অর্থনৈতিকডেস্ক,বিজয় বার্তা ২৪
২১তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় এখন পর্যন্ত ভ্যাট প্রদানে এগিয়ে আছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো।
এর মধ্যে ভ্যাটদাতা হচ্ছে, দেশীয় ইলেকট্রিক, ইলেকট্রনিক্স ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। ইলেকট্রনিক্স পণ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে সনি। ফার্নিচার প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে, আক্তার, ব্রাদার্স, হাতিল এবং পার্টেক্স।
প্লাস্টিক পণ্যে এগিয়ে আছে আরএফএল। আর খাবারের স্টলের মধ্যে রয়েছে, অলিম্পিক, সিপি অন্যতম।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কাস্টমসের এক কর্মকর্তা রাইজিংবিডিকে বলেন, এবার ভ্যাট প্রদানে এগিয়ে আছে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো। কারণ বিদেশি প্রতিষ্ঠানের মালিকরা প্যাভিলিয়ন নিয়ে ছোট ছোট অনেক স্টলে ভাগ করে ভাড়া দিয়েছে। এছাড়া ভ্যাট আদায় করতে গেলে তারা গা ঢাকা দিয়েও থাকে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
মেলার ২৮তম এ পর্যন্ত ভ্যাট আদায় হয়েছে এক কোটি ৫০ লাখ টাকার কাছাকাছি, যা গত বছরের এই সময়ের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। মেলার শেষ দিন পর্যন্ত ভ্যাট আদায়ের পরিমাণ দুই কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কাস্টমস ও ভ্যাট কর্মকর্তারা।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের মেলায় শুরু থেকেই ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের আগমনে মুখর ছিল মেলাচত্বর। বেচাবিক্রিও ছিল জমজমাট।
কাস্টমস ও ভ্যাট এক্সাইজের ডেপুটি কমিশনার রাকিবুল হাসান বলেন, এ বছর মেলায় শুরু থেকে বিপুলসংখ্যক ক্রেতা-দর্শনার্থী মেলায় আসছে এবং সাধ্যমতো কেনাকাটা করছেন। ওয়ালটন এ বছরও ভ্যাট প্রদানে এগিয়ে রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে প্রতিদিন নিয়মতান্ত্রিকভাবে ভ্যাট প্রদান করছে।
তিনি আরো বলেন, ফার্নিচার শিল্পে এ বছর ১০ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে, যা আগের বছরগুলো ছিল ৪ শতাংশ। এতে করে, হাতিল, নাদিয়া, আকতার ফার্নিচার থেকেও ভ্যাট আদায়ের প্রবৃদ্ধি সন্তোষজনক।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিরাজ করায় এবার ক্রেতা সমাগম বেড়েছে। আশা করছি, গতবারের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি ভ্যাট আদায় হবে।
গত বছর মেলার ২৮তম দিন পর্যন্ত ভ্যাট আদায় হয়েছিল ৬৬ লাখ টাকার ওপরে। এর মধ্যে দেশীয় ইলেক্ট্রনিক্স ও অটোমোবাইল প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন ভ্যাট দিয়েছিল ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৯০৫ টাকা। এ বছর ওয়ালটন এখন পর্যন্ত দশ লাখ টাকারও বেশি ভ্যাট প্রদান করেছে, যা একক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সর্বোচ্চ।
মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, বড় প্রতিষ্ঠানগুলো ছাড়া অধিকাংশ ছোট ও মাঝারিমানের স্টলগুলো বিক্রির ওপর ক্রেতাদের কাছ থেকে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভ্যাট আদায় করছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও ম্যানুয়াল পদ্ধতি অনুসরণ করায় এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিন্তু বড় প্রতিষ্ঠানগুলো ইসিআর মেশিন ও সফটওয়্যার বা পস পদ্ধতিতে ভ্যাট আদায় করছে। এতে করে এসব প্রতিষ্ঠানে ভ্যাট আদায় ও প্রদানে স্বচ্ছতা রয়েছে বলে মনে করছেন মেলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজস্ব কর্মকর্তারা।
মেলা ঘুরে দেখা গেছে, এবারের মেলায় দেশীয় পণ্যের প্রতি ক্রেতা-দর্শনার্থীদের আগ্রহ বেশি। ইলেক্ট্রনিক্স পণের মধ্যে ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে প্রচুর ভিড় লক্ষ করা গেছে। স্মাট ফোন, এলইডি টিভি, মোটরসাইকেল, ফ্রিজ ও নানা ধরনের ইলেক্ট্রনিক্স গৃহস্থলী পণ্য এখানে বেশি বিক্রি হচ্ছে।
ওয়ালটন ছাড়াও সনি র্যাংগস, মাইওয়ান, কনকা ও যমুনা ইলেক্ট্রনিক্স বাণিজ্য মেলায় নতুন নতুন পণ্য নিয়ে মেলায় এসেছে। এছাড়া ফার্নিচার, ক্রোকারিজ আইটেম, প্লাস্টিক পণ্য, প্রসাধনী এবং পোশাক পণ্যের সমাহার ঘটেছে এবারের মেলায়। যে কারণে মেলা উদ্বোধনের পর থেকেই ভ্যাট আদায়ের প্রবৃদ্ধিও ইতিবাচক।
উল্লেখ্য, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) আয়োজিত এ মেলা চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলার কার্যক্রম চলছে।