বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
বন্দরে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যমান পানির সমস্যা সমাধানের জন্য এলাকাবাসীর কাছ থেকে এক মাসের সময় চেয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিটি এলাকায় বিদ্যমান পানির সমস্যা সমাধানে তিনি দলমত নির্বিশেষে সকলের সহযোগীতা কামনা করেছেন। সেই লক্ষ্যে শনিবার ৩০ জুন ৪২নং লক্ষন খোলা (উত্তর) সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে একটি ডিপটিউবওয়েল স্থাপন কাজের উদ্বোধন করেন। তাঁর ব্যক্তিগত তহবিল থেকে উক্ত ডিপ টিউবওয়েলটি স্থাপনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বিদ্যমান পানির সমস্যা সম্পূর্ন ভাবে সমাধান করতে যতগুলো সংখ্যক ডিপ টিউবওয়েল স্থাপনের প্রয়োজন হবে তাঁর সব গুলো আগামী এক মাসের মধ্যে স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন এমপি সেলিম ওসমান। এছাড়াও বন্দরে সিটি কর্পোরেশন এলাকার ৯টি ওয়ার্ডের প্রত্যেক কাউন্সিলরের মাধ্যমে ১০টি করে টিউবওয়েল(চাপকল) দেওয়া ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
এর আগে বিকেল সাড়ে ৩টায় সিটি কর্পোরেশনের ২৫নং ওয়ার্ডের সোমবাইরা বাজার এলাকায় ২৪, ২৫ ও ২৬নং ওয়ার্ড এলাকায় বিদ্যমান পানির সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে এলাকাবাসীর সাথে মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সেলিম ওসমান বলেন, রমজান মাসে আপনারা খাবার পানির সমস্যা ভোগ করেছেন। বিষয়টি আমাকে আরো আগে জানালে হয়তো আপনাদের রমজান মাসে পানির কষ্ট করতে হতো না। কোন দলীয় বিবেচনায় নয়, আগামী নির্বাচনে ভোট পাওয়ার উদ্দেশ্যে নয় শুধুমাত্র জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব থেকে এবং আপনাদের সমস্যা সমাধানে আমি এখানে এসেছি। সমস্যা সমাধানের জন্য আমি আপনাদের কাছে ১ মাসের সময় চাই। আর প্রত্যেক এলাকায় দলমত নির্বিশেষে সকলের সহযোগীতা চাই। নিজেদের মাঝে কাদাঁ ছুড়াছুড়ি করে এলাকার উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হয় এমন কোন কাজ করবেন না। আগামীতে এই আসনে কে দায়িত্ব নিবেন তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই সিদ্ধান্ত দিবেন। উনি যাকে দায়িত্ব দিবেন আগামীতে তিনিই নির্বাচন করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই এই আসনে নৌকার উপর লাঙ্গল তুলে দিয়ে ছিলেন। আজকে যারা এই আসন থেকে নৌকা মার্কা চাইছেন প্রার্থী হতে চাইছেন। অতীতে তারাই কিন্তু আপনাদের কাছে লাঙ্গলের জন্য ভোট চেয়ে ছিলেন। আমরা কে থাকলাম না থাকলাম সেটা বড় কথা নয়। তবে আমি চাই আগামী নির্বাচনে যেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারো প্রধানমন্ত্রী হয়ে বাংলাদেশের দায়িত্ব নিতে পারেন।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, বন্দরে অনেক এলাকার জনপ্রতিনিধি রয়েছে যারা বিএনপির করেন। বিভিন্ন সময় তাদের আটকের ফলে এলাকার উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হয়। আমি থানা পুলিশের কাছে অনুরোধ করবো শুধু কাউকে হয়রানী করবেন না। বিএনপি করে বলেই অযুহাত পেলেই তাদের হয়রানী করবেন না। মামলা হলে জামিনের ব্যবস্থা রয়েছে। যতক্ষন পর্যন্ত চাক্ষস প্রমান না পাবেন ততক্ষন পর্যন্ত জনপ্রতিনিধিদের গ্রেপ্তার করবেন না।
অপরদিকে জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে বিএনপি দলীয় সমর্থকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নিজের ভুলের জন্য ক্ষমা চাইলে আল্লাহ মাফ করে দেন। আপনারা জনগনের কাজ করতে জনগনের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। তাই আসুন দলমত নির্বিশেষে সবাইকে সাথে নিয়ে জনগনের কাজ করুন এলাকার উন্নয়ন কাজ করুন। কোন প্রকার ধংসাত্মক কাজে সম্পৃক্ত হবে না। রাজনীতি করবেন নির্বাচনের সময়। নির্বাচন এখনো ৬ মাসি বাকি আছে। এরআগে এলাকার উন্নয়নে কাজ করবেন উন্নয়ন নিয়ে কোন রাজনীতি নয়।
এলাকার উন্নয়ন সম্পর্কে তিনি বলেন, আমার হাতে আরো ৩ মাস সময় আছে এলাকার উন্নয়ন করার। এ সময় আপনারা আরো বেশ কয়েকটি দৃশ্যমান উন্নয়নের খবর পাবেন। আরো নতুন নতুন প্রকল্প আসবে। আমি সংসদ সদস্য হিসেবে নয় জনগনের একজন গোলাম হিসেবে আপনাদের পাশে থাকতে চাই। ২৬ জুন সংবর্ধনা অনুষ্ঠান কাউন্সিলর সুলতান যেভাবে পানির সমস্যার কথা তুলে ধরে ছিলেন আমি চাই সেই ভাবে সবাই আমার কাছে সমস্যার কথা তুলে ধরুক। ফেরী ঘাটে অনেকেই আমাকে বলেছেন যাতে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ফেরী চালু থাকে। ফেরী ঘাটে কিছু লাইটের প্রয়োজন, ফেরীর জন্য ভাল ইঞ্জিনের প্রয়োজন, ৫নং ঘাট- বন্দর ময়মনসিংহ পট্টি ঘাটে ফেরী উদ্বোধন হবে। আমি আপনাদের কাছে বলবো আপনাদের এলাকার শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদকে বলেন যাতে উনি আমাকে একটু সহযোগীতা করেন তাহলে দেখবেন রাত ৮টা পর্যন্ত না ২৪ ঘন্টাই নবীগঞ্জ ঘাটে ফেরী চলবে। আদমজী জুট মিল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সেখানে ২৫ হাজার শ্রমিক কাজ করতো। বর্তমানে সেখানে ইপিজেড হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছিল বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।
২৫নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি শফিউদ্দিন এর সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক আবুল জাহের, বন্দর উপজেলার চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল, ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু, ২৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামসুজ্জোহা, ২৫নং ওয়ার্ড এনায়েত হোসেন, ২৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আফজাল হোসেন, স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা শহীদুল্লাহ মাস্টার সহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।