বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
করোনার গুচ্ছ সংক্রমনে বৃদ্ধি পাওয়া ভয়াবহতা রোধে জরুরী ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জে কভিড-১৯ পরীক্ষার ল্যাব স্থাপনের দাবী জানিয়েছেন এমপি শামীম ওসমান। নারায়ণগঞ্জে করোনা ভাইরাসের এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ঢাকায় নমুনা পাঠিয়ে পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে পেতে অনেক রোগী মারা যাচ্ছেন। আবার পুরো সিটি কর্পোরেশন এলাকার ২৭টি ওয়ার্ড থেকে প্রতিনিয়ত উপসর্গ নিয়ে রোগীরা করোনা পরীক্ষার জন্য সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগে ফোন দিয়েও কোন ফল পাচ্ছেন না। এমনকি টানা ৩/৪দিন ফোন দিয়েও তারা নমুনা সংগ্রহ করাতে পারছেন না সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে। তাই এই মুহুর্তে ল্যাব স্থাপনের জন্য জোর দাবী জানিয়েছেন শামীম ওসমান।
এদিকে নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত নামকরা ডায়াগনেস্টিক সেন্টার ও প্রাইভেট ক্লিনিকের মালিকদের কাছে নমুনা সংগ্রহের জন্য লোকবল চেয়ে শামীম ওসমান এমপি’র করা অনুরোধে অভুতপূর্ব সাড়া দিয়েছেন কর্তপক্ষ। নারায়ণগঞ্জ ক্লিনিক মালিক সমিতির সভাপতি ও বিএমএ’র সাবেক সভাপতি ডা.শাহনেওয়াজ চৌধুরী বিষয়টির সত্যতা স্বিকার করে জানিয়েছেন, এমপি শামীম ওমান আমাদের জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন ও সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগে করোনা উপসর্গ থাকা রোগীদের নমুনা পরীক্ষার জন্য লোকবল কম। তাই তার অনুরোধে আমরা বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করতে পেরেছি এবং তিনি আমাদের সকল প্রকার সহযোগীতারও আশ^াস দিয়েছেন।
এব্যাপারে শামীম ওসমান জানিয়েছেন, নারায়ণগঞ্জে এখন যে পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে এমন অবস্থায় ঢাকায় গিয়ে করোনার টেস্ট বা নমুনা স্যাম্পল পাঠিয়ে অপেক্ষা করার সময় না। স্যাম্পল কালেকশন করে রিপোর্ট পেতে পেতে রোগী মারা যাচ্ছে। তাছাড়া করোনার উপসর্গ নিয়ে কেউ কেউ মৃত্যুবরণ করলেও পরীক্ষার অভাবে তা সনাক্ত করে নিশ্চিৎ হওয়া যাচ্ছে না। মৃত্যুর পরে পরীক্ষা করে করোনা সনাক্তের কারণে নারায়ণগঞ্জে এর প্রাদুর্ভাব প্রবল ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা তৈরী হয়েছে। পাশাপাশি গণমাধ্যমে দেখছি, যাদের এই সময়ে সাধারন মানুষের জন্য সবচেয়ে বেশী দ্বায়িত্ব পালন করার কথা, জনগন যাদের কাছে এই সেবা পাওয়ার শত ভাগ অধিকার রাখ, সেই নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগই এখন রুগ্ন। প্রতিদিন আমার নির্বাচনী এলাকাসহ সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে বহু ফোন পাচ্ছি তারা নিজেদের নমুনা সংগ্রহ করাতে ফোন করেও কোন ফল পাচ্ছেন না। অনেকে চিৎকার করে কাদছেন , তাদের জন্য কিছুই করতে পারছি না কারণ নমুনা সংগ্রহ করার কাজ আমার জানা নেই। আমি স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের মহা পরিচালকের সাথে কথা বলেছি। নারায়ণগঞ্জে অতিসত্বর করোনা পরীক্ষার ল্যাব স্থাপনের দাবী জানিয়েছি। প্রয়োজনে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করবো ,কারণ নারায়ণগঞ্জ এর প্রতি তিনি যথেষ্ট কনসার্ন। মহাপরিচালক আমাকে আশ^স্ত করেছেন যে নমুনা সংগ্রহের ব্যাপারে তিনি আরো সক্রিয় ভুমিকা নিবেন। তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমি এটাও বলেছি যে, যদি নমুনা সংগ্রহ করার ব্যাপারে আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে কোন সুফল না পাওয়া যায় তবে গণবিস্ফোরণ ঘটলে এর দ্বায়দ্বায়িত্ব আপনাদেরই নিতে হবে।
শামীম ওসমান আরো বলেন, ইতিমধ্যেই আমি নারায়ণগঞ্জের সেরকারী ক্লিনিক মালিকদের সাথে, ডায়াগনেস্টিক কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। তাদের আমি এম্বুলেন্সসহ কয়েটি টিম করার অনুরোধ করেছি যেন নারায়ণগঞ্জে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ তারা আমার আহবানে সাড়া দিয়েছেন। আমি তাদের বলেছি প্রয়োজনে এম্বুলেন্স সহ সকল আনুষাঙ্গিক খরচ আমি ব্যক্তিগতভাবে বহন করবো কিন্তু এই ক্রান্তি লগ্নে আপনারা নারায়ণগঞ্জবাসীর পাশে থাকুন।
তিনি আরোও বলেন, ঘনবসতী ও শিল্পাঞ্চল হওয়ায় নারায়ণগঞ্জ ক্রমেই এক ভয়াবহ পরিণতির দিকে যাচ্ছে। যা সমগ্র দেশের জন্যও আতঙ্ক ও হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই জরুরী ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ল্যাব স্থাপনের জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি আমি আবারো জোরদাবী জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য করোনার সংক্রামণ প্রতিরোধে বুধবার থেকে পুরো নারায়ণগঞ্জ জেলাকে লকডাউন করেছে আইএসপিআর।