ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগের প্রশ্নে সর্বপ্রথম যে বিষয়টি আসবে সেটা হচ্ছে আওয়ামী লীগের আগে বিচার হতে হবে। সুতরাং যেসব টকশোজীবী, মিডিয়া পাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী আওয়ামী লীগের মানবাধিকারের জন্য সরব হয়েছেন আপনারাই এতদিন এই ফ্যাসিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছিলেন। ফ্যাসিবাদের পক্ষে যেসব কলমগুলো আবার লিখবে আমরা সেই কলমগুলোকে আবার ভেঙ্গে দিবো।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়া শহীদ মিনারে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের দাবিতে পথসভা ও গণসংযোগে তিনি এসব কথা বলেন। এরপর সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগংরোড ও সোনারগাঁও উপজেলার কাঁচপুরে পথসভা ও গণসংযোগ করেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ফ্যাসিবাদের পক্ষে যেসব মিডিয়া গুলো কথা বলবে সেসব মিডিয়ার বিপক্ষে আমাদের অবস্থান অব্যাহত থাকবে। ফ্যাসিবাদের পক্ষে যেসব মগজ আবার তাদের চিন্তা প্রসূত করবে তাদের চিন্তার বিপক্ষে আমাদের শক্ত অবস্থান থাকবে। আমরা বারবার বলসি আপনারা যদি তরুণ প্রজন্মের কথা বুঝতে ব্যার্থ হন তাহলে আওয়ামী লীগের যে পরিণতি হয়েছে পরবর্তীতে যারাই নীতি নির্ধারণ পর্যায়ে আসবে তাদের পরিনতিও আওয়ামী লীগের মত হবে।
তিনি বলেন, আজকে আমরা তরুণ প্রজন্মকে রাস্তায় নেমে আসতে হয়েছে। আমদেরকে রক্ত দিতে হয়েছে। আমাদের ভয়কে জয় করতে হয়েছে। কারণ আমাদেরকে দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতির সংস্কৃতি ও প্রতিহিংসার রাজনীতির সংস্কৃতি আমাদের তরুণদেরকে আশাহত করেছে। আমরা জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র করতে পারি নাই। আমরা রাষ্ট্রের মধ্যে নাগরিক হয়ে উঠতে পারি নাই। আমাদের অতীতের রাজনৈতিক যেই কাঠামো রয়েছে তা আমাদেরকে নাগরিক অধিকার থেকে ইতিহাসের স্তরে স্তরে বঞ্চিত করেছে। তরুণ প্রজন্ম বঞ্চিত হয়েছে। এই বঞ্চিতের ক্ষোভ থেকে আমাদের দ্রোহের আগুন দিয়ে ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ গড়েছি। আমাদের পরবর্তী বাংলাদেশ বিনির্মিত হবে। আমাদের অতীতের যে রাজনীতি এবং এত বছর যারা রাজনীতি করেছে তাদের অভিজ্ঞতা আর তরুণ প্রজন্মের ভয়হীন যে মনোভাব এই দুইটার সংমিশ্রণে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, জানুয়ারির ১৫ তারিখ পর্যন্ত আমাদের আল্টিমেটাম ছিল। আজকের গণসংযোগের পরে আমরা সরকারকে কাল পর্যন্ত সময় দিয়েছি। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদেরকে কমিটমেন্ট দিয়েছে রাজনৈতিক ঐক্যমতের ভিত্তিতে ঘোষণাপত্র তৈরি করবেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে এখনো পর্যন্ত দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ আমরা দেখি নাই।
উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্যে হাসান আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা যাদেরকে উপদেষ্টা বানিয়েছি। আমাদের প্রতিনিধি হয়ে যেসব উপদেষ্টা সরকারে গিয়েছে আমরা আপনাদেরকে বলতে চাই আপনারা আমাদের প্রতিনিধিত্ব করছেন। আপনারা যদি কোন কারণে মনে করেন প্রোক্লেমেশন দিতে এবং জনআকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে আপনাদের রাষ্ট্রীয় কোন বাধা রয়েছে সেটি আপনারা জনগণের সামনে প্রকাশ করুন। আমরা যেভাবে আগস্ট মাসে রাস্তায় নেমে আসছিলাম ঠিক একইভাবে আমরা আবার রাস্তায় নেমে আসবো। এই প্রোক্লেমেশন দিতে আপনাদের বাধা কোথায়? কারা বাঁধা দিচ্ছে সেগুলো আপনারা জনগণের সামনে প্রকাশ করুন। যদি আপনারা ব্যার্থ হন তাহলে উপদেষ্টার কাতার থেকে জনগণের কাতারে নেমে আসুন আমরা একসাথে মিলে যেভাবে হাসিনার পতন ঘটিয়েছি প্রয়োজন হলে আমরা সেভাবে আবার আমদের প্রোক্লেমেশন আদায় করে নিবো।
গণসংযোগ ও পথসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন, যুগ্ম আহবায়ক আলী আহসান জোনায়েদ, সহ মুখপাত্র আরেফীন মুহাম্মাদ হিজবুল্লাহ, কেন্দ্রীয় সদস্য শওকত আলী, তামিম আহমেদ।