বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
দেশের মূল ধারার রাজনীতি থেকে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করতে গোপন ষড়যন্ত্রের পরিবর্তে এখন প্রকাশ্যেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এর মাধ্যমে বহুদলীয় গণতন্ত্র বিলীন করে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করার ষড়যন্ত্র চলছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদারের ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকী ও প্রয়াত নেতা ফজলুর রহমান পটলের আত্মার মাগফিরাত কামনায় এ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে বিএনপি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার জন্য আজকে যে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে, তা এখন আর গোপনে চলছে না। প্রকাশ্যেই আওয়ামী লীগের নেতা-মন্ত্রীরা হুমকি দিচ্ছেন, যে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে।’
‘বিএনপির মতো একটি গণতান্ত্রিক শক্তি যারা দীর্ঘদিন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছে, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে; সেই দলটিকে আজকে নির্মুল করে দেওয়ার যে ঘোষণা আওয়ামী লীগের কিছু কিছু নেতা দিচ্ছেন, তাতে প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে তারা বিএনপিকে মুল ধারার রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে চায়’, বলেন বিএনপির মহাসচিব।
বিএনপিকে ‘নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার’ এই ‘ষড়যন্ত্র’ দেশের সব মহলের জন্য উদ্বেগের বিষয় বলেও উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল।
‘এটি শুধু বিএনপি নয়, সব গণতান্ত্রিক শক্তি এবং দেশের জনগণের জন্য একটি উদ্বেগের বিষয়। তাহলে কি এই সরকার বাংলাদেশে থেকে বহুদলীয় রাজনীতি ধ্বংস করে আবার তাদের আগের যে স্বপ্ন সেই একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে চায়?, প্রশ্ন তোলেন তিনি।
আওয়ামী লীগ জঙ্গিবাদ নির্মুল চায় না, এ মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, তাদের কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে জঙ্গিবাদের আরো প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। যাদের জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তাদের বিচারের মুখোমুখি না করে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলা হচ্ছে। এই বিষয়টিকে হালকা করে দেখার উপায় নেই।
জঙ্গিবাদের সঙ্গে বিএনপিকে জড়িয়ে ক্ষমতাসীনদের দেওয়া বক্তব্য নাকচ করে দিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা এসব কথা বললেও কখনো তা প্রমাণ করতে পারেনি। বরং যেসব জঙ্গি ধরা পড়ছে তাদের মধ্যে অনেকে আছেন, যাদের পিতামাতা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত সরকারের মিথ্যাচার দিয়ে এটি প্রতিরোধ করা যাবে না বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, সেজন্য জনগণকে শক্তিশালী করতে হবে, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে এবং ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে ফের জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
দল সংকটকাল পার করছে জানিয়ে নেতা-কর্মীদের বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।
দলের ত্রান্তিকালে প্রয়াত মহাসচিব সালাম তালুকদারের দায়িত্বশীল ভূমিকার কথা স্মরণ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তিনি দলকে ঐক্যবদ্ধ ও গতিশীল করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিলেন। আজ ১৭ বছর পর দলের সবচেয়ে বড় দুর্দিনে এই নেতার অভাব অনুভব করছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, সালাম তালুকদার স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন। তার মেধা, প্রজ্ঞা ও দৃঢ়তা অনুকরণীয় ছিল।
দোয়া মাহফিলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সহ প্রশিক্ষণ বিষয়ব সম্পাদক ড. মোরর্শেদ হাসান খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
