নারায়ণগঞ্জ,বিজয় বার্তা ২৪
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ একে এম সেলিম ওসমান বলেছেন, আপনারা শান্ত হোন। এলাকার শান্তি বজায় রাখুন। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমি কোন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করি নাই। আল্লাহকে নিয়ে ইসলামকে নিয়ে কটুক্তি করায় আমি একজন নাস্তিককে শাস্তি দিয়েছি। তদন্তের মাধ্যমে সব প্রমানিত হয়ে যাবে। আপনারা সবাই ধৈর্য্য ধরুন। ইসলাম শান্তির ধর্ম। আপনারা শান্তি বজায় রাখুন। শিক্ষক আল্লাহকে নিয়ে যে কটুক্তি করেছে তার শাস্তি সে পেয়েছে তিনি ক্ষমাও চেয়েছেন। আপনারা এলাকার উন্নয়নে মনযোগী হোন। দলমত নির্বিশেষে সবাইকে সাথে নিয়ে এলাকার উন্নয়নের কাজ করুন। এলাকার মুরুব্বিদের সাথে নিয়ে কাজ করবেন। সম্মানীদের সম্মান দিবেন তাহলে দেখবেন অনেক কঠিন কাজই সহজে হয়ে যাবে সম্মানী ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতার কারনে।
শনিবার(৪ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার গোগনগর ইউনিয়নের পুরান সৈয়দপুর বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয় ও সাড়ে ১১টায় আলীরটেক ইউনিয়নের কুড়েরপার শেখ রাসেল উচ্চ বিদ্যালয়ের নির্মানাধীন স্কুলে চেক বিতরন ও মত বিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এদিন দুটি স্কুলের শিক্ষার্থী এবং পরিচালনা পর্ষদের নেতৃবৃন্দের হাতে বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ের জন্য ২৫ লাখ টাকা এবং কুড়েরপাড় শেখ রাসেল উচ্চ বিদ্যালয়ের নির্মান কাজের জন্য ৩৫ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়।
এখন পর্যন্ত সেলিম ওসমানের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ের জন্য ২ কোটি ৩৫ লাখ এবং শেখ রাসেল উচ্চ বিদ্যালয়ের জন্য মোট ১ কোটি টাকা অনুদান হিসেবে প্রদান করা হলো। তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে নির্মানাধীন ৭টি স্কুলে মোট ১৬ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা অনুদান হিসেবে প্রদান করা হয়েছে।
স্কুল গুলোতে মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেলিম ওসমান বলেন, স্কুলের কোন শিক্ষার্থী যেন জড়ে না পড়ে এবং কোন ছাত্রী যেন বাল্য বিয়ের শিকার না হয় এ বিষয় গুলো শিক্ষকদের খেয়াল রাখতে হবে। স্কুলের যে সকল শিক্ষার্থীরা মেধাবী এবং তাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা দুর্বল সেই শিক্ষার্থীর মায়েদের সাবলম্বী এবং উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এর জন্য দুটি স্কুল থেকে ১’শ জন করে মোট ২’শ জন মাকে ১টি করে সেলাই মেশিন ও নগদ ১০ হাজার টাকা করে চলতি মূলধন প্রদান করা হবে। যাতে করে ওই সকল মায়েরা তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ জোগাড় করতে পারেন। প্রয়োজনে স্কুলের ক্লাস শেষে তাদেরকে প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হবে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোমাদেরকে সময়ের কাজ সময়ের মধ্যে করতে হবে। নয়তো কোন কাজেই সফলতা আসবে না। তোমাদেরকে শুধু মুখস্ত বিদ্যা নয় মেধা তৈরি করতে হবে। গভীর রাত পর্যন্ত জেগে মুখস্ত নয় ভোরে উঠে লেখাপড়া করবে। তাহলে তোমাদের মেধা তৈরি হবে অন্যান্য কাজের জন্য দিনটিও বড় হবে। শুধু জিপিএ-৫ পেলেই চলবে না। তোমাদেরকে আউট নলেজ অর্জন করতে হবে। শিক্ষকদের প্রতি আমি আহবান রাখবো আপনারা শিক্ষার্থীদের পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশের ইতিহাস, বঙ্গবন্ধুর জীবনী, মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে আলোচনা করবেন। তাদেরকে এসব বিষয় জানাতে হবে। আমরা এই বিষয় গুলোর উপর রচনা প্রতিযোগীতার আয়োজন করবো তাতে করে তাদের আউট নলেজ বৃদ্ধি পাবে।
তিনি আরো বলেন, কোন অপশক্তিই সেলিম ওসমানের উন্নয়নকে রুখে রাখতে পারবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। সেই সাথে এলাকার মানুষকে ধৈর্য্য ধারন করে শান্তি বজায় রেখে সবাইকে সাথে নিয়ে সম্মিলিত ভাবে উন্নয়ন কাজ চালিয়ে যাওয়ার আহবান রেখেছেন সেলিম ওসমান।
এদিকে ১৩ মে পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের অনাকাঙ্খিত ঘটনার পর শনিবারই প্রথম সেলিম ওসমান কোন সভায় যোগ দেন। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতি এবং সেলিম ওসমানকে নিয়ে অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে মত বিনিময় সভায় উপস্থিত এলাকার লোকজন বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে। এ সময় তারা বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিয়ে প্রতিবাদ জানাতে থাকে।
তখন সেলিম ওসমান বিক্ষুদ্ধদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা শান্ত হোন। এলাকার শান্তি বজায় রাখুন। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমি কোন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করি নাই। আল্লাহকে নিয়ে ইসলামকে নিয়ে কটুক্তি করায় আমি একজন নাস্তিককে শাস্তি দিয়েছি। তদন্তের মাধ্যমে সব প্রমানিত হয়ে যাবে। আপনারা সবাই ধৈর্য্য ধরুন। ইসলাম শান্তির ধর্ম। আপনারা শান্তি বজায় রাখুন। শিক্ষক আল্লাহকে নিয়ে যে কটুক্তি করেছে তার শাস্তি সে পেয়েছে তিনি ক্ষমাও চেয়েছেন। আপনারা এলাকার উন্নয়নে মনযোগী হোন। দলমত নির্বিশেষে সবাইকে সাথে নিয়ে এলাকার উন্নয়নের কাজ করুন। এলাকার মুরুব্বিদের সাথে নিয়ে কাজ করবেন। সম্মানীদের সম্মান দিবেন তাহলে দেখবেন অনেক কঠিন কাজই সহজে হয়ে যাবে সম্মানী ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতার কারনে।
তিনি আরও বলেন, আলীরটেকের মত এতো সুন্দর জায়গা আমি আর কোথাও দেখি নাই। আপনারা সবাই সহযোগীতা করেন যাতে করে আলীরটেক ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে একটি ইউনির্ভাসিটি অথবা একটি মার্কেট সহ মিনি স্টেডিয়াম তৈরি করা যায়। আলীরটেকের শিক্ষার্থীরা সেখানে গিয়ে একটু বিনোদন করতে পারে মন খুলে হাসতে পারে।
পুরান সৈয়দপুর বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ে চেক বিতরন ও মত বিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলী আকবর এবং আলীরটেকে শেখ রাসেল উচ্চ বিদ্যালয়ের চেক বিতরন ও মত বিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন আলীরটেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান মতি।
মত বিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস, গোগনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নওশেদ আলী, জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার সালাউদ্দিন, ব্যবসায়ী ফজর আলী, গোগনগর ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি হাজী মোক্তার হোসেন, সহ দুটি ইউনিয়নে ওয়ার্ডের মেম্বার সহ স্থানীয় মুরুব্বি ও গন্যমান্য ব্যক্তিরা।