বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কক্সবাজারে যাওয়ার খবরে উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। নারায়ণগঞ্জে জেলা সাধারণ সম্পাদক মামুন মাহমুদের নেতৃত্বে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে নেতাকর্মীদের ঢল নামবে বলে জানান সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপি নেতা রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ। নেতাকর্মীদের মাঠে উজ্জীবিত রাখতে পাশাপাশি কাজ করছেন থানা বিএনপি ও ওয়ার্ড যুবদল নেতা সোহেল। গত রোববার রাত থেকেই নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে সরগরম হয়ে উঠেছে জেলা বিএনপি ও সিদ্ধিরগঞ্জ বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের কার্যালয়গুলো। প্রতিদিন কার্যালয়ে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রস্তুতি চলছে বেগম খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানানোর। আজ শনিবার সড়ক পথে ঢাকা থেকে কক্সবাজার পযন্ত জনস্্েরাত নামানোর পরিকল্পনা করছে বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা। ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড়ে কয়েক হাজার নেতাকর্মীদের সমাগমের আয়োজন করেছে জেলা বিএনপি। বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নেতাকর্মীরা ফের জানান দিতে চাইছে বিএনপির জনপ্রিয়তা।
দীর্ঘ তিন মাসের লন্ডন সফর শেষে গত ২২ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৫টায় দেশে ফিরেন বেগম খালেদা জিয়া। তার এই সফর চিকিৎসার জন্য হলেও সফরকে ঘিরে শুরু থেকেই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে রয়েছে ব্যাপক আগ্রহ এবং রাজনৈতিক মহলে চলছিল অনেক জল্পনা-কল্পনা। কারণ বিএনপি প্রধানের এই সফরের মাধ্যমে আসতে পারে আগামী নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা এবং আন্দোলন-সংগ্রামের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। তাই দেশে এসেই আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা মামলার জামিন নেন বেগম জিয়া। পরে দলের স্থায়ী কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে রোহিঙ্গাদের দেখতে আসার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন তিনি।
কর্মসূচি অনুযায়ী আজ শনিবার গুলশান কার্যালয় থেকে সকাল ১০টায় বের হয়ে সড়ক পথে নারায়ণগঞ্জের শিমরাইল মোড়ে নেতাকর্মীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়ে মাধ্যমে কক্সবারের দিকে রওনা হবেন। কক্সবাজার সার্কিট হাউজে রাত যাপন করবেন খালদা জিয়া। পরদিন ২৯ অক্টোবর রোববার সকাল ১১ টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ থেকে সড়ক পথে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওয়ানা দেবেন। ওই দিন বিকেল ৪টায় কক্সবাজার সার্কিট হাউজে উপস্থিতি হবেন এবং রাত যাপন করবেন। পরের দিন ৩০ অক্টোবর সোমবার সকাল ১০ টায় কক্সবাজার সার্কিট হাউজ থেকে উখিয়া উপজেলার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের উদ্দেশে যাত্রা করবেন। সকাল ১১ টায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছে বালুখালী পানবাজার ড্যাব পরিচালিত মেডিকেল ক্যাম্প, বালুখালী-২ রোহিঙ্গা ক্যাম্প, গয়ালমারা রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও জামতলী রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন ও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করবেন। সেখান থেকে দুপুর ২ টায় কক্সবাজার সার্কিট হাউজের উদ্দেশে রওয়ানা দিবেন। পরে বিকেল ৪ টায় কক্সবাজার সার্কিট হাউজ থেকে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের উদ্দেশে যাত্রা করবেন। সেদিনও চট্টগ্রামে রাত্র যাপন করার কথা রয়েছে।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মামুন মাহমুদ জানিয়েছেন, বেগম খালেদা জিয়া কক্সবাজারে যাবেন সেই লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জে ২৫ কি.মি. সীমানা নেতাকর্মীদের দ্বারা কানায় কানায় পরিপূর্ণ থাকবে। তিল পরিমান জায়গা ফাঁকা থাকবে না। হাজার হাজার নেতাকর্মী বিএনপি নেত্রীকে স্বাগতম জানাবে। রাজপথে নারায়ণগঞ্জ ছাত্রদলের নেতৃত্ব দেবে রাজীব, মহিলা দলের একাংশের নেতৃত্ব দেবে নুর নাহার, অপরাংশের নেতৃত্ব দেবে রহিমা মায়া, শ্রমিক দলের নেতৃত্ব দেবে নাসির, যুবদলের নেতৃত্ব দেবে মোশারফ, স্বেচ্ছাসেবক দলের জাহিদ হাসান। কোন প্রকার বিশৃঙ্খলার সম্ভাবনা নেই। নেতাকর্মীদের সেমতে নির্দেশনা দেয়া আছে। তত্ত্ববধায়ক সরকারসহ যে কোন আন্দোলনের বিষয়ে নেত্রী যে নির্দেশনা দেবেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপি তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করবে। সড়ক পথে শো-ডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল ও মহিলাদলসহ বিএনপির জেলার নেতাদের উদ্যোগে এ শোডাউনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। মিয়ানমারের সেনাদের অব্যাহত নির্যাতনে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দেখতে আসবেন আমাদের প্রিয় নেত্রী। তাই দলের প্রত্যেক নেতা কর্মীদের সাথে নিয়ে অত্যান্ত সু-শৃঙ্খলভাবে সংবর্ধনা জানানো হবে। তবে এবার দলের নেতাকর্মীসহ সড়ক পথে সবস্তরের মানুষের ঢল নামবে বলে তিনি জানান। বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি। দেশনেত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া রোহিঙ্গাদের দেখতে আসবেন সে-খবরে দলের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে উঠেছেন। দলের চেয়ারপারসনকে সড়কপথে জনতার ¯্রােতের মাধ্যমে অভ্যর্থনা জানানো হবে। আমাদের নেতাকর্মীরা দেশনেত্রী আসার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন। বিএনপির মতো একইভাবে বেগম খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে অঙ্গসংগঠনগুলো। তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রকামী মানুষের ঐক্যের প্রতীক হলেন বেগম খালেদা জিয়া। সকলেই তার কক্সবাজারে আসার জন্য অপেক্ষা করছে। আওয়ামী লীগের দুঃশাসনে অতিষ্ট মানুষ তার দিকেই তাকিয়ে আছে। তিনি নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ ও ক্যাম্প পরিদর্শন করতে আসছেন। এটা কোনো দলীয় জনসভা নয়, তাই মানবতার নেত্রী হিসেবে সড়কে দাড়িয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে বিএনপির সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী তাকে অভ্যর্থনা জানাবে। সেভাবে প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে।