বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
আর মাত্র কয়েকদিন বাকি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি গঠন। পুরানো কমিটিকে বিদায় জানিয়ে আগামী ৩০ নভেম্বর গঠন হতে যাচ্ছে জেলা বিএনপির নতুন কমিটি। বর্তমান জেলা বিএনপির নেতাদের দীর্ঘ ৭ বছর ধরে নতুন কমিটি গঠন না করতে পারার ব্যর্থতায় অতিষ্ঠ হয়ে পরেছে নেতাকর্মীরা। তাই অধির আগ্রহে বসে আছে নতুন নেতৃত্বের অপেক্ষায় নারায়ণগঞ্জ বিএনপির তৃনমূল নেতৃবৃন্দ। তাদের মতে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও কেন্দ্রিয় বিএনপির নেতৃবৃন্দ নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নতুন কমিটিতে সৎ মেধাবী ও যোগ্য নেতাদের স্থান দিবেন। আর তাদের হাত ধরেই ঘুরে দাড়াবে বিএনপি। ত্যাগী নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে দলকে সুসংগঠিত করে বিএনপির হাতকে শক্তিশালী করবে নতুন নেতৃত্ব এমনই আশাবাদ ব্যক্ত করেন নারায়ণগঞ্জ বিএনপির তৃনমূল নেতৃবৃন্দ।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটিতে সভাপতি পদে দুই নেতার ও সাধারণ সম্পাদক পদে চার নেতার লড়াই শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই তারা স্ব স্ব পদে নির্বাচিত হতে কেন্দ্রিয় বিএনপিতে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন। জেলা বিএনপির কমিটিতে সভাপতি পদ প্রার্থী হিসেবে সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিন, জেলা বিএনপির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান এবং সাধারণ সম্পাদক পদ প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রিয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু, কেন্দ্রিয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য এফ এম ইকবাল, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদল নেতা আজিজুল হক আজিজ ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম সেন্টুর নাম গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র জমা দিয়েছেন বলে জানা যায়। সভাপতি পদে ও সাধারণ সম্পাদক পদে লড়াই করা এই ছয় নেতার কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে অবস্থান ভাল। তাই এই নেতাদের মধ্যে তুখোর লড়াই হবে বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা।
সভপতি পদ প্রাথী গিয়াসউদ্দিন ২০০১ সালে বিএনপিতে যোগদান করেন। পরে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জের বিএনপির রাজনীতিতে রয়েছেন। আরেকজন কাজী মনিরুজ্জামান কেন্দ্রিয় যুবদলে ছিলেন। এছাড়া তিনি বর্তমানে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করছেন।
সাধারণ সম্পাদক পদ প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু যুবদলের কেন্দ্রীয় সহ অর্থ বিষযক সম্পাদক পদে ও নির্বাহীর কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া বর্তমানে তিনি রুপগঞ্জ থানা বিএনপির রাজনীতি করছেন। এদিকে এফ এম ইকবাল ১৯৯০ সালে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে ছাত্রদলের রাজনীতির মধ্য দিয়ে বিএনপির রাজনীতি শুরু করেন। তিনি ঢাকসুর সিনেট সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এছাড়া তিনি কেন্দ্রীয় যুবদলের সমাজ কল্যান বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। আড়াইহাজার থানা ছাত্রদল ও যুবদলের গুরুত্বপূর্ন পদে দায়িদ্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি আড়াইহাজার থানা বিএনপির রাজনৈতিক কর্মকান্ডে সক্রিয় অবস্থানে রয়েছেন। আজিজুল হক আজিজ ১৯৯৫ সালে বিএনপির ছাত্রদল রাজনীতির মধ্য দিয়ে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। তিনি কেন্দ্রিয় ছাত্রদলের সহ-সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে তিনি সোনারগাঁ থানা বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে অবস্থান করছেন। মনিরুল আলম সেন্টু যুবদল করতেন ও বর্তমানে ফতুল্লা থানা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি জেলা বিএনপির কমিটিতে গুরুত্বপূর্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তিনি কুতুবপুর ইউনিয়ন থেকে তিনবার চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন।
উল্লেখ্য, আগামী ৩০ নভেম্বর বিএনপির সম্মেলন উপলক্ষে বিএনপির কেন্দ্রিয় নেতাদের নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যেসব জেলা ও মহানগর কমিটির মেয়াদ এর মধ্যে শেষ হয়েছে তাদের আগামী ৩০ নভেম্বর সম্মেলনের মধ্য দিয়ে কমিটি গঠনের সম্ভবনা রয়েছে। ২০০৯ সালের ২৫ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে অ্যাড. তৈমুর আলম খন্দকার ও সাধারণ সম্পাদক পদে কাজী মনিরুজ্জামান মনির নির্বাচিত হয়। এর পর তারা দীর্ঘ সাত বছরেও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেননি। তাই নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় কমিটি গঠনের সম্ভবনা রয়েছে। যেসব নেতাকর্মীরা দলের আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশ্রগ্রহন করেছেন ও দলের জন্য জেল ঝুলুম খেটে ত্যাগ স্বীকার করেছেন সেই সব নেতাদের নতুন কমিটিতে রাখা হবে বলে জানায় কেন্দ্রিয় বিএনপি। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটিতে সত্য মেধাবী তরুন নেতাদেরও অগ্রাধিকার বেশী দেওয়া হবে জানায় দলের কয়েক জন নেতা।