বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জ টু চন্দ্রা রুটে মৌমিতা ট্রান্সপোর্ট ও নারায়ণগঞ্জ টু গাজীপুর রুটে নিয়মিতভাবে চলাচল করছে গ্রীণ অনাবিল নামের দুটি বাস কোম্পানীর বাস। রুট পারমিট ও ফিটনেস বিহীন গাড়ি গুলো শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে রাস্তার মাঝখান থেকে যাত্রী উঠানো-নামানোর কারনে সৃষ্ট হচ্ছে তীব্র যানজটের। হাতে গোনা কিছু সংখ্যক বাসের অনুমোদন নিয়ে এক একটি কোম্পানি শতাধিকের বেশি বাস পরিচালনা করছে এই রুট গুলোতে । শহরের মধ্যে কোনো নিদিষ্ট কোন বাস স্টার্ন্ড না থাকার কারনে ও বাসের সংখ্যা বেশি হওয়ায় অবৈধ ভাবে রাস্তার দুইপাশে এলোমেলো ভাবে গাড়ি গুলো দাড় করিয়ে রেখে সরু রাস্তাকে আরো সরু করে ফেলেছে তারা। এছাড়া শহরের যানযট থেকে মুক্তির জন্য মরিয়া হয়ে আছে নগরবাসী। এদিকে শত চেষ্টা করেও যানযট নিরসন করতে যেন ব্যর্থ হচ্ছে জেলার ট্রাফিক বিভাগ।
বিআরটিএ নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের তথ্য সূত্রে জানা যায় , ১৯৭১ সাল হতে ২০২০ সাল পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ বিআরটিএ হতে রেজিষ্ট্রেশন করা গাড়ির সংখ্যা সর্বমোট ১১ হাজার ৮০২টি। এর মধ্যে বাসের সংখ্যা ২২০টি, অটোরিকশা ৬০০১টি, মোটরসাইকেল ২৮৫টি, প্রাইভেটকার ১৮৩টি, পিকআপ ভ্যান ১৯৭টি, ট্যাংক লড়ী ২২০টি, ট্রাক ৮৪০টি এবং ট্রাক্টর ৩৫২টি। আরো জানা যায় নারায়ণগঞ্জ থেকে সারাদেশে চলাচলকারী বেশিরভাগ গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন ঢাকা বিআরটিএ হতে নেয়া। তাই নারায়ণগঞ্জ হতে সারাদেশে চলাচলকারী বাস কোম্পানির রেজিষ্ট্রেশনের সঠিক তথ্য নারায়ণগঞ্জ বিআরটিএ’র হাতে নেই।
এদিকে জানা যায় মৌমিতার ৩০টি বাসের অনুমোদন নেয়া হলেও চলছে ১২০ টির বেশি বাস। আর গ্রীণ অনাবিলতো মানছেই না কোন নিয়মকানুন। বিভিন্ন সূত্রে থেকে জানা গেছে, প্রায় কয়েক বছর আগে বিআরটিএ এর কাছে গ্রীন অনাবিল পরিবহনের কর্তারা সাইনবোর্ড থেকে চাষাঢ়ায় প্রবেশ করার অনুমতি চায়। কিন্তু বিআরটিএ তাদের এই সড়কে চলাচলের রুট পারমিট দেয়নি। তবে লিখিত অনুমতি পত্র জমা দেয়ার কয়েক মাস পর থেকেই চাষাঢ়া প্রবেশ শুরু করে গ্রীন অনাবিল পরিবহন। কিন্তু দেখা যায় প্রতিটি গাড়িতে নারায়ণগঞ্জ টু গাজীপুরের পোষ্ঠার লাগিয়ে চলাচল করতে । নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড পর্যন্ত পরিবহন দুটির রুট পারমিট থাকলেও তারা রুট পারমিট অমান্য করেই প্রবেশ করছে শহরের কেন্দ্রবিন্দু চাষাঢ়া হয়ে মেট্রোহল এলাকায়। তাই এখন মনে হয় যেন শহরের মেট্রোহল এলাকাটি যেন মৌমিতা ও গ্রীণ অনাবিল গাড়ির দখলে। নিজস্ব স্টার্ন্ড মনেকরেই অবৈধভাবে প্রবেশ করে সড়কের মাঝখানেই পার্কিং করছে ও সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি করছে। কোন কাউন্টার নেই কিন্তু আবার কয়েকটি স্থানে অবৈধভাবে কাউন্টার বানিয়ে বাস থামিয়ে যেখানে সেখানে উঠানামা করাছে যাত্রীগণদের কে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মেট্রো হল সংলগ্ন গ্রীন অনাবিল ও মৌমিতা ট্রান্সর্পোটের অবৈধ স্টার্ন্ড ও কাউন্টারের সামনে রাস্তার দুইপাশে এলোমেলো ভাবে গাড়ি গুলো পার্কিং করে রাখা হয়েছে। সাইনবোর্ড পর্যন্ত রুট পারমিট থাকার পরেও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই অবৈধ ভাবে এইখানে স্টার্ন্ড বানিয়ে রাস্তা দখল করে গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়েছে। এছাড়াও গ্রীন অনাবিলের অধিকাংশ গাড়ি গুলোর দিকে তাকালে ফিটনেস আছে কি নেই তাই বলা মুসকিল। এদিকে নারায়ণগঞ্জের অন্যতম ব্যস্ততম সড়ক সিরাজুদ্দৌলা রোডের ট্রাফিক পুলিশের অফিসের সামনের রাস্তার মাঝখানে অবৈধ ভাবে পাকিং করে রেখে দিয়ে যানযট ও ছোট বড় দূর্ঘটনার কারন হচ্ছে এ পরিবহন গুলো। এতে করে নানাভাবে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে যাত্রী সাধারণ।
মেট্রোহল সংলগ্ন কয়েকজন দোকানদারেরা বলেন, গ্রীণ অনাবিল গাড়ি গুলো যেভাবে এই মোড়ে গাড়ি গুলো রাখে তাতে কালি বাজার থেকে আশা কোনো গাড়ি ডান বা বাম দিক থেকে কোন গাড়ি আসতাছে কি না তারা তার দেখতে পারেনা। তাতে দূর্ঘটনার আশংকা অনেক বেশি থাকে। এছাড়া এইভাবে রাস্তার মাঝখানে গাড়ি রাখার কারণে প্রতিদিনই ছোট খাটো দূর্ঘটনা ঘটে। ছোট দূর্ঘটনা হয়তো তাই কারো কোনো মাথা ব্যাথা নাই।
এক রিকশা চালক বলেন, আমি এই রাস্তায় প্রতিদিন কম হলেও ১০-১২ বার এর থেকেও বেশি রিকশায় যাত্রী নিয়া আসা যাওয়া করি। এই ভাঙ্গাচুড়া (ফিটনেস বিহীন) গাড়ি গুলো এমন উল্টা পাল্টা রাইখা জাম লাগায় আর এর লেইগ্যা এক্সিডেন্ট (দূর্ঘটনা) হয়।
গ্রীণ অনাবিল পরিবহনে চলাচল কারি এক যাত্রীর সাথে কথা বললে তিনি এমন প্রশ্ন রাখেন প্রশাসনের কাছে, এই গাড়ি গুলোর ভিতরে ও বাহিরের পরিস্থিতি দেখলে কারো কি মনে হয় এই পরিবাহন গুলোর ফিটনেস আছে?
ফিটনেস বিহীন গাড়িতে করে কেন যাতায়াত করেন? সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে যাত্রী বলেন গ্রীণ অনাবিল পরিবহনে যারা নিয়মিত চলাচল করে তারা বাধ্য হয়ে কোন উপায় নেই বলেই এই গাড়িতে চলাচল করছে।
গ্রীণ অনাবিল পরিবহনের দায়িত্বরত লাইনম্যানের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমাদের গাড়ি গুলো দুই থেকে তিন মিনিট কাউন্টারে দারায়। আপনাদের কাউন্টার কোথায় ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন প্রতিটি পয়েন্টে একজন করে চেকার আছে তারা অবিলের মধ্যে লিখে দেয় কত জন যাত্রী আছে। গ্রীণ অনাবিল পরিবহনের কি চাষাঢ়া ও মেট্রোহল পযর্ন্ত রুট পারমিট আছে? জানতে চাইলে উত্তরে জানায় আমাদের অবিলে চাষাঢ়া পযর্ন্ত লেখা আর আমাদের স্টার্ন্ড মেট্রোহল।
মৌমিতা পরিবহনের চালক ও একজন লাইনম্যানের সাথে পৃথকভাবে কথা বলে জানা যায়, মৌমিতার গাড়ি রয়েছে ১৫০টিরও বেশি। তারা আরো বলেন আমরা সিরিয়াল মতো চলি, তার পরও যানযট লাগে তাতে আমরা কি করমু? রুট পারমিট কোন পর্যন্ত আছে? জবাবে পারমিট আছে তাই তো এখান পযর্ন্ত আসে পারমিট না থাকলে তো আসতো না। রাস্তার মাঝখানে গাড়ি পার্কিং ও মাঝখান থেকেই যাত্রী উঠানো নামানো করেন কেন? আমাদের পার্কিং এর কোন জায়গায় মেট্রোহল এলাকায় নাই তাই বাধ্য হয়েই রাস্তার মাঝখানে রাখতে হয়। আমাদের চাষাঢ়া মোড়ে পুলিশ দাড়াতে দেয়না। তাই যানজটের মধ্যেই রাস্তার মাঝখান থেকে যাত্রী উঠাই।
বিআরটিএ নারায়ণগঞ্জ সার্কেলের সহকারি পরিচালক (ইঞ্জি:) সৈয়দ আইনুল হুদা চৌধুরী বলেন, গ্রীণ অনাবিল পরিবহনের রুট পারমিট সাইনবোর্ড পযর্ন্ত। এবং আমরা আমাদের নিয়মিত মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করছি। ফিটনেস বিহীন ও রুট পারমিটহীন গাড়ি গুলোকে মামলা করে ডাম্পিং ও জরিমানার আওত