স্টাফ রিপোর্টার,বিজয় বার্তা ২৪
দেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম, জয়পুরহাট, ধামরাই, রাজবাড়ী ও নারায়ণগঞ্জ, চাঁদপুর, কিশোরগঞ্জ, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, গাইবান্ধা, মাগুরা, সুনামগঞ্জ, গাজীপুর ও যশোরে বজ্রপাতে ২২ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে । শুক্রবার সারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় ২২ জনের মৃত্যু হয়।
চট্টগ্রাম : সাবেক প্রাথমিক গণশিক্ষামন্ত্রী আফসারুল আমীনের চাচাতো ভাই আমজাদ আলী (৩০) মৃত্যুবরণ করেছেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পাহাড়তলী থানার বারুণী ঘাট বেড়িবাঁধ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, নিহত আমজাদ আলী সকালে তার দৈনন্দিন কাজে বের হলে বজ্রপাতের শিকার হন। পরে আশপাশের লোকজন তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা : সাভার ও ধামরা্ইয়ে বজ্রাপাতে দুই কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। ধামরাই উপজেলার নয়াচর গ্রামে বজ্রপাতে মনির হোসেন নামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে মাঠে মায়ের সঙ্গে খর কুড়াতে গিয়ে তার মৃত্যু হয়। এদিকে সাভারে বজ্রপাতে মন্টু মিয়া নামে এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছে আরো দুজন। শুক্রবার দুপুরে সাভার পৌর এলাকার ছায়াবীথি সোসাইটির বালুর মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলায় শুক্রবার দুপুরে বজ্রপাতে দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। নিহতরা হলো খড়ক গ্রামের আব্দুস সালাম মন্ডলের ছেলে স্কুল পড়ুয়া আনিসুর রহমান (১৪) ও পৌর এলাকার বেতুয়া পৌলশিয়া গ্রামের মোকলেসুর রহমানের মেয়ে লিমা আক্তার (১৪)। নিহত আনিসুর রহমান (১৪) উপজেলার দড়িপাড়া নিকলা উচ্চ বিদ্যালয় ও লিমা আক্তার (১৪) টেপিবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন।
জয়পুরহাট : সদর উপজেলার সতীঘাটা ও ক্ষেতলাল উপজেলার হাওয়ার বিল (বিলের ঘাট) এলাকায় জমির পাকা ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতের ঘটনায় রফিকুল ইসলাম (৩৫) ও মানিক হোসেন (৩৮) নামে দরিদ্র দুই ক্ষেত মজুরের মৃত্যু হয়েছে।
শ্রক্রবার সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে অন্য ক্ষেতমজুরদের সাথে পৃথক জমিতে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে এ দুটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। নিহত মানিক হোসেন জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার ঘুগইল গ্রামের আহসানুজ্জামানের ছেলে। আর রফিকুল ইসলামের বাড়ি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বর উপজেলার ঢেকেরপার।
রাজবাড়ী : গোয়ালন্দ ও কালুখালীতে বজ্রাপাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। কালুখালীর রতনদিয়া ইউনিয়নে বজ্রপাতে তিন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন রতনদিয়ার বগলপুর গ্রামের মোঃ জাহিদ সেখ ও হরিণবাড়িয়া গ্রামের বিল্লাল শেখ।
এদিকে গোয়ালন্দ উপজেলায় শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে কাল বৈশাখী ঝড়ের সময় বজ্রপাতে সোবহান সরদার (৪৫) নামের এক ব্যাক্তি মারা গেছে। তিনি উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ওমেদ বেপারী পাড়ার মৃত ঝুমুর সরদারের ছেলে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নিখিল চন্দ্র রায় জানান, সোবহান সরদার ঝড়-বৃষ্টির সময় বাড়ীর সামনে পাট ক্ষেতে আগাছা তোলার কাজ করছিলেন। এ সময় বজ্রপাত হলে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে তাকে গোয়ালন্দ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বজ্রপাতে বান্টি নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ২ শিশু। ফতুল্লা রেলষ্টেশন এলাকায় শুক্রবার বিকালে এঘটনা ঘটে।
নিহত বান্টি (৭) কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী সুজানগর গ্রামের মৃত. মইনুদ্দিনের ছেলে। বান্টির মা সুজনা বেগম ফতুল্লা রেলস্টেশন এলাকায় আজিজ মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থেকে ইট ভাঙ্গার কাজ করে। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে বান্টি মেঝ। আর আহতরা হলো- শাহজাহান (১২) ও শামীম (১০)। তাদের বাড়িও পাশাপাশি।
চাঁদপুর : মেঘনা মোহনায় মালবাহী ট্রলারে বজ্রপাতে এক যুবকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার বিকাল ৩টায় মেঘনা নদীর মোহনায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত নবীর হোসেন (২৫) লক্ষ্মীপুর জেলার কমল নগর থানার চরফলকন গ্রামের মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে। এসময় আহত হয়েছেন ওসমান গণি (৫০) ও মোঃ রাকিব (২৪) নামে দুই যুবক।
কিশোরগঞ্জ : তাড়াইল উপজেলার ধলা ইউনিয়নের গজিন্দ্রপুর গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে লাল চাঁন (২৮) নামে এক গার্মেন্টসকর্মী নিহত হয়েছেন। নিহত লাল চাঁন নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার মোজাফরপুর ইউনিয়নের গগডা আটকান্দিয়া গ্রামের নূর মিয়ার ছেলে। শুক্রবার গজিন্দ্রপুর গ্রামের মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করতে শ্বশুরের ঘর থেকে বের হয়ে উঠোনে যেতেই হঠাৎ বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই লাল চাঁন নিহত হয়।
নওগাঁ : পোরশা ও মহাদেবপুরে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। সকাল সাড়ে নয়টায় পোরশা উপজেলায় আম কুড়ানোর সময় ইব্রাহীম (১৩) নামের এক বালকের মৃত্যু হয়েছে। সে উপজেলার নিতপুর কপালীর মোড় দীঘিপাড়া গ্রামের গোলজারের ছেলে। এদিকে একই সময় মহাদেবপুর উপজেলায় ধনজইল গ্রামে শচীন মহুরী (৪৮) কৃষিকাজ করছিলেন। এসময় বজ্রপাত ঘটলে ঘটনাস্থলেই শচীনের মৃত্যু হয়। শচীন মহুরী ওই গ্রামের ভগবান মহুরীর ছেলে।
সিরাজগঞ্জ : উল্পাপাড়ায় বজ্রপাতে ২ জন মারা গেছে। শুক্রবার সকালে উপজেলার বিনায়েকপুর গ্রামে লুত্ফর রহমান ঝন্টু ও দুপুরে রশিদপুর তারুটিয়া গ্রামের স্কুল ছাত্রী লিজা খাতুন বজ্রপাতে মারা যায়। বৃষ্টির সময় এরা দু’জনই বাইরে কাজ করছিল। এ নিয়ে গত দুদিনে এ উপজেলায় বজ্রপাতে মারা গেল ৪ জন।
গাইবান্ধা : সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের খোদ্দমালিবাড়ী পূর্বপাড়া গ্রামে শুক্রবার সকালে বজ্রপাতে সিরাজুল হক (৬০) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত সিরাজুল হক সকালে ঘুম থেকে উঠে জমিতে কাজ করতে যাওয়ার সময় বজ্রপাত ঘটলে ঘনাস্থলেই তিনি মারা যান। সিরাজুল হক ওই গ্রামের মৃত জাফর আলীর ছেলে। ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বাদল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মাগুরা : সদর উপজেলার কাপাসহাটী বিকালে বজ্রপাতে তুহিন শেখ (২২) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেন সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত ব্রাদার আবদুল আজিজ। তুহিন ওই গ্রামের হেলাল উদ্দিন শেখের ছেলে।
হেলাল শেখ জানান, বিকেলে কাপাসহাটি গ্রামের নিজ বাড়ির পাশের রাস্তায় তুহিন বজ্রপাতের শিকার হয়। এ সময় তাকে অচেতন অবস্থায় মাগুরা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্য ঘোষণা করেন।
সুনামগঞ্জ : দুপুরে বাড়ির পাশে হাওরে কাজ করার সময় জগন্নাথপুরের কলকলি ইউনিয়নে বজ্রপাতে আমির উদ্দিন (৩০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জগন্নাথপুর থানার ওসি মোহাম্মদ মুরসালিন।
গাজীপুর : কালিয়াকৈরে বজ্রপাতে একজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের নাম সুভাষ চন্দ্র (৬০)। তার বাড়ি কালিয়াকৈর উপজেলার মধ্যপাড়া ইউনিয়ন সোলাটি গ্রামে। শুক্রবার দুপুরে এ বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে।
কালিয়াকৈর উপজেলার মধ্যপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নাছিম কবির জানান, বজ্রপাতে সুভাষ চন্দ্রের শরীরের বাম পাশ ঝলসে গিয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। পরে তাকে পারিবারিকভাবে সৎকার করা হয়েছে।
যশোর : বজ্রপাতে ইয়ার আলী (৭০) নামে বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন তার স্ত্রী আলেয়া বেগম (৬৫)। শুক্রবার বিকালে যশোর শহরতলীর সুজলপুরে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ইয়ার আলী ওই গ্রামের মৃত আবদুল হক মোল্যার ছেলে।