বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
আাড়াইহাজারে মেধাবী এক স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ করে ধর্ষণের ঘটনার আট বছর পর শিল্পপতি রউফ মিয়ার ছেলে ধর্ষক নাঈম হাসান (২৮) কে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। (১৭ সেপ্টেম্বর) বৃহস্পতিবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ শাহীন চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে অপহরণ ও নারী ও শিশু নির্যাতন উভয় অভিযোগে পৃথকভাবে যাবজ্জীবন কারাদন্ড সহ অভিযুক্তকে দুই লাখ করে চার লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার চার লাখ টাকার মধ্যে দুই লাখ টাকা ভুক্তভোগী স্কুল ছাত্রীর পরিবারকে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে আদালত। রায়ের সময় ধর্ষক নাঈম আদালতে উপস্থিত ছিল না। ধর্ষিতার বাবা বাদি হয়ে মামলা করেছিলেন। দন্ডিত নাঈম হাসান স্থানীয় ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের উজান গোবিন্দী গ্রামে আব্দুর রউফ (রূপ মিয়ার) ছেলে ও ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের দুইবারের চেয়ারম্যান লাক মিয়ার ভাতিজা।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাজী আব্দুস সেলিম মোবাইল ফোনে জানান, ধর্ষণের ঘটনায় যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান সহ দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
একই সঙ্গে অপরহণের ঘটনায়ও যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা-২০১০ সালের নারায়ণগঞ্জ জেলায় পঞ্চম স্থান অর্জনকারী ও ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পাওয়া উজান গোবিন্দী বিনাইরচর উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রীকে ২০১২ সালে ৭ এপ্রিল সকালে স্কুলে যাওয়ার পথে রাস্তা থেকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে রূপগঞ্জের পারাগাঁও এলাকায় নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। পরে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় তার বাড়ির সামনের রাস্তায় ফেলে বীরদর্পে চলে যায় ধর্ষক নাইম হাসান। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সেলে রেখে চিকিৎসা প্রদান করেন। পরে ধর্ষিতার বাবা বাদি হয়ে অপহরণ ও ধর্ষণের দায়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে আড়াইহাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৬ (৪) ১২ইং। নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু মামলা নং- ৫/২০২০ইং। বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করে আদালত।
অভিযোগ রয়েছে, মামলা দায়েরের পর থেকে ধর্ষিতার পরিবারকে মামলা তুলে নিতে নানাভাবে হুমকী-ধমকি দেয়া হচ্ছিল। এছাড়াও এ মামলায় যারা সাক্ষী দিয়েছে তাদেরকে বিভিন্নভাবে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। এছাড়াও জামিনে প্রতারণা আশ্রয় সহ বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য দিয়ে আদালতকে বিভ্রান্তি করার চেষ্টা করে কালক্ষেপন করতে থাকে। এক পর্যায়ে উচ্চ আদালতে মামলার কার্যক্রম ফের স্থগিতের আবেদন করলে গত সপ্তাহে চেম্বার জজ তা খারিজ করে দেন।