বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
ঘটনার ১৪ দিন অতিবাহিত হলেও ফতুল্লা থানাধীন হাজীগঞ্জের জামাই বাবু হত্যাকান্ডের ধৃত ৪ জন আসামী ব্যতীত মামলার অন্যান্য আসামীরা এলাকায় প্রকাশ্যেই বীরর্দপে ঘুরাফেরা করছে কিন্তু পুলিশ এ ব্যাপারে নিরব থাকায় এলাকাবাসী পুলিশের প্রতি দারুন ক্ষোভ প্রকাশ করছে।
নিহত জামাই বাবুর স্ত্রী শেফালী আক্তার ঘটনার বিবরণে জানায়, তার স্বামী একজন পেশায় রাজমিস্ত্রী ছিল। দীর্ঘদিন যাবৎ তার স্বামী আনোয়ার হোসেন বাবুকে চিহ্নিত মাদক সন্ত্রাসী দেলোয়ার হোসেন দেলু(৩২), হিমেল(৩৫), এরশাদ(৩), সাগর(২৮), জীবন(৩০), রাসেল(২২), বাবু(২৪), তপু(২২), রাজন মিয়া(২২), কাউছার ওরফে রিতু(২২), জাকির হোসেন(২২) ও আতাউর রহমান(২২) সহ আরো বেশ কয়েকজন প্রাননাশসহ বিভিন্ন প্রকার হুমকি দিয়ে আসছিল। গত ২৭ জানুয়ারী বিকেলে কাজের যাওয়ার কথা বলে আনোয়ার হোসেন বাবু বাড়ি থেকে বের হয়। ঐ দিন সন্ধ্যার পর তার পিতার মোবাইলের মাধ্যমে শেফালীর মা মঞ্জু আক্তারকে জানায় যে, স্থানীয় নিউ হাজীগঞ্জ শাহ্জালাল রোডে মালেক সাহেবের বাড়ীর সামনে মিষ্টারের দোকান সংলগ্ন পাকা রাস্তার উপর বাবুকে পূর্ব শত্রুতার জেরধরে প্রায় ২০ জন মাদক সন্ত্রাসী এলোপাথাড়ি ভাবে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিলঘুষি ও ছুরিকাঘাত করিয়া গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে রাস্তার উপর ফেলে চলে যায়। তৎক্ষনাত স্থানীয় লোকজন জামাই বাবুকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ খানপুরের ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জামাই বাবুকে মৃত ঘোষনা করেন। শেফালী এজাহারের উল্লেখ করেন তিনি হাসপাতালের স্ট্রেচারে স্বামীর লাশ দেখতে পায় এবং তাহার বুকের ডান পাশে ২টি ও বাম পাশে ১টি এবং পিঠে ৭টি ধারালো ছুরির আঘাতের গুরুতর রক্তাক্ত জখম। এ ঘটনায় ১২ জনকে আসামী করে ৩০২/৩৪ ধারায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হলে ফতুল্লা থানা পুলিশ সাড়াশী অভিযান চালিয়ে আতাউর, জাকির, কাউছার ও রাজন মিয়াকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত ৪ জন নারায়ণগঞ্জ আদালতে বিজ্ঞ ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারা স্বীকারোক্তিমূলক জবাববন্ধি প্রদান করেন। কিন্তু এর পর থেকে অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার করতে পুলিশের তেমন কোন তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এমন একটি হত্যাকান্ডের জন্য এলাকাবাসী প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছে। মামলার আয়ু এস.আই কাজী এনামুল হক। এলাকাবাসী অভিযোগ করছে একাধিক মামলার আসামী ও সাজাপ্রাপ্ত দেলোয়ার হোসেন দেলু নতুন আইলপাড়া, পাঠানটুলী, এনায়েতনগর ও পানির কল এলাকায় নিয়মিতই আসা যাওয়া করছে। জেলেপাড়াপুল সংলগ্ন একটি গোডাউনে রাতের আধারে ইয়াবা বিভিন্ন মাদক বিক্রেতার কাছে পৌছে দিচ্ছে। দেলোয়ার হোসেন দেলু এলাকায় একটি মিথ্যা রিউমার ছড়িয়েছে যে, দেলু এখন বিদেশে। অথচ প্রকাশ্যেই ঘোড়াফেরা করে মাদক সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রন করছে। এছাড়া হিমেল ও এরশাদ সহ অন্যান্য আসামীরা হাজীগঞ্জসহ অন্যান্য এলাকায় প্রকাশ্যেই ঘোড়াফেরা করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে বাদী পক্ষকে মামলার আসামী মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে চাপ সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে এই হত্যা মামলাটি ভিন্ন ভাবে প্রভাবিত করতে আসামীদের সহযোগিরা বাদী পক্ষকে বিভিন্ন ভাবে ভুল তথ্য দিয়ে হয়রানী করছে এবং দেলুসহ অন্যান্য আসামীদের বাঁচাতে ২/৩ জন ব্যক্তি উঠেপড়ে লেগেছে। নিহত জামাই বাবুর মামা মোহাম্মদ খোকন বলেন আমার ভাগিনাকে যারা হত্যা করেছে তারা কেউই রেহাই পাবে না। হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আসতেই হবে। এজন্য আমি সংশ্লিষ্ট পুলিশ প্রশানের কাছে অন্যান্য আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের জোরদাবি জানাচ্ছি।