বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমেদ নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি’র কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, দেশে ক্রান্তিকালে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আবির্ভাব হয়েছিলো। একবার ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ যখন দেশে ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে, দিশেহারা জাতিকে নেতৃত্ব দেয়ার মতো কেউ ছিলো না। ঠিক তখনই যুবক মেজর জিয়াউর রহমান বিদ্রোহ করে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ৭৫ এর ৩ নভেম্বর আরেকবার তিনি মানুষের সাহায্যে পাশে দাড়িয়েছিলেন। ৭ নভেম্বর সিপাহী জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে তাকে ক্ষমতায় বসানো হয়। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। ২০১৪ সালে দেশে যে নির্বাচন হয়েছে, সেটি ছিল অবৈধ নির্বাচন। যেখানে সাধারণ মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। এখন এই অবৈধ সরকার জনগনকে নানা ভাবে নির্যাতন করে যাচ্ছে।
শনিবার (২০ জানুয়ারী) দুপুরে বন্দরের সোনাকান্দায় হ্যাভেন কমিউনিটি সেন্টারে মহানগর বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক সাংসদ এড. আবুল কালাম এর সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, আওয়অমী লীগের রেকর্ড খূব খারাপ। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তারা হাজার হাজার কর্মীকে হত্যা করেছে। তৎকালীন সময় একাজে তারা রক্ষীবাহিনী প্রতিষ্ঠা করেছিল। তারা যা খুশি তা করতে পারতো, কোন জবাবদিহীতা ছিল না। সে সময় এদেশের ২৪ হাজার যুবক কে হত্যা করেছে। সারা ঢাকা শহরে মৃতদেহ পড়েছিল। সরকার দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ হয়েই এই হত্যাযজ্ঞ করেছিল। তাদের দুশাষন ও দুর্ণীতির কারণে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভিক্ষের মারা গেছে। শেখ মুজিবকে কে হত্যা করলো? আওয়ামী লীগ। এই ঘটনায় যারা জড়িত তারা এখনো সংসদে আছে। এমন অনেকেই ওইদিন দলের সাথে বিশ^াস ঘাতকতা করেছিল। একই চিন্তা ধারায় বর্তমান আওয়ামী লীগ নির্বাচিত না হয়েও দেশে একদলীয় শাসন কায়েম করেছে। এবার ছাড় দেয়া হবে না। এবার দেশে গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দলীয় সরকারের অর্ধীনে আমরা নির্বাচন করতে দিব না। ফাকা মাঠে আর গোল দিতে দিব না। আমাদের কতোদিন বাড়ির মধ্যে আটকে রাখবেন। ধৈর্য্য ধরেন। যে বাধ তারা তৈরি করেছে। সে বাধ জনগণের জোয়ারে ভেঙে যাবে।
এ সময় তিনি বর্তমান সরকারের কর্মকান্ডর বিষয় উল্লেখ্য করে বলেন, সর্বত্রই আমাদের উপড়ে অত্যাচার নির্যাতন, নিপীড়ন চলছে। এখন আমাদের শুষ্ঠ ভাবে সভা সমাবেশও করতে দেওয়া হচ্ছে না। আমার আইনপেশায় আমি শুনিনাই ১ দিনের জন্য কাউকে জামিন দেয়া হয়। অথচ খালেদা জিয়াকে ২৪ ঘন্টার জন্য জামিন দেয়া হয়। কতো নিষ্ঠুর তারা। তবে আমি বলেছি, খালেদা জিয়া যতোদিন এই অবস্থায় থাকবে, তোদিন তারজনপ্রিয়তা বাড়বে। বেগম জিয়াই আগামী দিনের প্রধাণমন্ত্রী। কারণ দেশের মানুষ এ সরকারের পরিবর্তন চায়। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচন স্থগিত করে ধরা পড়ে গেছে। যে দেশের মানুষ তাদের আর চায় না। এমন একটা সময় আসবে, যখন খালেদা জিয়া গণতন্ত্র রক্ষার জন্য একটি কর্মসূচী দিবেনে। সেই কর্মসূচীই হবে শেষ কর্মসূচী। কোন সরকারই শেষ সরকার নয়। এই সরকারও শেষ সরকার নয়। জনগণই হলো আমাদের শক্তি। জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। এক দফা এক দাবী, আন্দোলনে নামলে কোন ছাড় দিবো না। ডু অর ডাই ম্যাচ হবে। হয় বাঁচবো, নয় মরবো। তবুও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো। আন্দোলণ ছাড়া তাদের কে সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধ্য করা যাবে না। সবাইকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান।
আবুল কালাম বলেন, আজকে যদি বলতে হয় বাংলাদেশে রাজনীতি আছে, রাজনৈকি দল আছে, সবকিছুর প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। বাংলাদেশে যতো রাজনৈতিক দল আছে, সবকিছুর প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। দলকে সুসংগঠিত করার জন্য তিনি সারা দেশের সকল নেতৃবৃন্দকে একত্রিত করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা। আমি মনোনয়ন প্রার্থী। ৬ বার মনোনয়ন পেয়ে ৩বার নির্বাচিত হয়েছি। এই দেশের সন্ত্রাস, গুম, খুন, হামলা মামলা বিলুপ্তি করতে গেলে খালেদা জিয়ার সরকারের বিকল্প নাই। এই সরকার সোজা আঙুরে ঘি উঠতে দিবে না। আন্দোলন সংগ্রামে মাঠে থাকার পাশাপাশি নির্বাচনেও মাঠে থাকতে হবে। এ দেশে গণতন্ত্র নাই। বাক স্বাধীনতা নাই। বিচার বিভাগ অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছে। কোথায় আমাদের অধিকার। কেন আমরা নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি না। এসব অধিকার ফিরে পেতে বিএনপি সরকারকে পূনরায় নির্বাচিত করতে হবে। শহীদ জিয়া যোদ্ধা নয়, এমন নির্লজ্জ রাজনীতি করতে পারে, তারা কখনো গণতান্ত্রিক ধারায় রাজনীতি করে বলে মনে হয় না। আন্দোলণ এবং নির্বাচন কোনটাতেই নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন পিছিয়ে নেই। আমি নেত্রীকে আশ^স্ত করে বলতে চাই, আমি না থাকলেও আমার নেতৃত্ব থাকবে।
এ সময় তিনি আরও বলেন, আমাদের একজন কর্মী আছে, যিনি নিজেকে নিজে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করে ফেলেছেন। উনার বক্তব্যে তেমন কথাই ফুটে উঠে। উনি স্বঘোষিত প্রার্থী। উনি এর আগের সম্মেলনে উপস্তিত ছিলেন না। এ সম্মেলনেও অনুপস্থিত।
মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল বলেন, আজকের এই কর্মীসম্মেলণে অংশগ্রহণই প্রমাণ করেছে, নারায়ণগঞ্জ হচ্ছে বিএনপি’র ঘাটি। আগামী নির্বাচনে আমাদের করণীয় নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতা যে দিকনির্দেশনা দিবেন, সেটি পালন করতে হবে।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন, মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি এড. জাকির হোসেন, আতাউর রহমান মুকুল, হাজী নুরুউদ্দিন, এড. সরকার হুমায়ুন কবির, ফখরুল ইসলাম মজনু, আয়সা সাত্তার, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সবুর সেন্টু, এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আওলাদ হোসেন, দপ্তর সম্পাদক হান্নান সরকার, সুলতান মাহমুদ, বন্দর থানা বিএনপি নেতা এ্যাড. আনিসুর রহমান মোল্লা, সাবেক ছাত্রনেতা আনোয়ার হোসেন আনু, আরিফ আহম্মেদ গোগা, মহানগর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সরকার আলম, মনোয়ার হোসেন শোখন,মহানগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবুল কায়সার আশা সহ মহানগর বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।