বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
লাইসেন্স জব্দ হওয়ার পরও অদৃশ্য ক্ষমতা বলে এখনো বিনা বাধায় চলছে নারায়ণগঞ্জ বন্দরের পরকীয়া প্রেমের ঘাটি খ্যাত মধুকুঞ্জ শাইরা গার্ডেন। মদনপুরস্থ আন্দিরপাড় এলাকায় গড়ে ওঠার পর থেকেই গার্ডেনটি যেন এলাকাবাসী বিষফোঁড়ায় পরিণত হয়ে উঠেছে। স্থানীয় প্রশাসন ও কতিপয় প্রভাবশালীদের শেল্টার থাকায় গার্ডেনটির বিরুদ্ধে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে গঠনমূলক প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরও কোন প্রতিকার মিলছেনা। যে কারণে জেলা প্রশাসনের একটি ভ্রাম্যমান টীম অভিযান চালিয়ে নারীদের পোশাক এমনকি অনৈতিক কাজে ব্যবহৃত কনডম উদ্ধারের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স জব্দ করার পরও নির্বিঘেœ তারা তাদের নিষিদ্ধ বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।
বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী প্রেমিকযুগল ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রেমিকজুটি এসব শুটিং ও পিকনিক স্পটে লুকোচুরি করে প্রেম নিবেদন এবং অসামাজিক কাজ করতে এসে পুলিশ, স্থানীয় প্রভাবশালী ফিটিংবাজদের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব খুঁইয়ে সামাজিকভাবেও হেয়প্রতিপন্ন হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। একটি অসাধুচক্র এসব স্পটে মোটরসাইকেলে ঘুরে ঘুরে মোটা অংকের ফিটিং বাণিজ্য করে থাকে। এই চক্রের পরিচিত কেউ আশপাশে না থাকলে তারা ছিনতাইকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে আগন্তুকের টাকা-পয়সা, মোবাইল ও স্বর্ণালংকার লুটে নেয়। প্রেমিকযুগলের আপত্তিকর ছবি মোবাইলে ধারণ করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইলও করা হয়। ফিটিংচক্র প্রেমিকযুগলকে আটকে রেখে তাদের আত্মীয়-স্বজনকে মোবাইলে খবর দিয়ে ডেকে এনে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ারও অভিযোগও রয়েছে। এই প্রতারকচক্র প্রেমিক যুগলকে মওকামত ধরা মাত্রই চড়থাপ্পড় দিয়ে প্রথমে কাবু করে ফেলে। পরবর্তীতে চলে বিভিন্ন ধরনের আপত্তিকর ফটোসেশনের কাজ। অনেকেই সুস্থ বিনোদন বা ঘুরতে গিয়েও এসব ফিটিংবাজদের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হারান।
আন্দিরাপাড় এলাকায় ঘুরে জানা গেছে, শুটিং স্পটের বহিরাগত দুষ্ট লোকদের অসামাজিক কর্মকান্ডের কারণে এখানকার স্থানীয় ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দিতে অভিভাবকরা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। আশপাশ এলাকার মানুষ মনে করেন, এখানকার ছেলে-মেয়ে মাত্রই অসামাজিক কাজে লিপ্ত। বাস্তবে আন্দিরপাড়ের মানুষ তুলনামূলকভাবে দেশের অন্যসব এলাকার চেয়ে ভালো। তারপরও এসব কলংকিত শুটিং স্পট তাদের সামাজিক ও ব্যক্তি জীবনে চরম কালিমা লেপন করছে। এসব নিয়ে আন্দিরপাড়বাসীর আক্ষেপের শেষ নেই।
ফিরোজা বেগম নামের এক মহিলা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘রূপগঞ্জ থেকে আমার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়ের জন্য বিয়ের প্রস্তাব এসেছিল। মেয়েকে ঢাকায় আমার বড় ছেলের বাসায় দেখে পাত্রপক্ষ পছন্দ করে বিয়ের দিন-তারিখ পর্যন্ত ঠিক করে গিয়েছিল। পরবর্তীতে পাত্রপক্ষ জানতে পারে আমার মেয়ের গ্রামের বাড়ি মদনপুরের আন্দিরপাড়ে। তারপর পাত্রপক্ষ মোবাইল ফোনে জানিয়ে দিয়েছে এ বিয়ে হবে না। কেন বিয়ে হবে না, ঘটকের মাধ্যমে জানতে চাইলে পাত্রপক্ষ ঘটককে জানিয়ে দেয় আন্দিরপাড়ের মেয়েরা নাকি খারাপ চরিত্রের।’ এভাবেই আন্দিরপাড়ের এলাকার মেয়েদের নামে এই মিথ্যা অপবাদের কারণে ক্ষোভের শেষ নেই এলাকাবাসীর। এলাকাবাসীর দাবি,নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন তথা প্রশাসনের উর্দ্ধতন মহলের তদন্তপূর্বত আশু পদক্ষেপ নেয়া জরুরী।