বিজয় বার্তা ২৪ ডট কম
নবান্ন বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শস্যোৎসব। নবান্ন উৎসব হল নতুন আমন ধান কাটার পর সেই ধান থেকে প্রস্তুত চালের প্রথম রান্না উপলক্ষে আয়োজিত উৎসব। প্রতি বছরের বাংলা সনের প্রথম অগ্রহায়নে এ উৎসব পালন করা হয়। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকলেই পরিবারের মানুষ নিয়ে এই নবান্ন উৎসব করে। যুগযুগ ধরে চলে আসা আনন্দের এ দিনটি পালনে এবারও নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের সদর উপজেলার আয়োজনে এই উৎসবের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানটি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানাধীন বক্তাবলীর কানাইনগরের মাঠে আয়োজন করা হয়।
এ যেন নানা রং এ রাঙ্গিয়ে তুলা হয়েছে সমস্ত মাঠ। কোথাও আবার বসেছে বাহারী আইটেমের পিঠা। এই অনুষ্ঠানে বাংলা সংস্কৃতির ঐতিহ্য বিয়ের পালকি, ধান মারাইয়ের যন্ত্রপাতী, মাটির আসবাবপত্র, লোক সংগীত ও নৃত্য সহ নানা আয়োজন করা হয়েছে এই দিনটিকে ঘিরে। দিনটি পালন করার জন্য কৃষকদের ঘরে ঘরে আনন্দের যেন কোন কমতি নেই। এ যেন অন্যরকম এক উৎসবের আমেজ। নবান্ন উৎসব-১৪২৬ উপলক্ষে আয়োজিত মেলায় দর্শনার্থীদের ভীড়্ও ছিল চোখে পড়ার মত। এইসব উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে ছুটে আসে নানা শ্রেনী পেশার মানুষ।
এসময় সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা বারিকের সভাপতিত্বে নবান্ন উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস, বক্তাবলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শকওত আলী, মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম, ফুতল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন সহ জেলা প্রশাসনের অন্যন্য কর্মকর্তা ও নানা শ্রেনী পেশার মানুষ। নবান্ন উপলক্ষে বক্তাবলীর মাঠে দর্শনার্থীদের পিঠা খেতে ও বিভিন্ন জিনিস পত্র ক্রয় করতে দেখা গেছে। এদিকে মেশিনে ধান মারাই করে উৎসবটির শুরু করেন জেলা প্রশাসক। পরে অনুষ্ঠানের বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন তিনি। কাবাডি খেলা, লোক গান আর নৃত্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এই নবান্ন উৎসব।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন বলেন, কৃষকরা আমাদের জন্য কষ্ট করে যে খাদ্য উৎপাদন করে তা নতুন প্রজম্মের মাঝে তুলে ধরা এবং কৃষকদের কাজে উৎসাহিত করার জন্য এই নবান্ন উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
ইউএনও নাহিদ বারিক বলেন, এই অনুষ্ঠানটি আমরা বক্তাবলীর কানাইনগরীর গ্রামে করেছি। এখানে আমরা লাঙ্গল রেখেছি কোদাল রেখেছি।কৃষকের সমস্ত উপকরন আমার এই উৎসবে রেখেছি। গ্রামের ঐতিহ্য ফুটিয়ে তুলেছি এখানে। এই নবান্ন উৎসবে কৃষকের সবজি রাখা হয়েছে। যাতে করে কৃষকরা তাদের ন্যায্য পাওনা টা পায়। আর এই অনুষ্ঠানে এসে যাতে নতুন প্রজম্ম কৃষকরা কতটা কস্ট করে ফসল উৎপাদন করে সেই চিত্র দেখতে পারে।