বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি নারায়ণগঞ্জ শহর কমিটির ত্রয়োদশ সম্মেলনের উদ্বোধনী সমাবেশ ২৬ আগস্ট ২০১৬ শুক্রবার বিকেল ৪টায় নারায়ণগঞ্জ চাষাড়া শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি শহর কমিটির সভাপতি কমরেড আব্দুল হাই শরীফ। সম্মেলন উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড এ্যাডভোকেট মন্টু ঘোষ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা কমিটির সভাপতি কমরেড হাফিজুল ইসলাম। বক্তব্য রাখেন শহর কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সুজয় রায় চৌধুরী বিকু, শহর কমিটির সদস্য কমরেড শাহানারা বেগম, কমরেড শোভা সাহা, কমরেড এ্যাডভোকেট শরৎ চন্দ্র মন্ডল, কমরেড কৃষ্ণা ঘোষ, কমরেড শাহজাহান, কমরেড আব্দুল সোবাহান, শিশির চক্রবর্তী, সজীব শরীফ প্রমূখ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, রামপাল চুক্তি জনগণ কিছুতেই মেনে নেবে না। এই গণবিরোধী চুক্তি থেকে সরকারকে অবশ্যই সরে আসতে হবে। আর সরে না আসলে দেশবাসী তা প্রতিহত করবে। ইতোপূর্বে একবার গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। আবারো আরেক দফা বাড়ানোর পায়তারা চলছে। সরকার খামাখা গোয়ার্তুমি করছে। গ্যাসের দাম বাড়ালে কমিউনিস্ট পার্টি, বাসদ ও অন্যান্য বামপন্থীরা হরতালের ডাক দেবে। যেকোনো মূল্যে তা রুখবে।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, এ সরকারের শাসনামলে মুক্তমনা লেখক, শিল্পী, শিক্ষকদের প্রকাশ্যে হত্যা করা হয়েছে। শিশুদের ওপর নির্যাতন ও বর্বরোচিত হত্যার ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরায় জঙ্গীদের হাতে খুন হয়েছে দেশি-বিদেশি ২০ জন নাগরিক। কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদের দিন খুন হয়েছে পুলিশসহ আরো ৩ জন। বর্তমানে সারাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে। ইসলামের নামে জঙ্গীরা টার্গেট করে হিন্দু পুরোহিত, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোক, শিয়া মুসলিম, মসজিদের ইমাম ও বিদেশী নাগরিদের হত্যা করছে। সরকার তা প্রতিহত করতে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। অপরদিকে বিগত সময়ে বিএনপি নেতৃতাধীন জোট সরকারের আমলেও একই ধরনের ভয়াবহ অবস্থা বিরাজমান ছিল। জঙ্গীদের মাস্টার মাইন্ড স্বাধীনতা বিরোধী জামাত-শিবিরের সাথে জোট ও ভোটের রাজনীতি অব্যাহত রেখে বিএনপি ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের ন্যায় ক্ষমতায় যেতে মরিয়া হয়ে ওঠেছে। সাধারণ মানুষের দাবি নিয়ে বিএনপি ও তার জোটের কোনো কর্মসূচি নেই। সরকার চায় যেকোনো ভাবেই ক্ষমতায় থাকতে আর তথাকথিত বিরোধী দল চায় ক্ষমতায় যেতে। আওয়ামীলীগ ও বিএনপি একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। লুটেরা ধনিক শ্রেণির রাজনৈতিক দলকে ক্ষমতায় রেখে বা ক্ষমতায় এনে শ্রমজীবী ও মেহনতি সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক কোনো মুক্তি আসবে না। দেশের এই ক্রান্তিকালে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি ও অন্যান্য বাম প্রগতিশীল দল এই অবস্থার উত্তরণ ঘটাতে চায়। তাই আসুন দ্বি-দলীয় রাজনৈতিক মেরুকরণের বাইরে একটি কার্যকর বিকল্প শক্তি গড়ে তোলার জন্য ঝাপিয়ে পড়ি।

