বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নারায়ণগঞ্জের সকল সংসদ সদস্য, সিটি মেয়র, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সহ সকল জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে এক টেবিলে আলোচনার বসার আহবান রেখে মুরুব্বি হিসেবে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনকে দায়িত্ব নেওয়ার আহবান জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। যেদিন সবাইকে নিয়ে এক টেবিলে বসার আয়োজন হবে সেদিন নারায়ণগঞ্জবাসী ঈদের আনন্দ উদযাপন করবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এদিকে জেলা পরিষদের প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করা মহানগর আওয়ামীলীগের সভাটি সংসদ সদস্যের দেওয়া দায়িত্বটি পালন করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জেলা পরিষদকে একটি দুর্নীতিমুক্ত সেবা মূলক প্রতিষ্ঠানের রূপ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
সোমবার জানুয়ারী বিকেলে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও সদস্যদের দায়িত গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এছাড়াও তিনি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন। একই সঙ্গে দায়িত্ব নেওয়া সদস্যদের চেয়ারম্যানের উন্নয়ন কাজে সহযোগিতার করার আহবান জানান।
সেলিম ওসমান বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে প্ল্যান থাকলেও কাজ করার সম্ভব হয় না। আমি শুরু থেকে বলে আসছি নারায়ণগঞ্জের সকল সংসদ সদস্য, সিটি করপোরেশনের মেয়র সকল জনপ্রতিনিধি এক টেবিলে না বসলে নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। আমি বহুবার আহবান রেখেছি। এখন আমার গুরু সকলের মুরুব্বি আনোয়ার ভাইকে এই দায়িত্বটা নেওয়ার অনুরোধ রাখলাম। উনি সবাইকে নিয়ে এক টেবিলে বসার আয়োজন করবেন। যেদিন সবাইকে নিয়ে এক টেবিলে বসার আয়োজন হবে ওই দিন নারায়ণগঞ্জের মানুষের ঈদের আনন্দ উপভোগ করবেন।
সকল জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে আহবান রেখে তিনি বলেন, আমরা যারা জনপ্রতিনিধি রয়েছি আমাদের সবাইকে জনগনের জন্য কাজ করতে হবে। পিঠ ভরে জনগনের গালি খাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। চেয়ারে বসে কোন প্রকার দম্ভো করলে চলবে না। আমি আশা করবো আনোয়ার ভাইয়ের মাঝেও এটা কখনো আসবে না। একজনের সাথে আরেকজনের ব্যক্তিগত রাগ থাকতে পারে। ব্যক্তিগত রাগের জন্য নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নের কোন প্রকার ক্ষতি করা যাবে না এবং এই ক্ষমতা কারো নেই। এখন শুধু একই উপায় আছে হয় ক্ষমা চাওয়া নয়তো ক্ষমা করে দেওয়া। এর চেয়ে আর বেশি কিছু করতে হবে না। সবাই এক টেবিলে বসলেই দেখবেন নারায়ণগঞ্জের হারানো ঐতিহ্য না অত্যাধুনিক নারায়ণগঞ্জ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ রেখে তিনি বলেন, আপনারা সব সময় নারায়ণগঞ্জের পজিটিভ দিক গুলো তুলে ধরবেন। তাহলে আমাদের উন্নয়ন কাজের পথ আরো সহজ ও তরান্বিত হবে। আমার প্রাণ যতদিন চলবে আমি ততদিন পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের মানুষের উন্নয়নে কাজ করে যাবো।
আনোয়ার হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, যখন আমি দুশ্চিন্তায় অসুস্থ্য হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলাম তখন আমাকে টেলিফোন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন দেন। বাংলাদেশের কোন জেলাতে এমন হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। আমার চাওয়া পাওয়ার আর কিছু নাই। আর যারা আমাকে আজকে এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছে তাদেরকে আমি চিরজীবন ভালোবেসে যাবো। জেলা পরিষদকে আমি একটি দুর্নীতিমুক্ত সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের রূপ দিবো। এ জন্য আমি সকল সংসদ সদস্য, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ জেলা পরিষদের কর্মকর্তাদের সহযোগীতা কামনা করছি।
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খালেদ মামুন চৌধুরির সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন আনোয়ার হোসেনের সহধর্মিনী সুলতানা আনোয়ার, নারায়ণগঞ্জের সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হোসনে আরা বেগম বাবলী, মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল, কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ, শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রমিক উন্নয়ন ও কল্যান বিষয়ক সম্পাদক কাউসার আহম্মেদ পলাশ, ফতুল্লা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বক্তাবলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শওকত আলী, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস, সিদ্ধিরগঞ্জ থান আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের নব নির্বাচিত সদস্য মজিবুর রহমান, জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক ও পরিষদের নব নির্বাচিত ৬নং ওয়ার্ড মেম্বার আবুল জাহের, নারী সদস্য মাহমুদা মালা, সহ নব নির্বাচিত অন্যনা সদস্য ও কর্মকর্তারা।