানুষ হোক ,ঝরে না পরে সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে ।
তিনি জানান,গত ২৫ জুলাই পোড়াবাড়ী চানমারী এলাকায় কান্নাকাটি করতে দেখে ৩ জন ব্যক্তি সুমি(৮) নামের মেয়েটিকে আমাদের কাছে নিয়ে আসেন। শারীরিক নির্যাতন এর কারণে বাসা থেকে পালিয়ে রাস্তায় বেড়িয়ে পরে সে। কার বাসায়,কোন এলাকায় সে ছিল তা কোনভাবেই সে বলতে পারে না। কোম্পানীগঞ্জ সিএমবি,পান্নার পুল বাড়ীঘরের বৃত্তান্ত এ পর্যন্তই বলতে পেরেছিল । বাবা ইদন পরিচ্ছন্ন কর্মী ,নিজের মা মারা যাবার পরে বাবা বিয়ে করে ,সৎ মায়ের কাছে মানুষ হয় সুমি।
কিন্তু বাবা মারা যাবার পরে একটু সুখের আশায় ফুফুর হাত ধরে গৃহকর্মীর কাজে যোগ দেয়া সুমি । ফুফু শান্তি এক মাস পূর্বে নারায়ণগঞ্জে মাসিক ৪০০ টাকা বেতনে একটি পরিবারে গৃহকর্মী হিসেবে কাজে নিয়োগ করে । এত অল্প বয়সে ভারী কাজ করতে না পারায় নির্যাতনের স্বীকার হয় সে (সুমির ভাষ্য মতে)। দুপুরে খাওয়ানোর পরে নতুন জামা দিলাম তাঁকে ,স্বপ্নডানা স্কুলে নিয়ে আসলে এই স্কুলে পড়তে চায় সে । গৃহকর্মী হিসেবে কাজে ফিরে যেতে চায় না সে । বাড়ীতেও যেতে চায় না । পড়তে চায় সুমি।স্বজনদের খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত আমার বাসায় রেখেছিলাম। স্বজনদের খুঁজে পেতে সবার সহযোগিতা কামনা করেছি।
পরবর্তীতে ২৭জুলাই সুমির কান্নাকাটার জন্যে স্বজনদের খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত সুমিকে সমাজসেবা বিভাগের সহযোগিতায় রূপগঞ্জ শিশু পরিবার (বালিকা) তে প্রেরণ করেছিলাম। উদ্দেশ্য ছিল শিশু নিবাসে আরো শতাধিক শিশুর সাথে লেখাপডা শিখে মানুষ হবে সুমি । দেখতে যাব,খোঁজখবর নিব সুমির । অবশেষে সুমির স্বজনদের খুঁজে পাওয়া গেল। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ১৪ নং নবীপুর (পূর্ব) ইউনিয়নের বাখরনগর গ্রামে সুমিদের বাড়ী। পিতা মৃত- ইদ্রিছ মিয়া (ইদন), সুমির মা জোহরা রসুলপুর বাজারে ঝাড়ুদার এর কাজ করেন। ভাই বশির বিক্সাচালক। রূপগঞ্জ শিশু পরিবারে থাকাকালীন সুমির দেয়া তথ্য মতে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়, নারায়ণগঞ্জ এবং উপজেলা সমাজসেবা অফিসার, মুরাদনগর এর সহযোগিতায় সুমির স্বজনদের খুঁজে বের করা হয়।
৩১ জুলাই, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, নারায়ণগঞ্জে উপস্থিত হন সুমির মা, ভাই ও একজন আতœীয়। সুমিকে পড়ালেখা শিখাবে আর কাজের জন্য অন্যের বাড়িতে পাঠাবে না এই শর্তে সুমিকে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়। ইউএনও মুরাদনগর ,কুমিল্লা জনাব মোহাম্মদ মনসুর উদ্দিন এর সাথে কথা বলি। ইউএনও শিশুটিকে আগামীকাল স্কুলে ভর্তি করে দিবেন এবং পরিবারটিকে সহযোগিতা করবেন। বিদায় বেলায় সুমিকে নিয়মিত স্কুলে যাওয়ার জন্য বলি এবং একটি স্কুল ব্যাগ প্রদান করি। আমরা আনন্দিত সুমিকে পরিবারের সদস্যদের নিকট হস্তান্তর করতে পেরে । ধন্যবাদ সমাজসেবা বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে।
তবে গাউছুল আজম এ ব্যাপারে সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করে জানান, আসুন আমরা শিশু নির্যাতন না করে ওদের সুস্থধারায় বড় হয়ে উঠতে এগিয়ে আসি। এ ব্যাপারে সর্বস্তরের জনগনের বিশেষ ভাবে দায়িত্বশীল ও বিত্তবানদের হাত বাড়িয়ে দেয়ার জন্যে উদাত্ত আহবান জানাই।
্উল্লেখ্য এর আগেও রাস্তায় পড়ে থাকা বৃদ্ধা মাকে কুড়িয়ে এনে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা শেষে স্বজনদের খুজেঁ বের করার পর তাদের হাতে তুলে দিয়েছেন তিনি। আর ্একজন বৃদ্ধাকে তার সন্তানেরা বস্তায় ভরে রাস্তায় ফেলে গেলে তাকে ্এনে চিকিৎসা করালেও শেষ রক্ষা হয়নি। এভাব্ইে সরকারী দায়িত্বের অতিরিক্ত মানবসেবায় নিয়োজিত রেখেছেন নিজেকে গাউছুল আজম।